ঋণখেলাপি, সরকারি বিল বকেয়া থাকলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না
Published: 12th, December 2025 GMT
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি, পাশাপাশি গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎসহ সরকারি বিল বকেয়া থাকলে কোনো প্রার্থীই আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
আরো পড়ুন:
হাদিকে হত্যাচেষ্টার নিন্দা ও উদ্বেগ এনসিপির
ওসমান হাদিকে গুলির বিষয়ে তদন্ত করবে ইসি
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ধারা অনুযায়ী প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়গুলো নির্ধারিত। এসব বিধান অনুসারে, কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের আগ পর্যন্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য গণ্য হবেন।
তবে কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে নেওয়া ক্ষুদ্র কৃষি ঋণকে এই শর্তের বাইরে রাখা হয়েছে। কৃষি ঋণ ছাড়া যে কোনো ঋণের কিস্তি বকেয়া থাকলে প্রার্থিতা বাতিল হবে বলে ইসি জানিয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্যান্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে বকেয়া থাকলেও মনোনয়ন গ্রহণযোগ্য হবে না। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে এসব তথ্য উল্লেখ করে প্রার্থীর স্বাক্ষরিত হলফনামা দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ইসি জানায়, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কমিশন নিজেও কেন্দ্রীয়ভাবে জনসচেতনতামূলক প্রচার চালাবে।
অন্যদিকে, লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের নির্বাচন করার অযোগ্যতার বিষয়টিও প্রজ্ঞাপনে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকারের মালিকানায় ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের পদে কর্মরত কেউ পদত্যাগ না করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
ঢাকা/এএএম//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সকালে স্থগিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন, রাতে পুনঃ তফসিল
সকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ব্রাকসু) স্থগিত করার পর আবার পুনঃ তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো তফসিল ঘোষণা করা হলো। এবার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ব্রাকসু নির্বাচন হবে ২১ জানুয়ারি।
বুধবার রাত আটটার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক শাহজামান পুনঃ তফসিল ঘোষণা করেন। প্রথম আালোকে তিনি বলেন, ২৪ ডিসেম্বর ব্রাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ভোটার তালিকায় অসংখ্য অসংগতি থাকায় ওই তারিখের নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচনের পুনঃ তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার সকালে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নির্বাচন কমিশন। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার পরিসংখ্যান বিভাগের মো. শাহজামান, নির্বাচন কমিশনার অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আমির শরীফ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাসুদ রানা, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ কুমার সরকার, ইংরেজি বিভাগের প্রধান মোহসীনা আহসান এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হাসান আলী উপস্থিত ছিলেন।
সভাসূত্রে জানা যায়, ভোটার তালিকায় ত্রুটি, শিক্ষার্থীদের একাংশের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করা এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুনরোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার স্থগিত৩ ঘণ্টা আগেনতুন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৩ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর ১৪, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর ভোটার তালিকা সংশোধন ও আপত্তি গ্রহণ করা হবে। ১৭ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ ও দাখিল শুরু হবে, যা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ২২ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। এ তালিকা নিয়ে আপত্তি গ্রহণ, নিষ্পত্তি এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর ২৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ব্রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২১ জানুয়ারি। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
এদিকে সকালে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানালে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত শিক্ষার্থী পরিষদ প্যানেলের প্রার্থীরা সভা ত্যাগ করেন। বেলা একটায় শিবির–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে ব্রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে তফসিল অনুযায়ী ব্রাকসু নির্বাচন কার্যক্রম না হলে উপাচার্যসহ প্রশাসনের পদত্যাগের কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
গত ১৮ নভেম্বর ব্রাকসু নির্বাচনের প্রথম তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ওই তফসিল অনুযায়ী ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৯ ডিসেম্বর। কিন্তু শীতকালীন ছুটি থাকায় ভোট গ্রহণের তারিখ এগিয়ে আনার জন্য উপাচার্যের দপ্তরের সামনে অবস্থান করে শিক্ষার্থীদের একাংশ। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফা তফসিল ঘোষণা করে ২৪ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিনে ভোটার তালিকায় অসংগতির কথা বলে হঠাৎ নির্বাচন স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন। পরে ৩ ডিসেম্বর পুনঃ তফসিল ঘোষণা করে ভোটের তারিখ অপরিবর্তিত রাখা হয়।
তবে শীতকালীন ছুটি নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপাচার্যের কাছে জমা দেয়। তারা শীতকালীন ছুটির পর নির্বাচনের দাবি করে আসছে। অন্যদিকে ২৪ ডিসেম্বর নির্ধারিত তারিখে ব্রাকসু নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ।