কানাডায় ব্যর্থ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে তিমির ছবি তুললাম
Published: 6th, December 2025 GMT
২০১৫ সাল। তখন আমরা প্রায় প্রতিদিন ফটোগ্রাফি নিয়ে আড্ডা দিতাম। বেশির ভাগ আড্ডাই হতো আলিম ভাইয়ের বাসায় অথবা আমার অফিসে। এর মধ্যে একদিন আফতাব ভাই নিউজিল্যান্ড থেকে এলেন। তিনি পেশায় চিকিৎসক হলেও নেশায় ফটোগ্রাফার। আমি তাঁর ছবির ভক্ত। সেদিন আমরা আলিম ভাইয়ের বাসায় আড্ডা দিচ্ছিলাম। আফতাব ভাইয়ের বিভিন্ন ছবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল, কিন্তু তাঁর ফ্লিকারে তিমি মাছের লেজের ছবিটা আমার চোখে আটকে গেল। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, কোথায় তুলেছেন?
বললেন, ভ্যাঙ্কুভার, কানাডায় তিমি মাছের ছবি তোলার ট্রিপ হয়।
মনে মনে ঠিক করে ফেললাম, কখনো সুযোগ হলে ভ্যাঙ্কুভারে যাব, তিমির লেজের ছবি তুলব।
২০১৮ সালে এল সেই সুযোগ। কানাডার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ভ্যাঙ্কুভারে গেলাম। তিমির ছবি তুলব, ভীষণ উত্তেজিত। তীব্র ঠান্ডার মধ্যে সবাই বোটের ভেতরে বসে ছিল, ক্যামেরা হাতে আমি শুধু বাইরে ছিলাম, যেন একবার সুযোগ পেলেও মিস না করি।
বোট সমুদ্রের পাড় থেকে মাঝসমুদ্রের দিকে তিমির খোঁজে ঘুরছিল, কিন্তু তিমির দেখা মিলছিল না। ধীরে ধীরে মন খারাপ হতে শুরু করল। পুরো দিন কেটে গেল, তিমির দেখা নেই। শেষে তিমি না দেখেই আমাদের সেদিনের ট্রিপ শেষ হলো। গাইডরা বলল, বছরে ৩৬৫ দিনই তিমি দেখা যায়, কিন্তু আজই হলো না। তবে সমস্যা নেই, এই একই টিকিটে এক বছরের মধ্যে যেকোনো সময় এসে দেখা যাবে।
পরদিন আমাদের টরন্টোয় ফেরার কথা। ভাবলাম, আরেকটা দিন সময় নিই! পরদিন আবার গেলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সেদিন আবহাওয়া ছিল খারাপ, সমুদ্রও উত্তাল—সেদিন গাইডরা বোটই নামাল না। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। মন খারাপ নিয়েই গুস মাউন্টেইন ঘুরে টরন্টো হয়ে দেশে ফিরে এলাম।
দেশে ফিরে শুনলাম, সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের কাছাকাছি জায়গায় নাকি মাঝেমধ্যে তিমি দেখা যায়, তবে খুবই বিরল। সুতরাং সুযোগ আর হয়ে ওঠেনি। এর মধ্যে আরও কয়েক বছর কেটে গেল।
নানাভাবে লেজ উচিয়ে খেল দেখাতে লাগল তিমি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুড়িগ্রামে বিএডিসি ডিলারের বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ, ৮০ বস্তা সার জব্দ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের এক বিএডিসি ডিলারের বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে গোডাউন থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া সময় উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া এলাকায় মাস্টার মোড় থেকে ৮০ বস্তা ডিএপি সারসহ দুটি নছিমন জব্দ করা হয়।
অভিযুক্ত ডিলারের নাম মোছা. হালিমা খাতুন। সাপখাওয়া ও ব্যাপারীটারী এলাকার জন্য বিএডিসি অনুমোদিত ওই সার ডিলারের প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স রাদিয়া ট্রেডার্স।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত আটটার দিকে মেসার্স রাদিয়া ট্রেডার্সের গোডাউন থেকে ৮০ বস্তা ডিএপি সার (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) দুটি নছিমনে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। মাস্টার মোড় বাজারসংলগ্ন ভেতরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িটি থামান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় চালকেরা সার পরিবহনের কারণ ব্যাখ্যা করতে না পারায় তাঁরা গাড়ি দুটি আটকে দেন। পরে খবর পেয়ে নাগেশ্বরী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সারসহ নছিমনটি থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক। কৃষক আজিজুল হক ও আরিফ হোসেনের অভিযোগ, এলাকায় নিয়মিত সারসংকট চলছে। ডিলারের কাছে সার পাওয়া যায় না, পেলেও অতিরিক্ত দামে কিনতে হয়। অথচ রাতে গোপনে সার পাচারের চেষ্টা চলছে। এর আগেও একই ডিলার অনিয়মের কারণে জরিমানা দিয়েছিলেন।
সারের বস্তাগুলো জব্দের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নাগেশ্বরী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাদিম বলেন, ‘সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানার ওসির নির্দেশে সার ও গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।’
ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও ডিলার হালিমা খাতুন গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। একপর্যায়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
গোডাউন থেকে সার স্থানীয় এক খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে নেওয়া হচ্ছিল বলে জেনেছেন নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আজ শনিবার তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নাগেশ্বরীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদরুজ্জামান রিশাদ আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল জব্দ করা সার ও নছিমন নাগেশ্বরী থানা-পুলিশি হেফাজতে আছে। ওই সার গোডাউন ও নছিমন আটকের স্থানটি পরিদর্শন করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।