আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথের একদিকে কাপ্তাই হ্রদের নীল আভা, অন্যদিকে পাহাড়ের সবুজ। দেখতে যতটা মনোরম, চলাচল ততটা নয়। উঁচু–নিচু রাস্তার কারণে ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না অনেকেই। তবে সেই চ্যালেঞ্জের মধ্যেই পাহাড়ি রাস্তায় ২৪ কিলোমিটার দৌড়ালেন ২৫০ দৌড়বিদ।

আজ শনিবার সকাল আটটায় জেলার কাপ্তাইয়ের বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে এ ম্যারাথন শুরু হয়। শেষ হয় রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে গিয়ে। জেলা পৌরসভা সূত্র জানায়, পাহাড়ে এবারই প্রথম এত দীর্ঘ দূরত্বে ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ২৫০ দৌড়বিদ অংশ নেন। এর মধ্যে বয়স ও লিঙ্গভেদে ১৩ জনকে পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ম্যারাথন শেষ করা দৌড়বিদদের সনদ ও মেডেল দেওয়া হয়।

দীর্ঘ এ উঁচু–নিচু, আঁকাবাঁকা রাস্তা জয় করেছেন নারীরাও। নারীদের মধ্যে এ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন ফরিদা আক্তার। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে ম্যারাথন ভালো লেগেছে। রাস্তাটি অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। হুট করে পাহাড়ে এসে এ রকম দৌড়ানো কঠিন, কিন্তু চারদিকে পানি, মাঝখানে রাস্তা, দেখতেও ভালো লেগেছে।’

নারীদের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছেন কাউখালী উপজেলার শিক্ষার্থী হলানুচিং মারমা। তিনি বলেন, ‘এই প্রথম ম্যারাথনে যোগ দিলাম। দ্বিতীয় হতে পেরে খুব খুশি।’ এ বিভাগে তৃতীয় থেকে পঞ্চম হয়েছেন হলানুচিং মারমা, পাইনুমা মারমা, মাথুইচিং মারমা ও সুইটি আক্তার।

অন্য বিভাগে বিজয়ী যাঁরা

প্রতিযোগিতাটিতে নারী বিভাগ ছাড়াও পুরুষ ও চল্লিশোর্ধ্ব—এ দুই বিভাগে সেরাদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পুরুষ বিভাগে প্রথম হওয়া ব্যক্তির নাম আশরাফুল আলম। এ ছাড়া পারভেজ পলাশ দ্বিতীয়, মো.

জাকির হোসেন তৃতীয়, হানিফ হোসাইন চতুর্থ ও মো. আবদুল্লাহ আল নোমান পঞ্চম হয়েছেন।

এ ছাড়া চল্লিশোর্ধ্ব বিভাগে প্রথম খোন্দকার শওকত ওসমান, দ্বিতীয় আবু মোহাম্মদ জুলফিকার ও তৃতীয় হয়েছেন মো. শাহেদ শেখ।

ম্যারাথনের পর পৌরসভা প্রাঙ্গণে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়। এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পৌর প্রশাসক মো. মোবারক হোসেন। এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক নাজমা আশরাফী। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুর রকিব, সেনা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল একরামুল রাহাত পিএসসি ও সিভিল সার্জন নুয়েন খীসা।

পৌর প্রশাসক মো. মোবারক হোসেন বলেন, রাঙামাটি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হলেও নাগরিকেরা এখনো সেই মানের সেবা পান না। এ সেবা নিশ্চিত করে তিনি কাজ করছেন। কাপ্তাই হ্রদ দূষণমুক্ত রাখতে আগামী দিনে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।

অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন নুয়েন খীসা ম্যারাথনের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ম্যারাথন দৌড়ের ইতিহাস শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৪৯০ অব্দে। এই কিংবদন্তি ঘটনাকে স্মরণ করে ১৮৯৬ সালের অলিম্পিকে প্রথম ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন হয় ছ ন প রসভ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করল লেবানন ও ইসরায়েল

লেবানন ও ইসরায়েলের বেসামরিক প্রতিনিধিদল নাকুরায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির এক বৈঠকে যোগ দিয়েছে। চার দশকের বেশি সময় পর ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এটিই প্রথম সরাসরি আলোচনা।

গতকাল বুধবার লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম বলেন, নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও আরও বিস্তৃত আলোচনায় যেতে প্রস্তুত আছে বৈরুত। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এটি কোনো শান্তি আলোচনা নয়। তাঁর মতে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি শান্তিপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

নাওয়াফের বক্তব্য অনুসারে লেবাননের দিক থেকে এ আলোচনার লক্ষ্য হলো শত্রুতার অবসান, লেবাননের জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা ও দেশটির ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার বিনিময়ে ১৯৬৭ সালে দখল করা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের কথা বলা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আলাদা কোনো শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দেশ ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার বিনিময়ে ১৯৬৭ সালে দখল করা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরিভাবে প্রত্যাহারের কথা বলা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আলাদা কোনো শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই।

নাওয়াফ মনে করেন, বেসামরিক দূতদের আলোচনায় অংশগ্রহণের বিষয়টি উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।

কমিটি প্রায় তিন ঘণ্টা লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যকার ‘ব্লু লাইন’ সীমান্তরেখা–সংলগ্ন এলাকায় বৈঠকটি করেছে।

বৈঠক শেষে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে আলোচনায় বেসামরিক প্রতিনিধিদের সংযুক্ত হওয়াকে ‘টেকসই বেসামরিক ও সামরিক সংলাপ’ প্রতিষ্ঠার পথে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করে স্বাগত জানানো হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে অস্থির থাকা এ সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা করছে কমিটি।

আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় নিহত তাবতাবাই কে, কীভাবে হিজবুল্লাহতে যোগ দিলেন২৪ নভেম্বর ২০২৫

২০২৪ সালে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি তদারকির পাশাপাশি কমিটির কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কয়েক মাস ধরে দুই পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে আসছে। গত মাসে লেবাননের রাজধানীতে ইসরায়েলি বিমান হামলাকে কেন্দ্র করে যখন ক্রমাগত উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

লেবাননে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটি সাধারণত দাবি করে থাকে যে হিজবুল্লাহ সদস্য ও তাঁদের স্থাপনাকে লক্ষ্য করেই তারা হামলা চালাচ্ছে। যুদ্ধবিরতিতে পুরোপুরিভাবে সেনা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ থাকলেও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচটি এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা এখনো অবস্থান করছেন।

ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র শশ বেদরোসিয়ান বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ বৈঠককে ঐতিহাসিক অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেছেন।

বেদরোসিয়ান দাবি করেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর চলমান প্রচেষ্টার কারণেই ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এ সরাসরি বৈঠক সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেমনটা বলছেন যে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের জন্য বিশেষ সুযোগ এখন তৈরি হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট, ময়মনসিংহ নাকি অন্য কোনো দল—কারা হবে চ্যাম্পিয়ন
  • বিশ্বকাপের ড্র চূড়ান্ত, কে কোন গ্রুপে
  • তারকা ভিকি নয়, এখন শুধু ‘বাবা’—জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা
  • প্রথমবারের মতো প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান নিয়োগ দিলো পাকিস্তান
  • বিজয়ের সঙ্গে বিয়ে, প্রথমবার সরাসরি জবাব দিলেন রাশমিকা
  • ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করল লেবানন ও ইসরায়েল
  • স্বপ্ন এভাবেও পূরণ হয় জানতেন না সাকলাইন