ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলেও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো সমস্যা নেই উল্লেখ করে দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, ‘কিন্তু সরকারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ যেসব দায়িত্ব রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়ন না করলেই নয়, যেমন জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়া, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রদান করা, জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি বড় অংশ যেন আমরা কার্যকর দেখতে পারি। এ বিষয়গুলো দেখানো এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীনতা, স্বকীয়তা বজায় রেখে নিরপেক্ষ থাকলে এবং তা প্রমাণ করতে পারলে নির্বাচনে এনসিপির সমস্যা নেই। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক পরিকল্পনা করে, আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষ তাদের ওপর আস্থা রাখবে না।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে এনসিপির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন সারজিস আলম। জেলা শহরে সিটি ড্রিম কনভেনশন সেন্টারে এই সভার আয়োজন করে এনসিপির জেলা কমিটি।

সারজিস আলম বলেন, জুলাই সনদে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা সংস্কার-সংশ্লিষ্ট বিষয়। এই সংস্কার-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। যে সংস্কারগুলো দীর্ঘমেয়াদি, তা আগামী সংসদ নির্বাচনে যাঁরা নির্বাচিত হবেন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে যারা স্বাক্ষর করেছে, তাদের প্রতিশ্রতি হবে ওই সনদে থাকা প্রতিটি দাবি ঐক্যবদ্ধভাবে আগামীর মেয়াদকালীন তারা বাস্তবায়ন করবে।

এককভাবে জামায়াতে ইসলামী কিংবা বিএনপি ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী লীগবিরোধী লড়াইকে শক্তিশালীভাবে চালিয়ে যেতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন সারজিস আলম। ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী লীগবিরোধী লড়াইয়ে এনসিপি এবং তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি আবশ্যক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, দুর্নীতিবিরোধী আগামীর বাংলাদেশে জনআকাঙ্ক্ষার যে লড়াই, সেই লড়াইও সংসদে এই তরুণ প্রজন্ম ও এনসিপির প্রতিনিধি আবশ্যক। সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে প্রতিটি জেলায় সাংগঠনিক সমন্বয় সভা করছি। আমরা মনে করি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকবে এবং শক্তিশালী ভিত্তি নিয়ে আগামী দিনে সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে।’

বৃহৎ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এনসিপি জোট করবে কি না, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি উল্লেখ করে সারজিস জানান, এনসিপি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইলেক্ট্ররাল অ্যালায়েন্স (নির্বাচনী জোট) করবে কি না। যদি করে অবশ্যই এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে করবে, তা হচ্ছে যারা আগামীর বাংলাদেশে জুলাই সনদের প্রতিটি সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করবে, যারা বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করবে, যারা শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য কাজ করবে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগবিরোধী অবস্থান ও ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী অবস্থান থাকলে এনসিপি তাদের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করতে পারে।

আরও পড়ুনমার্কা হিসেবে শাপলা প্রতীকই চাই: সারজিস৪ ঘণ্টা আগে

শাপলা প্রতীক না পাওয়ার বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন শাপলা না পাওয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি দেখাতে পারেননি। নির্বাচন কমিশন যদি তাদের মনমতো স্বেচ্ছাচারী আচরণ করে থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশন আগামীর বাংলাদেশে সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না। এই নির্বাচন কমিশনের ওপর বাংলাদেশের জন্যগণের আস্থা থাকবে না, এনসিপিরও আস্থা থাকবে না। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেই আগামীর নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।

আরও পড়ুনএনসিপি ক্ষমতায় না গেলেও ‘পোষা’ বিরোধী দল হবে না: সারজিস আলম২৪ অক্টোবর ২০২৫

দলীয় কার্যক্রম তুলে ধরে সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপিসহ দলের অন্যান্য যেসব সংগঠন আছে তা আমরা মনে করি শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তি প্রয়োজন। আমরা প্রতিটি জেলায় জুলাই পদযাত্রা করেছিলাম, এখন আমরা প্রতিটি জেলায় সাংগঠনিক সমন্বয় সভা করছি। আগামীর বাংলাদেশ আমরা এনসিপিকে একটি শক্তিশালী দল হিসেবে দেখতে চাই। আমরা মনে করি, আগামী বাংলাদেশ এনসিপি একটি শক্তিশালী দল হিসেবে জাতীয় সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী লীগের প্রশ্নে এনসিপি আপসহীনভাবে পূর্বের মতো আগামী দিনেও লড়াই করে যাবে।’

মানিকগঞ্জ এনসিপির জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী জাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সমন্বয়কারী এ এইচ এম মাহফুজের সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার। সভায় জেলা এনসিপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনতালিকায় না থাকায় এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া হয়নি: সিইসি১২ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ আগ ম র ব এনস প র আওয় ম গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘কাঠগোলাপ’ নিষিদ্ধ ঘোষণা

‘কাঠগোলাপ’ সিনেমার প্রদর্শনী নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। গত বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিনেমাটি সার্টিফিকেশনবিহীন বিবেচিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ড্রিমল্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন তরুণ নির্মাতা সাজ্জাদ খান। ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সিনেমাটি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে জমা দেন প্রযোজক ফরমান আলী।

প্রায় দুই বছর সিনেমাটি সার্টিফিকেশন বোর্ডে আটকে ছিল। পরে সিনেমাটির ছাড়পত্র পেতে আপিল আবেদন করেন প্রযোজক।

সিনেমার শুটিংয়ের দৃশ্য

সম্পর্কিত নিবন্ধ