গাজীপুরের কালিয়াকৈর বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চুরির অভিযোগে এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে হাতুড়িপেটা করা হয়েছে। কুরবান আলী নামের এক বাসমালিকের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

কুরবান আলীর বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। তবে তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর এলাকায় বিয়ে করে টান কালিয়াকৈর এলাকায় বসবাস করেন। তিনি কালিয়াকৈর থেকে ঢাকার মিরপুর ১২ নম্বর রুটে চলা রাজধানী পরিবহনের তিনটি বাসের মালিক।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে এক যুবককে আটক করেন কুরবান আলী। পরে তাঁকে বাস চুরির অভিযোগে একটি নারকেলগাছের সঙ্গে দুই হাত বেঁধে নানাভাবে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে কুরবান আলী একটি হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি ওই যুবকের দুই হাত ও দুই পায়ে আঘাত করেন। এ সময়ে ওই যুবক হাউমাউ করে চিৎকার করতে থাকেন। উপস্থিত অনেকেই মারধরের দৃশ্য দেখলেও প্রতিবাদ না করে ভিডিও করতে থাকেন। পরে ভিডিওটি গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়।

স্থানীয় লোকজন জানান, কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ডের পাশেই কুরবান আলীর একটি গ্যারেজ আছে। রাজধানী পরিবহনের তাঁর তিনটি বাস আছে। তিন মাস আগে এক যুবককে একটি বাস চালাতে দেন তিনি। বেশ কিছুদিন বাসটি চালিয়ে ঢাকার মিরপুর এলাকায় একটি গলিতে বাসটি রেখে নিখোঁজ হন ওই যুবক। পরে কুরবান আলী পুলিশের সহায়তায় বাসটি উদ্ধার করে।

গাজীপুরে চুরির অভিযোগে যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

ভিডিওতে দেখা যায়, কালো গেঞ্জি পরা এক যুবককে একটি নারকেলগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। চারপাশ থেকে তাঁকে লোকজন ঘিরে রেখেছে। তাঁদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি তাঁকে বকাঝকা করে পাশের একজনের কাছ থেকে হাতুড়ি নিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ সময়ে বাধা অবস্থায় যুবক চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘আমি কী করছি ভাই, আমারে কেন মারতাছেন? আমি কিছু করি নাই। আমারে মাইরেন না, আমার পরিবার আছে।’ এ সময়ে কুরবান আলী হাতুড়ি নিয়ে পেটাতে থাকেন আর বলতে থাকে, ‘তুই ডাকাত, তুই ডাকাতি করছস। তোর আইজক্যা খবর খবর আছে।’

এ বিষয়ে বাসমালিক কুরবান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাকে আমি স্থানীয়দের কথায় বাসটি চালাতে দিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমার বাস চুরি করে নিয়ে চলে যায়। পরে পুলিশের সহায়তায় মিরপুর এলাকার একটি গলি থেকে বাসটি উদ্ধার করা হয়।’ হাতুড়ি দিয়ে কেন পিটিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মারধর করা হয়নি, তাকে হাতুড়ি দিয়ে হাতে পায়ে মারার ভয় দেখানো হয়েছে।’

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি। তবে যে ব্যক্তিকে পিটানো হয়েছে, তাঁকে খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক য বকক র এল ক এল ক য় ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

এখন সুগার মাম্মি হওয়ার বয়স, কেন বলেছিলেন কুসুম?

দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী কুসুম শিকদার। দুই পর্দায়ই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। মাঝে অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন। কেবল তাই নয়, মিডিয়ার কোনো অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যেত না। যদিও নিজ ভুবনে ফের ফিরেছেন কুসুম। এর আগে এক সাক্ষাৎকারে কুসুম বলেছিলেন—“আমার এখন সুগার মাম্মি হওয়ার বয়স।” ফলে বিষয়টি নিয়ে বেশ চর্চা হয়েছিল। 

অনেকটা সময় পর পুরোনো সেই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন কুসুম। এমন বক্তব্য কেন দিয়েছিলেন তা ব্যাখ্যা করেছেন এই অভিনেত্রী। কয়েক দিন আগে একটি টিভি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন কুসুম। এ আলাপচারিতায় সঞ্চালক তার কাছে জানতে চান, আপনি নাকি ‘সুগার মাম্মি’ হতে চান? এ প্রশ্ন শুনেই হাসতে হাসতে কুসুম শিকদার বলেন, “ও মাই গড! এখনো এটা?” 

আরো পড়ুন:

ক্যারিয়ারের শুরুতে কত টাকা পারিশ্রমিক পেতেন তৌকীর?

‘গর্ত থেকে বাচ্চাকে বের করার উন্নত প্রযুক্তি দেশে নাই, ভাবা যায়?’

‘সুগার মাম্মি’ হওয়ার প্রসঙ্গ কোথা থেকে শুরু হয়, সেই ঘটনা বর্ণনা করে কুসুম শিকদার বলেন, “একটা সাক্ষাৎকারে এটা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। আমার কাছে জানতে চেয়েছিল—‘শোনা যায়, আপনার অনেক সুগার ড্যাডি ও গড ফাদার আছে। কিংবা একসময় ছিল বলেও শোনা যায়। এসব তথ্য কতটা সত্যি?’ তখন আমি কিছুটা বিরক্ত হয়েই হেসে হেসে বলেছিলাম, ‘সুগার ড্যাডির সময় কি আর আছে। এখন সুগার মাম্মি হওয়ার বয়স।’ ব্যাপারটা এভাবেই এসেছে।” 

যে মেয়ে আর্থিকভাবে সচ্ছল, ভালো জীবনযাপন করছে, এ ক্ষেত্রে ধরেই নেয়, তার সুগার ড্যাডি আছে। এ ধারনাটা কেমন না! সঞ্চালকের এ বক্তব্যের রেশ ধরে কুসুম শিকদার বলেন, “এটা একদম বোকা টাইপের কথা। যারা জানে না, তারা এরকম বলে। ধরেন, যারা আমাকে একদম নতুন চিনেছে, নতুন প্রজন্ম। ‘শরতের জবা’ সিনেমার পরে যখন প্রচারে আসলাম। তখন তারা চিনেছে। সেই সময়ে হয়তো আমার কথাবার্তা, পোশাক, জুয়েলারি, ঘড়ি—এসব দেখে বা কিছু সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য এসেছে। তখন তাদের মনে হয়েছে, এত টাকা কীভাবে আসলো। তার মানে তো ওনার সুগার ড্যাডি আছে!” 

এত বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে তার জমানো টাকা থাকাই স্বাভাবিক বলে মনে করেন কুসুম শিকদার। তার ভাষায়—“আমার তো বয়স অনেক। আমি তো মিডিয়াতে কাজ করছি ২৩-২৫ বছর ধরে। আমি একুশ বছর বয়স থেকে আয় করি। আমার কিছু টাকা-পয়সা থাকা তো স্বাভাবিক। না থাকাই বরং অস্বাভাবিক। আসলে এসব সেন্সের অভাব!” 

ছোটবেলায় গানের হাতেখড়ি কুসুম শিকদারের। নজরুল একাডেমি থেকে নজরুল সংগীত ও ধ্রুপদী সংগীতের উপর কোর্স সম্পন্ন করেন। পরে ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ এবং ওস্তাদ মোরশেদের কাছে গানের তালিম নেন তিনি। তার ক্যারিয়ার শুরু একজন শিল্পী হিসেবে। ২০০২ সালে লাক্স-আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন কুসুম। পরবর্তীতে নাম লেখান টেলিভিশন নাটকে। তার অভিষেক চলচ্চিত্র ‘গহীনে শব্দ’। ২০১০ সালে মুক্তি পায় এটি।   

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ