কেশবপুরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নাগরিক সনদে জাল সইয়ের অভিযোগ, নোটিশ
Published: 27th, October 2025 GMT
যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে নাগরিক সনদে জাল সই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে। প্রশাসকের সই নকল করে ওই সদস্য নিজেই সনদ ইস্যু করেছেন। ভুক্তভোগীর অভিযোগের পর ওই ইউপি সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আসাদুজ্জামান শিমুল। তিনি সাগরদাঁড়ি ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
ভুক্তভোগী জুয়েলের ভাষ্য, তিনি সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। নাগরিক সনদ নেওয়ার জন্য ২০ অক্টোবর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত আবেদন করেন। দ্রুত সনদটি পাওয়ার জন্য তিনি ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান শিমুলের কাছে যান। প্রশাসকের সই লাগবে না জানিয়ে ওই সনদে জাল সই করেন আসাদুজ্জামান শিমুল। সইয়ের নিচে প্রশাসকের নাম ও পূর্ণ পদবি লেখা আছে।
ওই সনদ বাড়িতে নেওয়ার পর জুয়েলের স্ত্রী মুসলিমার সন্দেহ হয়। তিনি সাগরদাঁড়ি ইউপির প্রশাসক ও উপজেলা প্রাথমিক রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর সাইদুল হকের কাছে যান। সনদের জন্য মুসলিমাকে আবার আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে ওই ইউপি সদস্যের সই করা সার্টিফিকেটটি রেখে দেন সাইদুল হক। পরে ইউপির প্রশাসক ও ইউএনওর কাছে জাল সই দেওয়ার বিষয়ে আসাদুজ্জামান শিমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মুসলিমা।
মুসলিমার ভাষ্য, তাঁর স্বামী জুয়েল বিদেশে যাবেন। তাই একটি নাগরিক সনদের দরকার ছিল। প্রশাসকের কাছে সই না নিয়ে ওই ইউপি সদস্য নিজেই সই দিয়ে বলেন, এতেই কাজ হবে।
এ বিষয়ে সাগরদাঁড়ি ইউপির প্রশাসক সাইদুল হক বলেন, প্রশাসক ব্যতীত কাউকে নাগরিক সনদ দেওয়ার কোনো আইনগত অধিকার কারও নেই। ওই ইউপি সদস্য জাল সই করে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, এটি বেআইনি হয়েছে। এর আগে তিনি আরও অনেককেই এমন জাল সই দিয়ে সার্টিফিকেট দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন আসাদুজ্জামান শিমুল। তিনি বলেন, জুয়েল নামের ওই ব্যক্তিকে নাগরিক সনদ দেওয়াটা ভুল হয়েছে। শিগগিরই তিনি নোটিশের জবাব দেবেন।
লিখিত জবাব পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কেশবপুরের ইউএনও রেকসোনা খাতুন বলেন, ওই ইউপি সদস্যকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আস দ জ জ ম ন শ ম ল জ ল সই স গরদ সদস য ইউপ র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।
১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।