মেসির জন্য প্রস্তুতি তুঙ্গে কলকাতায়
Published: 12th, December 2025 GMT
শুক্রবার গভীর রাতে ভারতে পা রাখতে যাচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। তাকে নিয়ে আয়োজনের শেষ নেই ভারতে। সল্টলেক স্টেডিয়াম থেকে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে, সব জায়গাতেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কলকাতা থেকে মুম্বাই, দিল্লি এবং হায়দরাবাদে যাবেন মেসি।
তবে এটি মেসির প্রথম ভারত সফর নয়। এর আগে, ২০১১ সালে প্রীতি ম্যাচ খেলতে এসেছিলেন আর্জেন্টিনার হয়ে। কলকাতায় হয়েছিল সে ম্যাচটি। তবে এবার ভারতে আসছেন মেসি একক সফরে। যদিও মুম্বাইতে তার সঙ্গে যোগ দেবেন মেসির ইন্টার মায়ামি সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ ও বিশ্বকাপ জয়ী রদ্রিগো ডি পল ।
সময়ের নিরিখে কলকাতায় সবচেয়ে কম সময় থাকবেন মেসি। তবে এখানে অনুষ্ঠানে থাকছে নানা বৈচিত্র্য। ইতিধ্যেই মেসির থিমসং সামনে এসেছে। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়ের সুরে সেই গানের ভিডিওতে মেসিকে ঘিরে কলকাতা ফুটবলের নানা উন্মাদনা তুলে ধরা হয়েছে। মেসির নাম লেখা নানা ধরণের টি-শার্টও বাজারে এসেছে।
দক্ষিণ আমেরিকার সংস্কৃতির ট্যাঙ্গো নাচের সঙ্গে মেলানো হয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত। টলিউডের শিল্পীরা মেসির সামনে এই পারফরম্যান্স করবেন। মাঠে খুদে ফুটবলারদের সঙ্গে একটি কোচিং ক্লিনিকে অংশ নেবেন মেসি। পরে দেখবেন মোহনবাগান ও ডায়মন্ডহারবারের ম্যাচ। যা খবর, মাঠে নেমে দু-একটা পেনাল্টি কিকও নিতে পারেন কিংবদন্তী।
টিকিট বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে বলে দাবি আয়োজকদের। বেশ কিছু কর্পোরেটকে বড় সংখ্যার টিকিট দেওয়া হয়েছে। মাঠ ভরে যাবে বলেই আশা করা হচ্ছে। কলকাতা ছাড়ার আগে শ্রীভূমিতে নিজের মূর্তি উদ্বোধন করবেন মেসি। যেখানে দিয়েগো ম্যারাডোনার মূর্তিও আছে। ২১ মিটার (৭০ম ফুট) উচ্চতার সেই ভাস্কর্য নিয়ে ভারতজুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উন্মাদনা।
কলকাতায় লোহার নির্মিত ভাস্কর্যটিতে মেসিকে বিশ্বকাপ উঁচিয়ে রাখা অবস্থায় দেখা যাবে। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি সরাসরি উপস্থিত না থেকে ভার্চুয়ারি উন্মোচন করবেন ভাস্কর্যটি।
ভারতে তিন দিনের সফরে ভ্রমণ করবেন চারটি শহরে। সূচিতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎও। এই সফরে বলিউড তারকা শাহরুখ খান ও ভারতের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি।
ভাস্কর্যের প্রধান শিল্পী মন্টি পল বার্তা সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ৪০ দিনের মধ্যেই ভাস্কর্যটির কাজ শেষ করা হয়েছে। ‘মেসির মূর্তি তৈরি করা আমার জন্য গর্বের বিষয়। এটি আমার তৈরি সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য।’
কলকাতায় একটি ছোট প্রীতি ম্যাচ খেলার পর মেসি যাবেন হায়দরাবাদ, মুম্বাই ও নয়াদিল্লিতে। হায়দরাবাদে তার সম্মানে আয়োজিত কনসার্টে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি আরেকটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন তিনি।
প্রায় প্রত্যেক শহরে মেসি দর্শনের টিকিট ধরা হয়েছে সাড়ে চার হাজার রুপি, শুধু মুম্বাইয়ে টিকিটের দাম চড়া- ৮২৫০ রুপি।
ভারত সফরে মেসির ব্যস্ত সূচি (বাংলাদেশ সময়)
১৩ ডিসেম্বর, কলকাতা
রাত ২টা: কলকাতায় পা রাখবেন মেসি।
সকাল ১০-১১টা: বিশেষ অতিথিদের সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময়।
সকাল ১১-১১.
সকাল ১১.৪৫-১১.৫৫: যুব ভারতী স্টেডিয়ামে আগমন।
বেলা ১২টা: যুব ভারতীতে শাহরুখ খানের আগমন।
বেলা ১২.৩০ মি.: স্টেডিয়ামে মুখমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও সৌরভ গাঙ্গুলির আগমন।
বেলা ১২.৩০-১টা: প্রীতি ম্যাচ ও অন্য অনুষ্ঠান।
বেলা ২টা: হায়দারাবাদের উদ্দেশ্যে যাত্রা।
১৩ ডিসেম্বর, হায়দারাবাদ
সন্ধ্যা ৭.৩০ মি.: মেসি ও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্তী রেভান্ত রেড্ডিকে নিয়ে রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে সেভেন ভার্সেস সেভেন ম্যাচ। সন্ধ্যায় মেসির সম্মানে গানের কনসার্ট।
১৪ ডিসেম্বর, মুম্বাই
বিকেল ৪টা: ভারতের ক্রিকেট ক্লাবের প্যাডেল কাপে অংশগ্রহণ।
বিকেল ৪.৩০ মি.: সেলিব্রেটি ফুটবল ম্যাচ।
বিকেল ৫.৩০ মি.: চ্যারিটি ফ্যাশন শোয়ের আগে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান।
১৫ ডিসেম্বর, নয়া দিল্লি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ
বেলা ২টা: অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান, মিনার্ভা অ্যাকাডেমি খেলোয়াড়দের পুরস্কার প্রদান।
সন্ধ্যা ৭টা: মেসির বিদায়।
ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন ভ স কর য ড স ম বর কলক ত য় করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভিনগ্রহের প্রাণীদের পৃথিবীতে আগমন নিয়ে যা ভাবেন ইলন মাস্ক
প্রযুক্তি জগতের আলোচিত ব্যক্তিত্ব ইলন মাস্ক ভিন্নগ্রহের প্রাণী বা ইউএফও দেখা নিয়ে নতুন এক তথ্য দিয়ে চমক তৈরি করেছেন। অনেকেই ভিনগ্রহের প্রাণীরা পৃথিবীতে আসছে বলে বিশ্বাস করলেও ইলন জানিয়েছেন, তিনি বা তাঁর সংস্থা স্পেসএক্সের কেউই ভিনগ্রহের প্রাণীর আগমনের কোনো প্রমাণ পাননি। বেশির ভাগ ইউএফও ঘটনা ব্যাখ্যাহীন ঘটনা। উন্নত সামরিক প্রকল্প বা সাধারণ বস্তু থেকে বিভ্রান্তি তৈরি হয় বলে জানান ইলন মাস্ক।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে মাস্ক বলেন, যদিও আকাশে অদ্ভুত বস্তু দেখা যাওয়ার খবর প্রায়ই শিরোনাম হয়, তবে এর আসল ব্যাখ্যা সাধারণত নাটকীয় হয় না। তাঁর মন্তব্যের কারণে ইউএফও এলিয়েন জীবনের প্রমাণ নাকি কেবল ভুল বোঝা—তা নিয়ে নতুন আলাপ শুরু হয়েছে। মাস্ক বলেছেন, তিনি বা স্পেসএক্সের শীর্ষস্থানীয় দলের কেউই কখনো ভিনগ্রহের প্রাণীর কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখেননি। ইলন মাস্কের স্পেসএক্স হাজার হাজার রকেট ও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে এবং মহাকাশে অসংখ্য বস্তু অনুসরণ করে চলেছে। মাস্ক যুক্তি দেন, যদি ভিনগ্রহের প্রাণীরা সত্যিই পৃথিবীতে আসত, তবে যাঁরা প্রতিদিন আকাশ পর্যবেক্ষণ করে তারাই প্রথম জানতে পারতেন।
ইলন মাস্ক আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউএফও দেখার বেশির ভাগ ঘটনার পেছনে সম্ভবত স্বাভাবিক ও সাধারণ কারণ রয়েছে। এর মধ্যে গোপনীয় মার্কিন সামরিক বিমান, হাইপারসনিক অস্ত্রের পরীক্ষা বা অন্যান্য উন্নত প্রতিরক্ষা প্রকল্পকে মানুষ ভুল বুঝতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে এসব রহস্যময় মনে হতে পারে, কিন্তু মহাকাশশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কাছে সেসব এলিয়েন নয়।
মার্কিন সরকারের তদন্তকারীরাও বছরের পর বছর ধরে একই কথা বলে আসছেন। মাস্ক বলেন, বেশির ভাগ ইউএফও রিপোর্ট ড্রোন, বেলুন, আলোক প্রতিফলন বা এমনকি সেন্সরের ত্রুটি হিসেবে দেখা যায়। জনগণের কাছে যা অবিশ্বাস্য মনে হয়, বিশেষজ্ঞদের কাছে তা প্রায়ই খুব সাধারণ।
মাস্কের মন্তব্য পেন্টাগনের অল-ডোমেইন অ্যানোমালি রেজল্যুশন অফিসের অনুসন্ধানের সঙ্গে মিলে যায়। এই সংস্থা ৮০০টির বেশি ইউএফওর ঘটনা নিয়ে কাজ করে ভিনগ্রহের প্রাণীর কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ইউএফও মনে করা বস্তুর পেছনে সাধারণ ভিন্ন কোনো ব্যাখ্যা রয়েছে, ভিনগ্রহের জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই।
ইউএফওর গল্পকে ভুল প্রমাণিত করলেও মাস্ক মহাবিশ্বের জীবন অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেন। মঙ্গল গ্রহে অভিযান, গভীর মহাকাশ যান পাঠানো ও ভবিষ্যতের টেলিস্কোপ হয়তো একদিন অন্য কোথাও জীবনের লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে বলে মনে করেন ইলন মাস্ক। ইলন বলেন, মানুষের কল্পনাকে প্রমাণের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া