নির্বাচন না হওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে: আমীর খসরু
Published: 12th, December 2025 GMT
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন না হওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, সব ষড়যন্ত্র জনগণ প্রতিহত করবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত সংসদ হবে। এটি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের মেহেদীবাগ এলাকায় নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-১০ আসনের শুলকবহর ও ৪২ নম্বর সাংগঠনিক ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। তারেক রহমানের রাজনীতি এ দেশের মাটি ও মানুষের জন্য। জনগণের প্রত্যাশা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন তিনি।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই নির্বাচন বাংলাদেশের, গণতন্ত্রের বাঁচা–মরার সংগ্রাম। জনগণ ভোট দিলে সরকার গঠন করে প্রথম দিন থেকে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করবে বিএনপি। হাতে সময় নেই, মানুষের ধৈর্য নেই। পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে হবে। এক কোটি লোকের চাকরি দিতে হবে ১৮ মাসে। এই ওয়াদা পূরণ করতে হলে বিনা মূল্য প্রাথমিক পাঁচটি সেবা দিতে হবে। নারীদের ক্ষমতায়ন করতে হবে পরিবার কার্ডের মাধ্যমে। কৃষকের ক্ষমতায়ন করবে কৃষক কার্ড।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের পথ থেকে বিএনপি কখনো বিচ্যুত হয়নি। আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল, শহীদ জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শ তারেক রহমানের আদর্শের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল, সদস্য মামুনুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আশরাফ চৌধুরী, গোলাম কাদের চৌধুরী, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জমির উদ্দিন, শুলকবহর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক শামসুল আলম, ৪২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক শায়েস্তা উল্লা চৌধুরী প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন যত সহজ ভাবা হচ্ছে, তত সহজ হবে না: তারেক রহমান
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যত সহজ ভাবা হচ্ছে, নির্বাচন তত সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এক বছর, সোয়া বছর আগে যে কথাটি বলেছিলাম যে, সামনের নির্বাচন যা ভাবছেন তা নয়। আজকে আস্তে আস্তে আমার কথাটা প্রমাণিত হচ্ছে। এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এ দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। এটা একমাত্র বাঁচাতে পারে গণতন্ত্র এবং সেই গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করতে পারেন আপনারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রত্যেকটি মানুষ।’
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর হাজারের বেশি নেতা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির পরিকল্পনাগুলো জানাতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই মানুষ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় সরকার হবে না। যারা বিএনপিকে ভোট দিয়েছে, তাদের পাশাপাশি যারা ভোট দেয়নি তাদের জন্যও কাজ করতে হবে। নির্দিষ্ট কারও জন্য কাজ করা যাবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি স্বপ্ন দেখাচ্ছে না, বিএনপি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচনের বেশি সময় নেই। দল যার হাতে ধানের শীষ দিয়েছে, তাদের পক্ষে থাকতে হবে। প্রার্থী আসবে, প্রার্থী পরিবর্তন হবে, তবে দল ও আদর্শ রয়ে যাবে।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলো মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে দাবি করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা বলার দরকার নেই। বাস্তবভিত্তিক যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেটা জনগণের কাছে পৌঁছে দিলেই হবে। এই কাজ করা কঠিন। তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে সেটি করা সম্ভব হবে।
উপস্থিত বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম, কিছু ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে তাদের কথা বলছেন। তারা যদি বলতে পারে, আপনি কেন বলতে পারবেন না? বললে সবাই বলবে, না বললে কেউ বলতে পারবে না। আপনি আপনার এলাকায় সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বললে সবার বলার অধিকার আছে। আর যদি কোথাও নিয়ম হয়ে থাকে, বলবে না। তাহলে সেই নিয়ম সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। কোনো বিশেষ কারও জন্য হবে আর কারও জন্য হবে না, এটা তো হতে পারে না।'
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান (সোহেল)। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম খান বাবুল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, কর্মসংস্থানসহ আটটি বিষয়ে কীভাবে কাজ করবে—এ নিয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জন্য ধারাবাহিক কর্মশালা বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এই অনুষ্ঠান শুক্রবার বাদে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দলসহ অন্য সহযোগী সংগঠন অংশ নেবে। এরপর বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের বাইরে অন্য কোনো একটি দিনে হবে সমাপনী অনুষ্ঠান।