যানজটমুক্ত কুমিল্লার দাবিতে বিক্ষোভ, তিন দিনের মধ্যে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবি
Published: 27th, October 2025 GMT
কুমিল্লা নগরের বাসিন্দাদের কাছে যানজট বর্তমানে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত যানজটে থমকে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা; সড়কে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা। এমন পরিস্থিতি যানজটমুক্ত কুমিল্লা চেয়ে নগরে বিক্ষোভ–সমাবেশ হয়েছে। এ সময় কুমিল্লা নগরের যানজট সমস্যা সমাধানে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। সমাবেশ থেকে বলা হয়েছে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করতে হবে। তা না হলে কুমিল্লার মানুষ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে ‘যানজট মুক্ত কুমিল্লা চাই’ এই ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে কুমিল্লা নগরে যানজট নিরসনে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কুমিল্লা মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান।
১০ দফা দাবি দাবির মধ্যে রয়েছে, কুমিল্লা নগরে সীমিতসংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিশকা এবং মিশুক চলতে পারবে এবং তাদের চিহ্নিত করতে নির্দিষ্ট পোশাক ও আইডি কার্ড প্রদান করতে হবে। প্রত্যেক সড়কের দূরত্বের ভাড়া প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারণ করে চার্ট আকারে প্রকাশ করতে হবে। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং প্রয়োজনে ট্রাফিক সহায়তাকারী নিয়োগ প্রদান করতে হবে। অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত দখল স্থায়ীভাবে অপসারণ করতে প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার ব্যতীত কেউ অটোরিকশা বা মিশুকের মালিক হতে পারবে না এবং একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ একটি অটোরিকশা বা মিশুকের মালিক হতে পারবেন। নির্ধারিত অটোরিকশা এবং মিশুক নিদিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করাবে; প্রয়োজনে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। চিহ্নিত পোশাক পরা অটোরিকশা এবং মিশুক চালকদের প্রশাসন কর্তৃক অহেতুক ভোগান্তি করা যাবে না। চুরি ও ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের টহল টিম বাড়াতে হবে। শহরের যেসব সড়কের অবস্থা বেহাল, সেসব সড়ক দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করাতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে মাঠপর্যায়ে দাবিগুলোর স্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন দৃশ্যমান না হলে বা প্রশাসনের দেওয়া যেকোনো অঙ্গীকার ভঙ্গ হলে সচেতন সমাজ যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। কঠোর পদক্ষেপের কারণে নগরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে এর দায়ভার সম্পূর্ণরূপে কুমিল্লার প্রশাসনকেই নিতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে কুমিল্লা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বিএনপি নেতা মোজাহিদ চৌধুরী জানান, কুমিল্লা নগরে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যানজট এখন কুমিল্লার মানুষের নিত্যদিনের দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, রোগী ও সাধারণ নাগরিকেরা প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে কুমিল্লার মানুষ এখন রাস্তায় নেমে এসেছে। অবিলম্বে যানজট সমস্যার সমাধান করতে হবে। অবস্থা দেখে মনে হয় না এই নগরে মানুষের দুর্ভোগ দেখার মতো কেউ আছেন।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক বলেন, কুমিল্লা নগরে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও মিশুকের অবাধ চলাচল, অবৈধ পার্কিং এবং বেহাল রাস্তাঘাটের কারণে যানজটের সমস্যা দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। দীর্ঘদিন ধরে নগরের সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগের তেমন কোনো চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। যানজট আর ফুটপাত দখলে কুমিল্লার মানুষ এখন অতিষ্ঠ। মানুষের হাঁটাচলার জায়গাটুকুও নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য নজট সমস য নগর র য ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
যানজটমুক্ত কুমিল্লার দাবিতে বিক্ষোভ, তিন দিনের মধ্যে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবি
কুমিল্লা নগরের বাসিন্দাদের কাছে যানজট বর্তমানে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত যানজটে থমকে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা; সড়কে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা। এমন পরিস্থিতি যানজটমুক্ত কুমিল্লা চেয়ে নগরে বিক্ষোভ–সমাবেশ হয়েছে। এ সময় কুমিল্লা নগরের যানজট সমস্যা সমাধানে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। সমাবেশ থেকে বলা হয়েছে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করতে হবে। তা না হলে কুমিল্লার মানুষ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে ‘যানজট মুক্ত কুমিল্লা চাই’ এই ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে কুমিল্লা নগরে যানজট নিরসনে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কুমিল্লা মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান।
১০ দফা দাবি দাবির মধ্যে রয়েছে, কুমিল্লা নগরে সীমিতসংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিশকা এবং মিশুক চলতে পারবে এবং তাদের চিহ্নিত করতে নির্দিষ্ট পোশাক ও আইডি কার্ড প্রদান করতে হবে। প্রত্যেক সড়কের দূরত্বের ভাড়া প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারণ করে চার্ট আকারে প্রকাশ করতে হবে। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং প্রয়োজনে ট্রাফিক সহায়তাকারী নিয়োগ প্রদান করতে হবে। অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত দখল স্থায়ীভাবে অপসারণ করতে প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার ব্যতীত কেউ অটোরিকশা বা মিশুকের মালিক হতে পারবে না এবং একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ একটি অটোরিকশা বা মিশুকের মালিক হতে পারবেন। নির্ধারিত অটোরিকশা এবং মিশুক নিদিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করাবে; প্রয়োজনে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। চিহ্নিত পোশাক পরা অটোরিকশা এবং মিশুক চালকদের প্রশাসন কর্তৃক অহেতুক ভোগান্তি করা যাবে না। চুরি ও ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের টহল টিম বাড়াতে হবে। শহরের যেসব সড়কের অবস্থা বেহাল, সেসব সড়ক দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করাতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে মাঠপর্যায়ে দাবিগুলোর স্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন দৃশ্যমান না হলে বা প্রশাসনের দেওয়া যেকোনো অঙ্গীকার ভঙ্গ হলে সচেতন সমাজ যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। কঠোর পদক্ষেপের কারণে নগরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে এর দায়ভার সম্পূর্ণরূপে কুমিল্লার প্রশাসনকেই নিতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে কুমিল্লা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বিএনপি নেতা মোজাহিদ চৌধুরী জানান, কুমিল্লা নগরে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যানজট এখন কুমিল্লার মানুষের নিত্যদিনের দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, রোগী ও সাধারণ নাগরিকেরা প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে কুমিল্লার মানুষ এখন রাস্তায় নেমে এসেছে। অবিলম্বে যানজট সমস্যার সমাধান করতে হবে। অবস্থা দেখে মনে হয় না এই নগরে মানুষের দুর্ভোগ দেখার মতো কেউ আছেন।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক বলেন, কুমিল্লা নগরে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও মিশুকের অবাধ চলাচল, অবৈধ পার্কিং এবং বেহাল রাস্তাঘাটের কারণে যানজটের সমস্যা দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। দীর্ঘদিন ধরে নগরের সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগের তেমন কোনো চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। যানজট আর ফুটপাত দখলে কুমিল্লার মানুষ এখন অতিষ্ঠ। মানুষের হাঁটাচলার জায়গাটুকুও নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যানজট সমস্যা সমাধানে নগরবাসীর পক্ষে ১০ দফা দাবির একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। আমি নিজেও দাবিগুলোর সঙ্গে একমত। এরই মধ্যে আমরা নগরের যানজট সমস্যা সমাধানে বেশকিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে আরও আট থেকে ১০ দিন সময় লাগবে। নগরের যানজট দূর করতে আমরা সর্বোচ্চ কঠোর হবো। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো নগরবাসীর স্বস্তি ফেরানো।’