কিশোরীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলায় ইমামসহ দুজন গ্রেপ্তার
Published: 6th, December 2025 GMT
প্রতীকী ছবি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে আবারো বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
ভারতে আবারো স্থাপিত হলো বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গা ও রেজিনগরের মাঝামাঝি এলাকায় শনিবার বাবরি মসজিদের আদলে নতুন মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুন কবির। সকাল ১০টা থেকে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। বেলা ১২টায় শুরু হয় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মূল অনুষ্ঠান।
মুর্শিদাবাদে হুমায়ুন করিরের বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে সৌদি আরব থেকে এসেছিলেন মুফতি সুফিয়ান। মদিনা থেকে এসেছেন শেখ আবদুল্লা। এর পাশাপাশি, ভিত্তিপ্রস্তর উপলক্ষে হাজার হাজার মুসল্লি এসেছিলেন। যে যার সাধ্যমতো কেউ দুটো, কেউ চারটে, কাউকে ছয়টা ইট মাথায় নিয়ে সভাস্থলে এসেছিলেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে দান হিসেবে এই ইট এনেছেন তারা। সভাস্থলেই প্রায় কয়েক কোটি রুপি মসজিদ নির্মাণের জন্য দান করেন মুসল্লিরা। এককভাবে এক ডাক্তারই দিয়েছেন এক কোটি রুপি।
হুমায়ুনের মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এ ক্ষেত্রে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না-হয়, তা পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
শনিবার উদ্বোধন হলেও আদালতের নির্দেশ মেনে শুক্রবার সকাল থেকেই বেলডাঙ্গা ও আশপাশের অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এলাকায় মোতায়েন করা হয় কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স, বিএসএফসহ তিন হাজারেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মী।
ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এলাহি আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এসেছিলেন প্রায় ৪০ হাজার অতিথি। স্থানীয় প্রায় ২০ হাজার মানুষ ও দর্শনার্থীর জন্য ছিল শাহী বিরিয়ানির ব্যবস্থা। রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হয় সাতটি কেটারিং সংস্থাকে। এছাড়া তৈরি করা হয়েছিল ৪০০ অতিথি ধারণ ক্ষমতার মঞ্চ। সবদিক সামল দেওয়ার জন্য কমপক্ষে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক ছিল। পুরো আয়োজনে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় কয়েক কোটি রুপি।
বরখাস্ত তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবির শনিবার মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে বলেন, একটি ইটও কেউ সরাতে পারবে না, কারণ বাংলার ৩৭ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা যেকোনো মূল্যে এটি তৈরি করবে। মসজিদ তৈরি হবে।
তিনি উপাসনালয় নির্মাণের সাংবিধানিক অধিকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমি অসাংবিধানিক কিছু করছি না। যে কেউ মন্দির বানাতে পারে, যে কেউ গির্জা বানাতে পারে; আমি মসজিদ বানাব। বলা হচ্ছে যে আমরা বাবরি মসজিদ বানাতে পারব না। এটা কোথাও লেখা নেই। সুপ্রিম কোর্ট একটি রায় দিয়েছিল যেখানে বলা হয়েছিল যে হিন্দুরা বাবরি মসজিদ ভেঙে দিয়েছে। হিন্দুদের ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে এখানে মন্দির তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এখন আমরা দেখছি সাগরদিঘিতে কেউ রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছে। কিন্তু সংবিধান আমাদের মসজিদ তৈরির অনুমতি দেয়।”
কবির জোর দিয়ে বলেন, আইনি চ্যালেঞ্জ মসজিদের নির্মাণকে আটকাতে পারবে না। আমার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে, কিন্তু যার সঙ্গে আল্লাহ আছেন তাকে কেউ থামাতে পারবে না। আদালতও স্পষ্টভাবে বলেছে যে ভারতের সংবিধানে লেখা আছে যে কেউ মসজিদ তৈরি করতে পারে; এটি একটি অধিকার।”
কবির জানান, মসজিদের জন্য ৩০০ কোটি রুপির বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, ২৫ বিঘা জমির মসজিদ চত্ত্বরে নির্মাণ হবে কলেজ হাসপাতাল। মূল মসজিদ নির্মাণ হবে তিন কাঠা জমির উপর। যেখানে একটি হাসপাতাল, গেস্টহাউস এবং সভাকক্ষও থাকবে। মসজিদ নির্মাণে টাকার অভাব হবে না। মসজিদ নির্মাণের জন্য এক শিল্পপতি ৮০ কোটি রুপি দিয়েছেন।
তিনি এই প্রকল্পের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “এটি মুসলমানদের প্রতিশ্রুতি: বাবরি মসজিদ তৈরি হবেই, হবেই, হবেই।
ঢাকা/শাহেদ