ঢাকায় ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের নিন্দা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশ এখন অত্যন্ত সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী প্রতিটি দল ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তারেক রহমান। বিকেলে ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠান হয়।

এ প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি গত এক বছরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা হুমকি দিয়েছে প্রকাশ্যে যে প্রত্যাশিত নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে, সে নির্বাচনকে তারা হতে দেবে না, বাধাগ্রস্ত করবে।’ একটি দল, গোষ্ঠী বা কিছু ব্যক্তি এই দেশকে দেশের মানুষের শান্তি স্থিতিশীলতা বিনষ্টের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

হাদির ওপর এ হামলা ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘যারা এই দেশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করতে চায়, এ দেশের সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করে, এই দেশের স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করতে চায়, তারা তাদের ষড়যন্ত্র যে শুরু করে দিয়েছে, আজকে ওসমান হাদির ঘটনা দিয়ে তা প্রমাণিত হয়েছে।’ কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে একইভাবে বিএনপির আরেক প্রার্থীকে গুলি করা হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এই পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী শক্তির সর্বোচ্চ ঐক্যের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘এ কারণেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং একই সঙ্গে যাঁরা বাংলাদেশের অস্তিত্বে, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন, দল ছোট-বড় বিষয় না, যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের অস্তিত্বে, বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে, সবার আগে বাংলাদেশ—এই নীতিতে যারা বিশ্বাস করে, আমাদের প্রত্যেকটি দল প্রত্যেকটি নেতা প্রত্যেকটি কর্মী প্রত্যেকটি মানুষকে আজ অতীতের যেকোনো সময় থেকে সবচেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

সবার প্রতি বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘কেউ যাতে কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ না পায়, সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।’

প্রশাসন চাইলে হাদিকে গুলিবর্ষণের ঘটনার তদন্তে বিএনপি সহযোগিতা করবে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে দেশের আইন অনুযায়ী তাদের যেন শাস্তি দেওয়া হয়, সে জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের উদ্দেশে তারেক রহমান অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে এবং যেকোনো মূল্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং যেকোনো মূল্যে এই দেশের মানুষ যাতে তাদের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে পারে, তার জন্য আমাদের সদা সর্বদা সচেষ্ট এবং সতর্ক থাকতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব ন ত র ক রহম ন আহ ব ন জ ন এই দ শ আম দ র ব স কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণখেলাপি, সরকারি বিল বকেয়া থাকলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না

ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি, পাশাপাশি গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎসহ সরকারি বিল বকেয়া থাকলে কোনো প্রার্থীই আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

আরো পড়ুন:

হাদিকে হত্যাচেষ্টার নিন্দা ও উদ্বেগ এনসিপির

ওসমান হাদিকে গুলির বিষয়ে তদন্ত করবে ইসি 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ধারা অনুযায়ী প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়গুলো নির্ধারিত। এসব বিধান অনুসারে, কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের আগ পর্যন্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য গণ্য হবেন।

তবে কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে নেওয়া ক্ষুদ্র কৃষি ঋণকে এই শর্তের বাইরে রাখা হয়েছে। কৃষি ঋণ ছাড়া যে কোনো ঋণের কিস্তি বকেয়া থাকলে প্রার্থিতা বাতিল হবে বলে ইসি জানিয়েছে।

এ ছাড়া সরকারি টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্যান্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে বকেয়া থাকলেও মনোনয়ন গ্রহণযোগ্য হবে না। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে এসব তথ্য উল্লেখ করে প্রার্থীর স্বাক্ষরিত হলফনামা দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ইসি জানায়, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কমিশন নিজেও কেন্দ্রীয়ভাবে জনসচেতনতামূলক প্রচার চালাবে।

অন্যদিকে, লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের নির্বাচন করার অযোগ্যতার বিষয়টিও প্রজ্ঞাপনে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকারের মালিকানায় ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের পদে কর্মরত কেউ পদত্যাগ না করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

ঢাকা/এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ