রামুতে জমি নিয়ে বিরোধে বৌদ্ধ বিহারে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ৩
Published: 6th, December 2025 GMT
কক্সবাজারের রামুতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সদ্ধর্মোদয় বৌদ্ধ বিহার ও ভাবনা কেন্দ্রে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের পূর্ব রাজারকুল বড়ুয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে স্থানীয় সমদেশ বড়ুয়া লুলুর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ শুক্রবার বৌদ্ধ বিহারে হামলা ও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
সেই হামলার ভিডিও বুদ্ধ ভিক্ষু প্রজ্ঞা বিনয় থের ফেসবুক লাইভে প্রচার করলে রামু থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় প্রজ্ঞা বিনয় বাদী হয়ে ভিক্ষু রামু থানায় একটি মামলা করেছেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সমদেশ বড়ুয়া লুলু, তার ছেলে রনি বড়ুয়া এবং মৃত সুবাস বড়ুয়ার ছেলে রনি বড়ুয়া। গ্রেপ্তার তিনজন ছাড়াও সমদেশ বড়ুয়ার মেয়ে মুন্নি বড়ুয়া ও মৃত উপেন্দ্র বড়ুয়ার ছেলে সমিরন বড়ুয়াকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আদালতের স্থিতি বজায় রাখার আদেশ অমান্য করে আসামিরা ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে বৌদ্ধ বিহারে প্রবেশ করে ভিক্ষুদের মারধর, বিবস্ত্র করার চেষ্টা, দুটি বৌদ্ধমূর্তি, নির্মাণাধীন বিহার, চেয়ার-টেবিল ও ডেকোরেশন সামগ্রী ভাঙচুর করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। পাশাপাশি দানবাক্স থেকে ১৫ হাজার টাকা লুটের অভিযোগও আনা হয়েছে।
রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
ঢাকা/তারেকুর/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষক বরখাস্ত, ৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিনজন শিক্ষককে বরখাস্ত, দুজন শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল ও তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
সাভারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার চার ছাত্র
কর্মবিরতি করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের কড়া বার্তা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন শিক্ষক ও পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অনীক কৃষ্ণ কর্মকারকে ৩ বছরের জন্য সাময়িক বরখাস্ত ও ১০ বছর পরীক্ষা-সংক্রান্ত কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার ও ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল, এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও দুই শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। ২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভায় উপরিউক্ত বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিন্ডিকেটের তারিখ থেকে উল্লিখিত সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার ও মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “এটাকে স্থায়ী বা অস্থায়ী বলা যাবে না। ওনাদের বিষয়ে আবার একটি কমিটি তদন্ত করবে। ওই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিশেষ কিছু কারণে শিক্ষার্থীদের নাম আমরা প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। তবে ফাইন্যন্স বিভাগের একটি ঘটনার সংশ্লিষ্টতা এখানে রয়েছে।”
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহা. মাঈন উদ্দীন বলেন, “ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অনীক কৃষ্ণ কর্মকারকে ৩ বছরের জন্য সাময়িক বরখাস্ত ও ১০ বছর পরীক্ষা-সংক্রান্ত কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার ও ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে।”
“তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য ফাইনাল টার্মিনেশনের সর্বশেষ তদন্ত কমিটি করা হয়। সেখানেই স্থায়ী সিদ্ধান্ত আসবে। তার আগ পর্যন্ত দুজনেই বরখাস্ত থাকবে,” বলেন তিনি।
অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন বলেন, “গত ১১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনে ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হেদায়েত উল্লাহর কক্ষে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিক ও আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সার্টিফিকেটও বাতিল করা হবে। এ ছাড়া একই অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির সাবেক সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সাংবাদিককে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।”
ঢাকা/ফাহিম/রাসেল