রাজধানীর ম‌তি‌ঝিলে নির্বাচনী শোডাউন ক‌রে‌ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা-৮ আসনে দলের মনোনীত সংসদসদস্য প্রার্থী মুফতী কেফায়েতুল্লাহ। 

শনিবার সকালে মতিঝিল টিএন্ডটি কলোনী থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে পল্টন, রমনা, শাহজাহানপুর ও শাহবাগ থানার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোটরসাইকেল শোডাউন করেন তিনি।

শোডাউন শেষে বাইতুল মোকাররম উত্তর গেটে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সভাপতির বক্তব্যে মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে দেশে অনেকবার ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বারবার তারা ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের পকেট ভারি করেছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পেশীশক্তির ব্যবহার করেছে। আমরা কথা দিচ্ছি, আপনারা যদি ইসলামের ওপর আস্থা রাখেন তবে আমরা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় খাদেম হয়ে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাকে পীর সাহেব চরমোনাই ঢাকা-৮ আসনের জন্য মনোনীত করেছেন। আপনারা আমাকে বিজয়ী করুন, আমি এই আসনের মানুষের খাদেম হতে চাই।’’

শোডাউনে আরো অংশ নেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনির হোসাইন, পল্টন থানা সভাপতি কবির হোসেন খোকন, রমনা থানা সভাপতি অ্যাডভোকেট ফেরদৌস আহমাদ চৌধুরী, মতিঝিল থানা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাসেল খান, শাহবাগ থানা সভাপতি তকদির হোসেন রুবেল, শাহজাহানপুর থানা সভাপতি মাওলানা আবু ইউসুফ এবং ঢাকা-০৮ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ড উন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে জনসংলাপ অনুষ্ঠিত

ডিজিটাল পরিসরে ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়ন, নজরদারি ও হয়রানি সাধারণ ব্যবহারকারী থেকে শুরু করে সাংবাদিক, আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী—সবার জন্যই গুরুতর হুমকি হয়ে উঠছে। অনলাইনে কণ্ঠস্বর ও মতামত দমনের প্রবণতা শুধু ব্যক্তিকেই নয়, পুরো সমাজকেই নীরব করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপদ, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজ, নীতিনির্ধারক ও গণমাধ্যমের সমন্বিত উদ্যোগ এখন জরুরি হয়ে উঠেছে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দ্রুত পরিবর্তনশীল ডিজিটাল প্রেক্ষাপটে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ এবং তার প্রতিকার বিষয়ক আলোচনার উদ্দেশ্যে রাজধানীর আদাবরে অনুষ্ঠিত ‘ডিজিটাল অধিকার নিয়ে জনসংলাপ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সভায় বহুমুখী অংশীজনদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণে গঠনমূলক ও মুক্ত আলোচনা করা হয়। এক্সেস নাউ-এর সহায়তায় ডিজিটাল অধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নাগরিক পরিসর নিয়ে কাজ করা বেসরকারি অধিকারভিত্তিক সংগঠন ভয়েস, এই সংলাপের আয়োজন করে। এতে নাগরিক সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী, নারী, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ এবং আদিবাসী নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত পরিবর্তিত ডিজিটাল বাস্তবতা নিয়ে অভিজ্ঞতা, উদ্বেগ এবং প্রত্যাশা তুলে ধরেন। এছাড়াও অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের ডিজিটাল রূপ, ডিজিটাল গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা, ডিজিটাল নজরদারি, সাইবার হয়রানি, সংকুচিত নাগরিক পরিসর, নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন ব্যক্তি ও মানবাধিকারকর্মীদের ডিজিটাল ঝুঁকিসমূহ নিয়েও আলোচনা করা হয়।

সংলাপের মূল উপস্থাপনায় ভয়েসের উপ-পরিচালক মুশাররাত মাহেরা উল্লেখ করেন যে, ডিজিটাল অধিকার ও মানবাধিকার পরস্পর গভীরভাবে সংযুক্ত। তিনি বলেন, “ডিজিটাল পরিসর আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে আলাদা নয়। অনলাইনে যখন কণ্ঠস্বর দমন করা হয়, তখন পুরো জনগোষ্ঠীকেই নীরব করে দেওয়া হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা, গোপনীয়তা এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।”

মতবিনিময়ের সময়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আইনগত ও নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন বক্তারা। জেন্ডার এবং গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ আফরোজা সোমা বলেন, “মানুষের উচিত অনলাইনে স্বাধীনভাবে নিজের মত প্রকাশ করা, কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় নিরাপদ থাকার বদলে তারা প্রায়ই নিপীড়ন ও আইন বহির্ভূতভাবে আটক হন।”

ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি চিফ অব পার্টি আমিনুল এহসান বলেন, “ডিজিটাল অধিকার রক্ষা কোনো একক কাজ নয়। উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজ, নীতিনির্ধারক, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”

মানবাধিকারকর্মী আরিফ হাসান উল্লেখ করেন যে, “নিয়মকানুন যেন নাগরিক স্বাধীনতাকে দমন না করে বরং সুরক্ষা দেয়।”

তিনি বলেন, “পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের একে অপরের সঙ্গে সংলাপে সম্পৃক্ত হওয়া জরুরি, যাতে তারা পরষ্পরের ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ ও সংগ্রামকে বুঝতে পারে; তবেই তারা সম্মিলিত কণ্ঠ তুলতে সক্ষম হবে। একে অপরের গল্প, কষ্ট ও দৃঢ়তার পরিচয় জানলেই তারা সত্যিকারের সংহতিতে দাঁড়াতে পারে।”

ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ ডিজিটাল স্বাধীনতা, গণমাধ্যম অধিকার এবং অধিকারকর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে কাজের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “যখন ডিজিটাল দমন-পীড়ন ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের অধিকার রক্ষায় আমাদের একসঙ্গে দাঁড়ানো জরুরি। আজকের এই সংলাপ স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং অধিকারভিত্তিক ডিজিটাল শাসন ব্যবস্থার পক্ষে আমাদের সমবেত অঙ্গীকারকে শক্তিশালী করে।”

অংশগ্রহণকারীরা তাদের ডিজিটাল জীবনে যাপিত অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন, “চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করেন এবং সমন্বিত অ্যাডভোকেসির সম্ভাবনা তুলে ধরেন। নারী সাংবাদিক, আদিবাসী কর্মী এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য সুনির্দিষ্ট ডিজিটাল সুরক্ষা ব্যবস্থা, স্বচ্ছ শাসন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল নীতি এবং শক্তিশালী তথ্য মাধ্যম সম্পর্কিত প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়।” 

ঢাকা/রায়হান/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ