পাটগ্রাম সীমান্তে গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত পাঠাল বিএসএফ
Published: 6th, December 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক সবুজ মিয়ার (৩০) মরদেহ ফেরত পাঠানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে পাটগ্রাম উপজেলার নাজিরগুমানি সীমান্ত পিলারসংলগ্ন এলাকায় এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশটি ফেরত দেয় বিএসএফ।
সবুজ মিয়া পাটগ্রাম উপজেলার জগৎবেড় ইউনিয়নের পচা ভান্ডার গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
এর আগে গত বুধবার রাত তিনটার দিকে পচা ভান্ডার (পচাকাটা) সীমান্ত এলাকায় ৮৬৪ ও ৮৬৫ নম্বর সীমানা পিলারের মাঝামাঝি ভারতের ভেতরে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন সবুজ।
বিজিবি, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক গরু আনার জন্য গত বুধবার শূন্যরেখার কাছাকাছি যান। এ সময় তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ভারতের ১৫৬ চেনাকাটা ক্যাম্পের বিএসএফ টহল দলের সদস্যরা। এতে ঘটনাস্থলেই সবুজ নিহত হন। একপর্যায়ে তাঁর সঙ্গীরা পালিয়ে এলে সবুজের মরদেহটি তুলে নেয় বিএসএফ।
বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটের ৬১ বিজিবি ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চেনাকাটা বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতেই সবুজের মরদেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর স্বজনেরাও উপস্থিত ছিলেন।
লালমনিরহাট ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.
প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে সবুজের মরদেহটি পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় পাটগ্রাম থানার পুলিশ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ মাস পর ভারতে ফিরে গেলেন সোনালি
বিএসএফের পুশইনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় অন্তঃসত্ত্বা নারী সোনালি দীর্ঘ ৫ মাস ৮ দিন পর নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ ইমিগ্রেশন দিয়ে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘দৃশ্যম থ্রি’ নিয়ে নতুন খবর পাওয়া গেল
১ লাখ কোটি টাকার পারিবারিক ব্যবসাও সামলান এই তারকা-পত্নী
এ সময় তার সঙ্গে ফিরেছেন ৮ বছর বয়সী ছেলে সাব্বির শেখ। সীমান্তের শূন্যরেখায় সোনালিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
গত ২৬ জুন সোনালিসহ ৬ জন ভারতীয়কে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছয় ভারতীয় কুড়িগ্রাম থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীনগরে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে ২০ আগস্ট পুলিশ তাদেরকে আটক করে। পরে তাদেরকে ফেরত নিতে রাজি হয়নি বিএসএফ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এনামুল হক বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দুজন শিশু হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই ছয়জন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার পাকুরের বাসিন্দা। তারা হলেন— দানিশ শেখ (২৮), তার স্ত্রী সোনালি বিবি (২৬), সুইটি বিবি (৩৩), মো. কুরবান দেওয়ান (১৬), সোনালি বিবির সন্তান সাব্বির শেখ (৮) ও সুইটি বিবির সন্তান মো. ইমাম দেওয়ান (৬)।
আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক পিন্টু জানিয়েছেন, ১ ডিসেম্বর শুনানি শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল ইসলাম ৪ ভারতীয়র জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর ওই রাতেই তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে বের হয়ে আত্মীয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নয়াগোলা এলাকার বাসিন্দা ফারুক হোসেনের বাড়িতে উঠেছিলেন। তবে, দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ আবারও তাদেরকে হেফাজতে নেয়। ২ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে তাদেরকে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই নয়াগোলায় তারা অবস্থান করছিলেন।
এ বিষয়ে ৫৯ বিজিবির সহকারী পরিচালক বেলার বলেছেন, মানবিক কারণে অন্তঃসত্ত্বা সোনালি ও তার ৮ বছরের ছেলে সাব্বির শেখের কাগজপত্র যাচাই শেষে শুক্রবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি চারজনের কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে তাদেরকেও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/শিয়াম/রফিক