Prothomalo:
2025-12-12@09:56:17 GMT

ভূমিকম্পে শান্ত থাকতে কী করবেন

Published: 12th, December 2025 GMT

দেশে সম্প্রতি কয়েকবারের ভূমিকম্পে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকের রাতে ঘুম হচ্ছে না, কারও রক্তচাপ, কারও হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেছে। শিশুরাও ভয় পেয়েছে। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগ ঘটার আগমুহূর্তে সাধারণত নির্ভরযোগ্য কোনো সতর্কবার্তা পাওয়া যায় না। তাই ভূমিকম্পের বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকা ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা জরুরি, যা বড় ধরনের বিপর্যয় কমাতে সহায়তা করতে পারে।

মনকে শান্ত রাখতে করণীয়

মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। শান্ত হওয়ার জন্য ধীরে ধীরে ৩ সেকেন্ড শ্বাস নিন, ৩ সেকেন্ড ধরে রাখুন, ৩ সেকেন্ডে ছাড়ুন। এতে আতঙ্ক কমে।

বাস্তবতায় ফোকাস করুন। ‘আমি আতঙ্কিত নই, আমি নিরাপদ পদক্ষেপ গ্রহণ করছি’—এ কথা মনে মনে বললে মন শান্ত থাকে এবং আতঙ্ক কমে যায়।

গুজবে কান দেবেন না। আতঙ্ক বাড়ায় এমন তথ্য ও গুজব এড়িয়ে চলুন।

নিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাস ও রিল্যাক্সেশন অনুশীলন করুন।

অতিরিক্ত ভয়, ঘুমের সমস্যা, দুঃস্বপ্ন বা মাথাঘোরা অনুভব করলে সাইকিয়াট্রিস্ট, সাইকোলজিস্ট ও অকুপেশনাল থেরাপিস্টের সাহায্য নিন।

ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুতি

বাসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। যেমন গ্যাস সিলিন্ডার, চুলা, বৈদ্যুতিক তার নিরাপদ স্থানে রাখুন। ঘরের নড়বড়ে দেয়াল, সিলিং, ফ্যান, লাইট, ঝাড়বাতি মেরামত করে রাখুন।

জরুরি ব্যাগে টর্চ, পানি, শুকনা খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসা কিট ও গুরুত্বপূর্ণ নথির (এনআইডি, জন্মসনদ, সার্টিফিকেট) কপি রাখুন।

বের হওয়ার জরুরি পথ চিহ্নিত করুন এবং পরিবারের সদস্যদের ভূমিকম্পে করণীয় বিষয়ে প্রশিক্ষিত করুন। নিকটস্থ হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ স্টেশনের নম্বর লিখে রাখুন।

ভূমিকম্পের সময় করণীয়

ঘরের ভেতরে থাকলে : হাঁটু গেড়ে বসুন। মজবুত টেবিল, ডেস্ক বা বিছানার নিচে আশ্রয় নিন। টেবিল বা ডেস্ক শক্ত করে ধরে থাকুন। বিপজ্জনক বস্তু থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। লিফট ব্যবহার করবেন না।

বাইরে থাকলে : খোলা জায়গায় অবস্থান করুন (মাঠ, খোলা রাস্তা)। ভবন, গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, সাইনবোর্ড, ব্রিজ থেকে দূরে থাকুন।

গাড়িতে থাকলে : গাড়ি নিরাপদ জায়গায় থামিয়ে ভেতরে অবস্থান করুন। ওভারব্রিজ, ব্রিজ, টানেল বা বড় ভবনের কাছে গাড়ি থামাবেন না।

ভূমিকম্পের পর করণীয়

নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কেউ আহত হলে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে যাবেন না। ভবনে ফাটল, ঝুলে থাকা দেয়াল, ভাঙা সিঁড়ি থাকলে ভেতরে প্রবেশ করবেন না। গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ লাইন পরীক্ষা করুন। সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

ফারহানা হক, সিনিয়র ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিস্ট অ্যান্ড ইনচার্জ, মেন্টাল হেলথ ডে-সেন্টার, সিআরপি, মিরপুর, ঢাকা

আরও পড়ুনভূমিকম্পের সময় ও আগে-পরে কী করবেন২৬ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র ন র পদ ত কর ন আতঙ ক করণ য় করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি বিনিয়োগ না নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই: লুৎফে সিদ্দিকী

‘আমাদের বিনিয়োগের অনেক সুযোগ আছে, কাজ করার জন্য তরুণ জনসংখ্যা আছে। এই দুটির মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। এ জন্য বিদেশি বিনিয়োগ একটি গাণিতিক বাস্তবতা, এটা না নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা না নেওয়ার মানে হলো, আমি শুধু টাকা ছাপাব—মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকবে, ঋণ বাড়তে থাকবে; সুদের হার কখনো কমবে না। এ জন্য এটা নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই, এফডিআই (প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ) দরকার। আমাদের যে এত দিন আসছে না, এটি লজ্জার ব্যাপার।’

আজ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। নগরের র‍্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউয়ে ‘ফিউচার আউটলুক অব বাংলাদেশ ইকোনমি: এফডিআই, ফাইন্যান্সিয়াল রিফর্মস অ্যান্ড এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ শিরোনামে এ সম্মেলনের আয়োজন করে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘এই মুহূর্তে সরকারের বাজেটের ব্যয়ের সবচেয়ে বড় খাত হলো ঋণের ইন্টারেস্ট রেট (সুদের হার)। এনবিআরের যত রাজস্ব আয় হচ্ছে, তার ২১ শতাংশ শুধু ইন্টারেস্ট রেটে যাচ্ছে... প্রতি ঘণ্টায় ১৪ কোটি টাকা।’
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের দুটি ডেফিসিট (ঘাটতি) আছে—বাহ্যিক ঘাটতি ও অভ্যন্তরীণ ঘাটতি। বাহ্যিক ঘাটতি হলো আমাদের রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি। আমদানি হয় খাদ্য, সার অথবা জ্বালানি। আমরা রপ্তানি করি মূলত তৈরি পোশাক।...দেশের ভেতরে ঋণ নিয়ে ঘাটতি সামাল দিচ্ছি। কিন্তু ঋণগুলো তো পরিশোধ করতে হবে। ঋণ নেওয়াটা খুব একটা খারাপ কিছু নয়, যদি আমরা এই টাকা নিয়ে কী করছি, এটার ওপর নজর রাখি। এটা কি বিনিয়োগ হচ্ছে, না এমনি খরচ হয়ে যাচ্ছে।’

চট্টগ্রামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার উদাহরণ টেনে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘তাদের ভিয়েতনামে ও এখানে কারখানা আছে। ভিয়েতনামে শ্রমিকদের প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি বেতন দেওয়া হয়, তবুও মুনাফা বেশি। এখানে বেতনও কম, মুনাফাও কম। তাহলে মাঝের ৫০ শতাংশ কোথায় যায়? অর্ধেক যায় আমাদের ইনইফিসিয়েন্সিতে—লজিস্টিকস, সড়ক, পোর্টে সময় বেশি লাগে বলে। আর বাকি অর্ধেক যায় দুর্নীতিতে। এই দুই সমস্যার সমাধান আমাদের হাতেই। সংস্কার এখন প্রাতিষ্ঠানিক আলাপ নয়…আমাদের সিস্টেমই পাল্টাতে হবে।’

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ও ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন। ভিডিও বার্তায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান তাঁর বক্তব্যে করনীতি, কর কাঠামো ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।

সম্মেলন কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মেরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সেভেন রিংস সিমেন্ট গ্রুপের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো. কাউসার আলম। দুটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এস এম শোহরাবুদ্দীন। সমাপনী বক্তব্য দেন আইসিএমএবির চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ