আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

শরিফ ওসমান হাদিকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। একই সঙ্গে তার দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

মওলানা ভাসানী মজলুমদের পক্ষে ছিলেন, কখনো আপস করেননি: টুকু 

দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’: বিএনপি

শুক্রবার বিকেল সােয়া ৪টার দিকে তিনি হাসপাতালে যান। এ সময় হাদির খোঁজ-খবর নেন।

এর আগে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে ডা.

শফিকুর রহমান  উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‍‍“রাজনৈতিক মতভিন্নতা কখনোই সহিংসতার অজুহাত হতে পারে না। এ ঘটনার দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত প্রয়োজন।”

এদিকে, হাদিকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা-৮ আসনে হাদির প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা আব্বাস।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে তিনি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট দিয়ে প্রবেশ করেন তিনি।

ঢাকা/রায়হান/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ শ ক রব র

এছাড়াও পড়ুন:

গরুর মাংস ইস্যুতে বিতর্কে অভিনেত্রী: যা বললেন জুন-শ্রীলেখা-রুদ্রনীল

গত বছর বাংলাদেশের একটি টিভি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন কলকাতার অভিনেত্রী-সঞ্চালক সুদীপা চ্যাটার্জি। এ অনুষ্ঠানে গরুর মাংসের একটি পদ রান্না হয়েছিল। এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন সুদীপা। এবার বিতর্কের মুখে পড়েছেন কলকাতার অভিনেত্রী স্বরলিপি।  

মূলত, কয়েক দিন আগে গোয়ায় বেড়াতে যান স্বরলিপি। সমুদ্রপারের একটি রেস্তোরাঁয় বসে ‘বিফ স্টেক’ (গরুর মাংসের একটি পদ) খাওয়ার ছবি তুলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। তারপর শুরু হয় সমালোচনা। এ নিয়ে ‘নোংরা’ মন্তব্যেরও শিকার হয়েছেন। তারপর প্রশ্ন উঠেছে—সমাজে ব্যক্তিস্বাধীনতার ভবিষ্যৎ নিয়ে।  

আরো পড়ুন:

লোকজন বিয়ে করছে, আমি প্রেমও করতে পারছি না: শ্রীলেখা

আমার যদি কিছু হয়, তার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবে, প্রশ্ন শ্রীলেখার

গত ৭ ডিসেম্বর কলকাতায় এক প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধর করা হয়। কারণ গরুর মাংস দিয়ে তৈরি প্যাটিস বিক্রি করছিলেন তিনি। ফলে কলকাতায় বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জুন মালিয়া, শ্রীলেখা মিত্র ও রুদ্রনীল ঘোষ।  

তৃণমূলের সংসদ সদস্য অভিনেত্রী জুন মালিয়া বলেন, “ধর্ম নিয়ে মেরুকরণ অনেক দিন ধরে চলছে। ইদানীং সেই প্রবণতা আরো বেড়েছে। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়। কিন্তু এখন ধর্ম নিয়ে যে বিভাজন করা হচ্ছে, তা খুবই দুঃখের। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমাদের এটুকু স্বাধীনতা থাকা উচিত যে, আমরা কী খাব, কী পরব, কোথায় যাব, কোন ভাষায় কথা বলব।” 

জুন মালিয়ার ভাবনার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও। এ বিষয়ে তার ভাষ্য—“পৃথিবীর যে জায়গায় ধর্ম-রাজনীতি একসঙ্গে হয়েছে সেখানেই ক্ষতি অনিবার্য। কোনো ধর্মগুরু কখনো হিংসা প্রচার করেন না। তবে মানুষ যাতে বেআইনি কাজ না করেন, সেজন্য যেমন আইনের দরকার, তেমনই ধর্মেরও দরকার; যাতে মানুষ বিপথে চালিত না হয়। সেখানেই ধর্মকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষ রাজনীতি করছেন। অবাঙালি সংস্কৃতি কলকাতাকেও গ্রাস করছে। মানুষের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। শক্তভাবে এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে সাংঘাতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। ধর্ম, রাজনীতি-দেশ চালানো এক হতে পারে না।” 

জুন মালিয়া ও শ্রীলেখা মিত্রর বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে ভিন্ন ভাবনার কথা জানিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। তার বক্তব্যে ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ উঠে এসেছে। এ অভিনেতা বলেন, “ধর্মনিরপেক্ষতার মানে স্বধর্মে প্রীতি এবং অন্য ধর্মে সম্প্রীতি। হিন্দু মানে ধর্মনিরপেক্ষ হতেই হবে। কিন্তু অন্য ধর্মে এ ধরনের কথা বলা হয় না। এটা আসলে হিন্দুদের কথা নয়। যে হিন্দুরা বামপন্থী রাজনীতি করতেন, তাদের নেতারা এই কথা শিখিয়েছে।” 

অভিনেত্রী স্বরলিপির ঘটনায় নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া খানিকটা ব্যাখ্যা করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এ অভিনেতা বলেন, “একজন হিন্দু মানুষ হিসেবে গরুর মাংস খাওয়া ঠিক নয় ধর্মীয় কারণে। হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত লাগে। যেমন মুসলমানেরা শুয়োরের মাংস থেকে দূরে থাকেন। তবে এই বিষয়ে কটাক্ষ বা কটু মন্তব্যের যৌক্তিকতা আমি মানি না। কিন্তু হিন্দু ধর্মের মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগা থেকেই এই প্রতিক্রিয়া বলে আমার মনে হয়।” 

সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বরলিপি এখন অনেকের চক্ষুশূল। এ অভিনেত্রীর বিভিন্ন পোস্টে গিয়ে আক্রমণ করে মন্তব্য করছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমে স্বরলিপি বলেন, “আমি সত্যি জানি না কেন মানুষ এই ধরনের কমেন্ট করছেন। আমি তো অনেক পরিচিত মুসলিমকে চিনি, যারা গরুর মাংস খান না। আমার পারিবারিক চিকিৎসক থেকে গৃহ সহায়িকা অনেকেই কিন্তু খান না। এর জন্য মানুষ আমার সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্ট খুঁজে খুঁজে কমেন্ট করবেন? আমার সঙ্গে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। খুব অদ্ভুত একটা ব্যাপার।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ