৮ মার্চ, ১৯৭৫। ২টা ৫৫ মিনিট। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের কাগমারী গিয়ে পৌঁছালেন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রথমে তিনি গেলেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ প্রাঙ্গণে। পুলিশ বাহিনী তাঁকে গার্ড অব অনার জানাল। গার্ড অব অনারের শেষ মুহূর্তে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। মাওলানা সাহেবকে দেখেই বঙ্গবন্ধু অভিবাদন মঞ্চ থেকে দ্রুত নেমে এলেন। ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। দুজনের মুখে অনুপম হাসির দীপ্তি। এই দৃশ্য ধারণ করতে সংবাদপত্রের আলোকচিত্রীরা দৌড়ে এলেন। কেউ কেউ এই দৃশ্য ধরতে পারলেন। তবে বেশির ভাগই পারলেন না। একজন বঙ্গবন্ধুকে অনুরোধ করলেন, ভাসানীকে আবার জড়িয়ে ধরতে। বঙ্গবন্ধু এবার শিশুর মতো নবতিপর মাওলানার বুকে মাথা রাখলেন। মাওলানা সাহেবও পরম স্নেহে বঙ্গবন্ধুর মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে প্রাণভরে দোয়া করতে লাগলেন। মাওলানার চোখে আনন্দের অশ্রু। এ যেন দীর্ঘকাল অদর্শনের পর পিতা-পুত্রের এক হৃদয়স্পর্শী মিলনদৃশ্য। আলোকচিত্রীরা এই দুর্লভ ও মনোহর মুহূর্তকে ক্যামেরায় ধারণ করে চলছেন। মাওলানার বুকে মাথা রেখে বঙ্গবন্ধু এবার আলোকচিত্রীদের বললেন, ‘তোমরা জানো না, আমি তো হুজুরের বুকেরই মানুষ।’ মাওলানাও বললেন, ‘মজিবুর আমার কত প্রিয়, তোমরা তা জানো না।’
মাওলানা সাহেবকে দেখেই বঙ্গবন্ধু অভিবাদন মঞ্চ থেকে দ্রুত নেমে এলেন। ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। দুজনের মুখে অনুপম হাসির দীপ্তি। এই দৃশ্য ধারণ করতে সংবাদপত্রের আলোকচিত্রীরা দৌড়ে এলেন। কেউ কেউ এই দৃশ্য ধরতে পারলেন। তবে বেশির ভাগই পারলেন না।এরপর মাওলানা সাহেবকে জড়িয়ে বঙ্গবন্ধু কাগমারী মোহাম্মদ আলী কলেজের শ্বেতপ্রস্তর নির্মিত উদ্বোধনী ফলকের আবরণ উন্মোচনের জন্য অগ্রসর হন। দুজনে একত্রে এই আবরণ উন্মোচন করেন। এই পর্ব শেষ করে এই দুই জননেতা রাষ্ট্রপতির গাড়িতে করে গেলেন সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভাসানী ঘুরে ঘুরে রাষ্ট্রপতিকে দেখান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ। ছায়াঘেরা ক্যাম্পাসের চারদিকে লাল শিমুলের সমারোহ। দুজন পাশাপাশি হাঁটছেন। কথা বলছেন কখনো সহাস্যে; কখনো একান্তে। বঙ্গবন্ধু হঠাৎ ভাসানীকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘শহীদ সাহেব যে একটা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, সেটা কোথায়?’ ভাসানী তাঁকে নিয়ে গেলেন সন্তোষ মাতৃসদন ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের সামনে। বঙ্গবন্ধুকে দেখান একটা নবনির্মিত দোতলা দালান। নিচে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ফলক। তাতে লেখা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নাম। মাওলানা ভাসানীকে বঙ্গবন্ধু অনুরোধ করলেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী’ কথাটি তুলে দিতে।
দুই নেতার উষ্ণ আলিঙ্গন [মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমান, টাঙ্গাইল, ৮ মার্চ, ১৯৭৫]। আলোকচিত্র: রশীদ তালুকদার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই দ শ য ধ
এছাড়াও পড়ুন:
দুই নেতার উষ্ণ আলিঙ্গন
৮ মার্চ, ১৯৭৫। ২টা ৫৫ মিনিট। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের কাগমারী গিয়ে পৌঁছালেন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রথমে তিনি গেলেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ প্রাঙ্গণে। পুলিশ বাহিনী তাঁকে গার্ড অব অনার জানাল। গার্ড অব অনারের শেষ মুহূর্তে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। মাওলানা সাহেবকে দেখেই বঙ্গবন্ধু অভিবাদন মঞ্চ থেকে দ্রুত নেমে এলেন। ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। দুজনের মুখে অনুপম হাসির দীপ্তি। এই দৃশ্য ধারণ করতে সংবাদপত্রের আলোকচিত্রীরা দৌড়ে এলেন। কেউ কেউ এই দৃশ্য ধরতে পারলেন। তবে বেশির ভাগই পারলেন না। একজন বঙ্গবন্ধুকে অনুরোধ করলেন, ভাসানীকে আবার জড়িয়ে ধরতে। বঙ্গবন্ধু এবার শিশুর মতো নবতিপর মাওলানার বুকে মাথা রাখলেন। মাওলানা সাহেবও পরম স্নেহে বঙ্গবন্ধুর মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে প্রাণভরে দোয়া করতে লাগলেন। মাওলানার চোখে আনন্দের অশ্রু। এ যেন দীর্ঘকাল অদর্শনের পর পিতা-পুত্রের এক হৃদয়স্পর্শী মিলনদৃশ্য। আলোকচিত্রীরা এই দুর্লভ ও মনোহর মুহূর্তকে ক্যামেরায় ধারণ করে চলছেন। মাওলানার বুকে মাথা রেখে বঙ্গবন্ধু এবার আলোকচিত্রীদের বললেন, ‘তোমরা জানো না, আমি তো হুজুরের বুকেরই মানুষ।’ মাওলানাও বললেন, ‘মজিবুর আমার কত প্রিয়, তোমরা তা জানো না।’
মাওলানা সাহেবকে দেখেই বঙ্গবন্ধু অভিবাদন মঞ্চ থেকে দ্রুত নেমে এলেন। ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। দুজনের মুখে অনুপম হাসির দীপ্তি। এই দৃশ্য ধারণ করতে সংবাদপত্রের আলোকচিত্রীরা দৌড়ে এলেন। কেউ কেউ এই দৃশ্য ধরতে পারলেন। তবে বেশির ভাগই পারলেন না।এরপর মাওলানা সাহেবকে জড়িয়ে বঙ্গবন্ধু কাগমারী মোহাম্মদ আলী কলেজের শ্বেতপ্রস্তর নির্মিত উদ্বোধনী ফলকের আবরণ উন্মোচনের জন্য অগ্রসর হন। দুজনে একত্রে এই আবরণ উন্মোচন করেন। এই পর্ব শেষ করে এই দুই জননেতা রাষ্ট্রপতির গাড়িতে করে গেলেন সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভাসানী ঘুরে ঘুরে রাষ্ট্রপতিকে দেখান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ। ছায়াঘেরা ক্যাম্পাসের চারদিকে লাল শিমুলের সমারোহ। দুজন পাশাপাশি হাঁটছেন। কথা বলছেন কখনো সহাস্যে; কখনো একান্তে। বঙ্গবন্ধু হঠাৎ ভাসানীকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘শহীদ সাহেব যে একটা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, সেটা কোথায়?’ ভাসানী তাঁকে নিয়ে গেলেন সন্তোষ মাতৃসদন ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের সামনে। বঙ্গবন্ধুকে দেখান একটা নবনির্মিত দোতলা দালান। নিচে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ফলক। তাতে লেখা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নাম। মাওলানা ভাসানীকে বঙ্গবন্ধু অনুরোধ করলেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী’ কথাটি তুলে দিতে।
দুই নেতার উষ্ণ আলিঙ্গন [মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমান, টাঙ্গাইল, ৮ মার্চ, ১৯৭৫]। আলোকচিত্র: রশীদ তালুকদার