পার্বত্য ৩ আসনে প্রার্থী না দিতে জাতীয় দলগুলোর প্রতি আহ্বান ইউপিড
Published: 12th, December 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে পার্বত্য অঞ্চলের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। একইসঙ্গে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় পার্বত্য অঞ্চলের তিন আসনে প্রার্থী না দিতে জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক দলগুলো প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউপিডিএফ।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা এ আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “ইউপিডিএফ বরাবরই গণতান্ত্রিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান প্রত্যাশা করে। শত দমন-পীড়ন, নানামুখী উস্কানি ও চাপের মুখেও সে কারণে ২৭ বছর ধরে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই অঞ্চলের জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।”
গণতান্ত্রিক দল হিসেবে ইউপিডিএফ ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং একইভাবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ইউপিডিএফ নেতা পার্বত্য চট্টগ্রামের পশ্চাৎপদ পাহাড়ি জনগণের সমস্যা, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও দাবি তুলে ধরার জন্য জাতীয় সংসদে নিজেদের জাতিসত্ত্বার লোকের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেন। জাতীয় সংসদে পাহাড়িদের জন্য ‘সংরক্ষিত আসনের’ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই অঞ্চলের জনগণের স্বার্থ, অনুভূতি এবং সর্বোপরি পাহাড়িদের অস্তিত্বের সংকটাপন্ন দশা বিবেচনা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি সংসদীয় আসনে কোনো পাহাড়ি কিংবা অপাহাড়ি প্রার্থী না দেওয়ার জন্য বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ অন্যান্য সকল জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রসিত খীসা জাতীয় সংসদে পাহাড়ি জনগণের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ইউপিডিএফের এই আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সুশীলসমাজসহ সব মহলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো জাতীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট বা সমঝোতা না করতে পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক দলগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা/শংকর/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহ ব ন জ ন য় ছ র জন ত ক দল জনগণ র র জন য দলগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মেগা প্রকল্প মানেই মেগা দুর্নীতি: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির অন্যতম লক্ষ্য হলো দলটি কোনো মেগা প্রকল্পে যাবে না। তারেক রহমান বলেছেন, মেগা প্রকল্প মানেই মেগা দুর্নীতি। রাষ্ট্রের অর্থ জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার উন্নয়নের পেছনে খরচ করা হবে।
আজ বুধবার বিকেলে ঢাকার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তারেক রহমান এ কথা বলেন। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে যুবদল এবং কৃষক দলের নেতারা অংশ নেন।
বিগত স্বৈরাচারের সময় মেগা প্রকল্প হলেও উদ্দেশ্য সফল হয়নি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিগত স্বৈরাচারের সময় উন্নয়নের নামে বহু অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। আইটি পার্কের নামে বহু অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলোতে এখন বিয়েশাদির মতো সামাজিক অনুষ্ঠান হয়। যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে করা হয়েছিল, সেটি সফল হয়নি।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির অন্যতম লক্ষ্য হলো আমরা কোনো মেগা প্রকল্পে যাব না। মেগা প্রকল্প মানেই মেগা দুর্নীতি। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। রাষ্ট্রের অর্থ জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্যের উন্নতির পেছনে খরচ করতে হবে। সে জন্যই বিএনপির নতুন আইটি পার্ক বানানোর পরিকল্পনা নেই। যেগুলো আছে, সেগুলো সংস্কার করে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে যাঁরা কাজ করতে চান, তাঁদের সুযোগ করে দেবে।’
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, কর্মসংস্থানসহ আটটি বিষয়ে কীভাবে কাজ করবে—এ নিয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জন্য ধারাবাহিক কর্মশালা বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে বিএনপি। এই অনুষ্ঠান শুক্রবার বাদে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দলসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন অংশ নেবে। এরপর বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের বাইরে অন্য কোনো একটি দিনে হবে সমাপনী অনুষ্ঠান। এ কর্মশালার চতুর্থ দিনে যুবদল এবং কৃষক দলের নেতারা অংশ নেন।
নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘দল হিসেবে বিএনপির কাছে মানুষ নির্দিষ্ট পরিকল্পনা চায়। ক্ষমতায় গেলে তারা কী করবে জানতে চায়। আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছি। এমন পরিকল্পনা আর কোনো দল করেনি। এখন আর বসে থাকলে চলবে না। মানুষকে এসব পরিকল্পনার কথা জানাতে হবে। পরিকল্পনার যদি ৪০ শতাংশ বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে দেশের মানুষের শুভ পরিবর্তন হবে।’
দেশ রক্ষার জন্য আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে জেতাতেই হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে ধানের শীষকে জেতাতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। ধানের শীষকে জেতানোর মাধ্যমে জণগণের পক্ষের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। ধানের শীষকে জেতানোর মাধ্যমে দেশকে রক্ষা করতে হবে। নো কম্প্রোমাইজ।’
নেতা–কর্মীদের মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা এখনই মাঠে নেমে পড়ুন। মাঠে না নামলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন, প্রত্যেকবার দেশকে রক্ষা করেছে বিএনপি। এখন আবার দায়িত্ব কাঁধে এসে পড়েছে। মানুষের কাছে যান।’
মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে তারেক রহমান বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচারের সময় রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের মানবাধিকার হরণ করা হয়েছিল। দল হিসেবে বিএনপি সবচেয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আগামীতেও ভিন্নমতাদর্শের মানুষ যাতে নিরাপদে মতামত জানাতে পারে, সেই ব্যবস্থা করবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘যার যার মতাদর্শ অনুযায়ী কথা বলবে। সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। আগামী দিনে বিএনপি চায় মতামত প্রকাশের জন্য আবরার ফাহাদের মতো যেন হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয়।’
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান (সোহেল)।