জীর্ণ পোশাকের তরুণটির মধ্যে সেভাবে আলাদা বিশেষত্ব নেই। প্রথম দৃশ্যটি ছিল, গেট পেরিয়ে স্ত্রীকে দেখতে যাচ্ছেন তিনি। হচ্ছিল কে বালাচন্দর পরিচালিত ‘অপূর্ব রাগাঙ্গাল’ সিনেমার কথা। জীর্ণ পোশাকের সেই তরুণের নাম শিবাজি রাও গায়কোয়াড়। ছবি সুপারহিট। দর্শক-সমালোচক সবাই বাহ বাহ করছেন। কে জানত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি জন্ম দেবে ভারতীয় সিনেমার নতুন এক তারকাকে; যিনি পাঁচ দশক পরও সমান দাপটে বক্স অফিসে ছড়ি ঘোরাবেন। সময়ের সঙ্গে শিবাজি রাও গায়কোয়াড় বিস্মৃত রজনীকান্ত নামেই তাঁকে চেনে সবাই। আজ ১২ ডিসেম্বর ভারতের আলোচিত এই তারকার জন্মদিন ।

রজনীকান্ত কখনোই পর্দার ইমেজকে বাস্তবে টেনে আনতে আগ্রহী নন। জনসমক্ষে হাজির হন মেকআপ ছাড়া, কোনো পরচুলা ছাড়া, সাধারণ পোশাকে। তাঁর আগে এমজিআর নিজের টাক মাথা ঢাকতে সব সময় টুপি পরে থাকতেন; রজনীকান্ত তেমন আড়াল করেন না কিছুই।

খলনায়কের ভূমিকায়
আজকের রজনীকান্ত মানেই সিগারেট ঘোরানো, সানগ্লাস উল্টে ফেলা, অনন্য ভঙ্গিতে হাঁটা আর ঠোঁটে বিদ্রূপাত্মক হাসি। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুতে এমন নায়কোচিত ভূমিকায় হাজির হতেন না। বরং একের পর এক খল চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে—‘আভারগল’, ‘১৬ ভায়াথিনিলে’, ‘আড়ু পুলি আট্টাম’ থেকে ‘গায়ত্রী’; তিনি ছিলেন ভীতিজাগানিয়া এক খলনায়ক।

নায়ক-খলনায়কের সীমানা পেরোনো
১৯৭৭ সালে এরাঙ্কি শর্মার তেলেগু ছবি ‘চিলাকাম্মা চেপ্পিন্দি’তে প্রথম নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন রজনীকান্ত। একই বছরে এসপি মুথুরামানের ‘ভুবনা ওরু কেলভি কুরি’তে শোকার্ত প্রেমিকের চরিত্র এনে দেয় সমালোচকদের প্রশংসা। কিন্তু ১৯৮০ সালের ‘বিলা’ অমিতাভ বচ্চনের ‘ডন’-এর তামিল সংস্করণ তাঁকে দিল এক নতুন পরিচয়। এখানে তিনি ধূসর চরিত্রকে এমনভাবে জীবন্ত করলেন, যা তাঁকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে দিল।

‘অপূর্ব রাগাঙ্গাল’ সিনেমায় কমল হাসান ও রাজনীকান্ত। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রজন ক ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় জামায়াতের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিগুলো স্থগিত

কিছুদিন ধরেই রাজধানীর বিভিন্ন আসনে জনসংযোগের পাশাপাশি মেডিকেল ক্যাম্প, শীতবস্ত্র বিতরণের মতো নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল জামায়াতে ইসলামী। তবে নির্বাচনের তফসিল হওয়ায় সেই কর্মসূচিগুলো স্থগিত ঘোষণা করেছে দলটি।

আজ শুক্রবার জামায়াতের মিডিয়া বিভাগ থেকে পূর্বনির্ধারিত সব কর্মসূচি স্থগিতের কথা জানানো হয়। তার এক দিন আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন।

জামায়াতের আগের ঘোষণা অনুযায়ী, আজ সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর কাফরুলের মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, সাড়ে ৯টায় মিরপুর-১ নম্বরের ঈদগাহ মাঠে ঢাকা-১৪ আসনের গণসমাবেশ এবং বেলা আড়াইটায় বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা-৭ আসনের জনসভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল দলীয় আমির শফিকুর রহমানের।

এ ছাড়া সকাল সাড়ে ৯টায় মধুবাগ মাঠে ঢাকা-১২ আসনের গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন এবং সকাল ১০টায় শ্যামলী স্কয়ারের সামনে থেকে ঢাকা-১৩ আসনের গণমিছিলে অংশ নেওয়ার কথা ছিল জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও এই আসনের প্রার্থী মো. মোবারক হোসাইনের।

তবে এই কর্মসূচিগুলোর কোনোটিই হয়নি। আগামীকাল শনিবারের কর্মসূচিগুলোও স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া জামায়াত নেতাদের নির্বাচনের প্রচারমূলক পোস্টারও সরিয়ে নিতে দেখা গেছে দলটির নেতা–কর্মীদের।

নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতেই এই পদক্ষপ বলে জানান জামায়াতের নেতারা। আচরণবিধির ১৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের ৩ (তিন) সপ্তাহ আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না।

জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, জামায়াত আমিরের কর্মসূচিগুলো ছিল পূর্বনির্ধারিত। সে কারণে সব ধরনের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। তবে তফসিল ঘোষণার পরে আজ শুক্রবার এবং আগামীকাল শনিবারের সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচিগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নির্বাচনী আচরণবিধির ৭ ধারায় বলা হয়েছে, ভোটের প্রচারে কোনো ধরনের পোস্টার ব্যবহার করা যাবে না। কোনো স্থাপনা কিংবা যানবাহনে কোনো প্রকার লিফলেট বা হ্যান্ডবিলও সাঁটানো যাবে না।

এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী এগুলো তফসিলের পরপরই সরিয়ে ফেলতে হবে। নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে কিছু বলার আগে জামায়াত নিজস্ব উদ্যোগে সেগুলো সরিয়ে নিচ্ছে। জামায়াতের আমিরের নির্দেশনায় তা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ