কমেছে সবজির দাম, বেড়েছে মাছের দাম
Published: 12th, December 2025 GMT
বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কমছে সবজির দাম। হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া পেঁয়াজের দামও আমদানির খবরে কমতে শুরু করেছে। বিক্রেতারা বলছে নদীর মাছের সরবরাহ কম থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বেড়েছে মাছের দাম।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও নিউমার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সপ্তাহে সবজি বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমেছে।
আরো পড়ুন:
দুই কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
আবারো শেয়ার কিনবেন সালভো কেমিক্যালের এমডি
এখন বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থাকে ৭০ টাকা, সিম ৫০ টাকা, মূলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, দেশি শশা ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর (দেশি) ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, কাঁচমরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, প্রতি পিস জালি কুমড়া ও লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং জলপাই ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং আমদানির খবরে দাম কমেছে পুরাতন পেঁয়াজের। এ সপ্তাহে দেশি পুরাতন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা। নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। রসুন (দেশি) ১০০ টাকা ও আদা ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছের দাম
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বেড়েছে চাষের মাছের দাম। নদীর মাছের দাম ও বাড়তি রয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রায় চাষের মাছে কেজি প্রতি গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এ সপ্তাহে বাজারে মাঝারি আকারের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙ্গাস আকার অনুযায়ী কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি আকারের কৈ মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ৪০০ গ্রাম ওজনের পদ্মার ইলিশ ১২০০ টাকা এবং চট্টগ্রামের ইলিশ ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্বাভাবিক হয়েছে মুরগির দাম
গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহে ও বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।
যা বলছে ক্রেতা বিক্রেতারা
রাজধানীর নিউমার্কেটের বনলতা কাঁচাবাজারের কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী রুবেল মজুমদার রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “শীতকালীন সবজির দাম ঠিক আছে। কিন্তু অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি। আমাদের মত যারা নির্ধারিত বেতনে চাকরি করি তাদের জন্য চাহিদা মতো মাছ মাংস খাওয়া কষ্টকর। মুদ্রাস্ফীতির যাঁকাতলে পড়ে জীবন শেষ। বাসা ভাড়া দেওয়ার পর বাকি মাস চলার মতো অবস্থা থাকে না। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা সমন্বয় করেছে সরকার। কিন্তু বেসরকারি খাতে কোনো সমন্বয় নেই।”
কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী টিপু মিয়া বলেন, “গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে চাষের মাছের দাম বেড়েছে। মাছের জাত ও আকার অনুসারে দাম বেড়েছে। গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ সপ্তাহে নদীর মাছের দাম বাড়তি।”
ঢাকা/রায়হান/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০০ ট ক সরবর হ ৩০ ট ক ৮০ ট ক ৬০ ট ক ৪০ ট ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার বসার দাবি উচ্ছেদ হওয়া হকারদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা থেকে সম্প্রতি উচ্ছেদের শিকার হকাররা আবারও আগের জায়গায় বসার দাবি জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগে বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন ভবনের ২ নম্বর কক্ষে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ ও ভুক্তভোগী হকারদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মাশরুমচাষি ও ক্যাম্পাসে হকারদের কাছে মাশরুম সরবরাহকারী রুবি আক্তার। সঞ্চালনা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকা জেলার আহ্বায়ক শবনম হাফিজ। এতে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য ইকবাল কবির ও আঁখি মনি এবং ভাসমান উদ্যোক্তা নুরুজ্জামান কমলসহ উচ্ছেদের শিকার কয়েকজন হকার।
মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শবনম হাফিজ। তিনি বলেন, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক হকার কাজ করতেন। গত অক্টোবরে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগ এনে ডাকসুর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এতে অসংখ্য হকার বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।
শবনম হাফিজ আরও বলেন, এই মানুষগুলোকে উচ্ছেদের নামে হয়রানি করা হলো, জিনিসপত্র নষ্ট করা হলো। এই ক্ষতির জবাবদিহি চাই, ক্ষতিপূরণ চাই এবং তাঁদের যেন সসম্মানে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, সেটি চাই। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যেন তাঁদের পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেয়।
আয়োজকেরা বলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ও ভুক্তভোগী হকাররা উচ্ছেদের পর নিজেদের কার কী পরিস্থিতি ও কীভাবে তাঁদের বর্তমান জীবন চলছে, তা জানতে একটি জরিপ পরিচালনা করছেন। এর আওতায় এ পর্যন্ত তাঁরা ৫০ জনের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছেন। এর মধ্য দিয়ে যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে, তা তুলে ধরার লক্ষ্যেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে রুবি আক্তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় স্বামীর গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাহিদার ওপরই নির্ভর ছিল তাঁদের সংসার। হকার উচ্ছেদের পর সেই বাজার প্রায় হারিয়ে গেছে।
রুবি আক্তার বলেন, ‘একজন হকারের সঙ্গে আরও অনেকের আয় জড়িয়ে থাকে—সরবরাহকারী, পানিওয়ালা ও সবজিওয়ালা। একজনের আয় বন্ধ হলে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা চাই, হকারদের কাজের জায়গা আবারও ফিরিয়ে দেওয়া হোক, বসতে দেওয়া হোক আগের জায়গায়। তাতে আরও অনেক পরিবার বেঁচে যাবে।’
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, হকার উচ্ছেদ ডাকসুর দায়িত্ব নয়। এটি মানবিক বা ন্যায়সংগত কোনো পদক্ষেপ নয়। হকারদের সম্মানজনক ব্যবসার ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা করা সম্ভব।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা অন্যায় ও অমানবিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও কয়েকজন হকার নিজেদের বর্তমান সংকটের কথা জানান।
চার দফা সুপারিশঅনুষ্ঠানে আয়োজকেরা চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো উচ্ছেদ করা হকারদের আগের কাজের জায়গায় ফেরার সুযোগ দেওয়া; কিছুদিন পরপর উচ্ছেদের নামে হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করা এবং যাঁরা এই নির্যাতন করেছেন, তাঁদের বিচার করা; প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা সিটি করপোরেশন বা নিজেদের সমবায় বা ট্রেড ইউনিয়নের পরিচয়পত্র ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা এবং কয়েক দফায় ভাসমান উদ্যোক্তাদের হাঁড়িপাতিল ও অন্যান্য যে মালামাল প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে গেছে, তা দ্রুত ফেরত দিতে হবে।