হাদির উপর হামলা, নির্বাচন বানচালের সুপরিকল্পিত চক্রান্ত কিনা: জামায়াত
Published: 12th, December 2025 GMT
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
হামলাটি পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নির্বাচন বানচালের কোনো সুপরিকল্পিত চক্রান্ত কিনা- সরকারকে গভীরভাবে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই একজন অন্যতম জুলাই যোদ্ধা এবং এমপি প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এটি ভীতি সৃষ্টির সুস্পষ্ট অপচেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হয়।’’
“আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি- হামলাকারীদের অবিলম্বে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে হবে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ জরুরিভাবে পর্যালোচনা করতে হবে এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল প্রার্থী, দলীয়কর্মী ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’’
হামলাটি পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নির্বাচন বানচালের কোনো সুপরিকল্পিত চক্রান্ত কিনা সরকারকে গভীরভাবে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান গোলাম পরওয়ার।
‘‘ওসমান হাদি গত ১৩ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে জানান, ৩০টি বিদেশি নাম্বার থেকে কল ও টেক্সট করে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে,’’ বিষয়টি উল্লেখ করে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ‘‘দেশবাসীর কাছে এটা পরিষ্কার যে প্রশাসন তার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে গুরুতর অবহেলার শামিল। আমরা প্রশাসনের এই দায় এড়ানোর নিন্দা জানাই।”
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘এ ধরনের বর্বর হামলা দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপর্যস্ত করে। আমরা আশা করি, সরকার ও প্রশাসন ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করবে।’’
এ সময় তিনি শরিফ ওসমান হাদির আরোগ্য কামনা এবং তার পরিবার ও সহকর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা জানান।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ওসম ন হ দ
এছাড়াও পড়ুন:
জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে জামায়াত: গোলাম পরওয়ার
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে আপনারা বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ কি পেয়েছেন? দুর্নীতি আর দুঃশাসন, গুম-খুন, বিরোধী দল ও মতের ওপর নির্যাতন-নিষ্পেষণ দিয়ে ভরপুর ছিল সেই শাসন। বারবার শাসক পরিবর্তন হয়েছে; কিন্তু জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তাই তো দেশের জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নে স্থানীয় বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ওই ইউনিয়নের ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা এই এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা বাস্তবায়নে আপনারাই সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের এই আহ্বান পৌঁছাবেন। ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাবেন।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘পরিবর্তিত বাংলাদেশের জনগণ এখন শাসনব্যবস্থারও পরিবর্তন চান। বিভিন্ন সময়ে চলমান ঘুষ-দুর্নীতি আর দুঃশাসনেরও অবসান চান। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও স্থিতিশীলতা চান। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও ঠিক তেমনি একটি কল্যাণমুখী ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র গড়তে চায়, যেখানে দুর্নীতি আর দুঃশাসন টোটালি স্টপড হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে ইনশা আল্লাহ।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান পরিবর্তিত বাংলাদেশে কল্যাণমুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। ঘোষিত রূপরেখা হলো—সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা হবে। মানুষের মাঝে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে শিক্ষিত বেকার যুবকদের হয় কর্মসংস্থান, না হয় বেকার ভাতা দেওয়া হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। বাস্তবমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নে টেকসই ও উন্নত জাতি গঠন করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকলের সহাবস্থান নিশ্চিত করা হবে।’
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি হবে কল্যাণমুখী—দলের লেজুড়বৃত্তিক নয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা হবে। সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে, যাতে তারা রাষ্ট্রের মালিক না ভেবে নিজেদের রাষ্ট্রের সেবক ভাবেন। শাসক নয়, জনগণই হবে রাষ্ট্রের মালিক।’ এ সময় তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান।
জামায়াত নেতা আব্দুল জলিল জমাদ্দারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, পি. গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদের সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম। জামায়াত নেতা মো. সাইফুদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ফুলতলা উপজেলার আমির আব্দুল আলীম মোল্যা, নায়েবে আমির মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, দামোদর ইউনিয়নের আমির শাব্বির আহমদ, সেক্রেটারি মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।