মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা, স্তন ক্যানসারের কোনো চিকিৎসা নেই এবং মৃত্যু অবধারিত। তবে অন্যান্য ক্যানসারের মতো স্তন ক্যানসারও এখন সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায়। স্টেজ ওয়ান ও টুতে এটি শতভাগ নির্মূল করা সম্ভব। স্টেজ ফোরেও রোগীকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখা যায়।

‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় কথাগুলো বলেন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের ক্যানসার বিভাগের ক্লিনিক্যাল অনকোলজিস্ট এবং কনসালট্যান্ট ডা.

নাজিরুম মুবিন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নেন তিনি। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন নাসিহা তাহসিন। ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে এসকেএফ অনকোলজি।

এখনো স্তন ক্যানসার নিয়ে রয়েছে নানা ভ্রান্ত ধারণা ও সচেতনতার অভাব। তাই প্রতিবছর অক্টোবর মাস ‘স্তন ক্যানসার সচেতনতার মাস’ হিসেবে পালন করা হয়। আলোচনার এ পর্বে স্তন ক্যানসার নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক পরামর্শ দেন ডা. নাজিরুম মুবিন। পর্বটি বুধবার (২২ অক্টোবর) সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্তন ক্যানসার সম্পর্কে ডা. নাজিরুম মুবিন বলেন, ‘স্তনের কোষগুলোর যখন অস্বাভাবিক বিভাজন হয় এবং এটি কোনো চাকা বা টিউমারের আকার ধারণ করে, তখন সেই টিউমার থেকে ক্যানসার সৃষ্টি হতে পারে। এটি কারসিনোমা, সারকোমা বা লিম্ফোমা হতে পারে। পুরুষদেরও স্তন ক্যানসার হতে দেখা যায়, যদিও তা খুব বিরল।’

স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি ও লক্ষণ

স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি নিয়ে ডা. নাজিরুম মুবিন বলেন, স্তন ক্যানসারের ঝুঁকির কারণ শুধু জিনগত নয়, এর সঙ্গে জীবনযাত্রার অভ্যাস ও পরিবেশগত কারণগুলোও জড়িত। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে জিনগত, অর্থাৎ পরিবার কিংবা নিকটাত্মীয়ের স্তন ক্যানসার বা বিআরসিএ১/বিআরসিএ২ মিউটেশনের কারণে হয়ে থাকে। ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে অভ্যাসগত কিংবা পরিবেশগত কারণে স্তন ক্যানসার হয়ে থাকে। যেমন দেরিতে বিয়ে করা, দেরিতে সন্তান নেওয়া, কম সন্তান নেওয়া বা নিঃসন্তান হওয়া, শিশুকে বুকের দুধ পান না করানো, কায়িক পরিশ্রম কম করা, ধূমপান করা ইত্যাদি।

ডা. নাজিরুম মুবিন আরও বলেন, অন্যান্য বেশ কিছু ক্যানসারের মতো স্তন ক্যানসারের লক্ষণ প্রাথমিক দিকে তেমন প্রকাশ পায় না। খুব অ্যাডভান্স স্টেজে গিয়ে উপসর্গগুলো দেখা দেয়, যা খুবই ভয়াবহ।

প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপক জানতে চান, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল অথবা হরমোন থেরাপি কি স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে? উত্তরে ডা. নাজিরুম মুবিন বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ও হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কারণ, এর মধ্যে স্তন ক্যানসার রিস্ক বাড়ানোর উপাদান থাকে। মাসিক বন্ধ হওয়ার পর পোস্ট মেনোপজাল সিম্পটম কমানোর জন্য যে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ব্যবহার করা হয়, সেটিও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

বাংলাদেশে স্তন ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি, রোগনির্ণয়, ডায়াগনসিস ও চিকিৎসাসুবিধা বিষয়ে পরামর্শ দেন ডা. নাজিরুম মুবিন

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই–পরবর্তী সময়েও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের প্রাণ দিতে হয়েছে: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেছেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১৪২ জন শহীদ হয়েছেন। কিন্তু জুলাই–পরবর্তী সময়েও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের প্রাণ দিতে হয়েছে।

আজ রোববার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে শাখা ছাত্রদলের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে নাছির এ কথা বলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা হাসিবুল ইসলামের অকালমৃত্যু এবং জোবায়েদ হোসেনের ওপর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় নাছির উদ্দীন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্যকে (শাহরিয়ার আলম সাম্য) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জোবায়েদকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়। পারভেজ (জাহিদুল ইসলাম পারভেজ) হত্যার পর প্রশাসন খুনিদের গ্রেপ্তার করতে গড়িমসি করেছিল। সাম্য হত্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজনীতি হয়েছে। যে পরিমাণ প্রতিবাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে হওয়ার কথা ছিল, সেটা দেখা যায়নি।

নাছির আরও বলেন, ‘জোবায়েদ হোসেন হত্যার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে, এখনো রেখে যাচ্ছে। হাসিবের মৃত্যুর পর এবং জোবায়েদ হত্যার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে ভূমিকা রাখা হয়েছে, তার জন্য ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

আলোচনা সভায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের দলে কিছু বিপথগামী সদস্য আছে, সেটা স্বীকার করেই আমরা রাজনীতি করি। কিছু বিপথগামী ছাড়া ছাত্রদলের সবাই নৈতিক চরিত্রের অধিকারী।’

রাকিব বলেন, ‘স্বল্প সময়ে ছাত্রদলের পদধারী তিন নেতা—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্য, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পারভেজ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জোবায়েদকে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের এমন মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীন, রেজিস্ট্রার শেখ গিয়াসউদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ্ উদদীন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, সদস্যসচিব শামসুল আরেফিনসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বর্তমান ও সাবেক নেতা–কর্মীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ