ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের কথা নিশ্চিত করলেন মোদি, কী কথা হলো
Published: 12th, December 2025 GMT
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কিছু প্রধান রপ্তানিপণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে। সেই শুল্ক থেকে ছাড় পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। এর মধ্যেই দুই নেতার এ ফোনালাপ হলো।
মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।’
হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর আরোপিত শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার পর থেকে মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে এ নিয়ে তিনবার কথা হয়েছে। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের টেক্সটাইল, রাসায়নিক এবং চিংড়িসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়েছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে নিজের কথোপকথনকে মোদি ‘উষ্ণ ও আন্তরিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য দুই দেশ একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর আরোপিত শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার পর থেকে মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে এ নিয়ে তিনবার কথা হয়েছে। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের টেক্সটাইল, রাসায়নিক, চিংড়িসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়েছে।গত জুলাইয়ের শেষ দিকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। কারণ, তখন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের জন্য নিজেদের বাজার খুলে দিতে ভারত অস্বীকৃতি জানায়। তা ছাড়া ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ভূমিকার কথা স্বীকার করতেও রাজি হয়নি নয়াদিল্লি।
দুই দেশের মধ্যে আলোচনা এখনো চলছে। এর মধ্যে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রসনেফট এবং আরেক প্রতিষ্ঠান লুকঅয়েলের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর চাপের মুখে ভারতের তেল শোধনাগারগুলো রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাতে শুরু করেছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ওই নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মস্কোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বাড়ানোরই একটি কৌশল।
চলতি সপ্তাহে দুই দিনের সফরে নয়াদিল্লি গিয়ে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের উপবাণিজ্য প্রতিনিধি রিক সুইটজার। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ওয়াশিংটন যেসব শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেছে, সেখান থেকে ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করছে ভারত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর বৈঠকগুলো নিয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেনি।
আমরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।নরেন্দ্র মোদি, ভারতের প্রধানমন্ত্রীনাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, বছর শেষ হওয়ার আগেই কোনো বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং বর্তমানে কিং অ্যান্ড স্পলডিং নামের আইনি প্রতিষ্ঠানের সদস্য রায়ান মাজেরাস বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের গুরুত্ব বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি হবে বলেই তিনি আশা করছেন।
আরও পড়ুন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় চালের ‘ডাম্পিং’ দেখে নেবেন ট্রাম্প০৯ ডিসেম্বর ২০২৫গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে গিয়েছিলেন। তিনি ভারতকে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং রাশিয়ার জ্বালানি না কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নয়াদিল্লিকে যে চাপ দিচ্ছে, সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন।
গত জুলাইয়ের শেষ দিকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। কারণ, তখন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের জন্য নিজেদের বাজার খুলে দিতে ভারত অস্বীকৃতি জানায়। তা ছাড়া ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ভূমিকার কথা স্বীকার করতেও রাজি হয়নি নয়াদিল্লি।ভারত সরকারের তথ্য বলছে, গত অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্য রপ্তানির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কমে ৬৩১ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছর ৬৯১ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। তবে গত সেপ্টেম্বর মাসে ৫৪৭ কোটি ডলারের তুলনায় অক্টোবরে রপ্তানি বেশি ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক ও শুল্ক-বহির্ভূত বাধাগুলো কমিয়ে আনুক ও সয়াবিনসহ মার্কিন কৃষিপণ্যগুলোর জন্য বাজার খুলে দিক।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়া: সব পক্ষকে কেন হাতে রাখতে চায় ভারত০৮ ডিসেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য ক তর ষ ট র র কর মকর ত নয় দ ল ল র জন য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
শিবিরকে জড়িয়ে ছাত্রদল নেত্রীর পোস্ট, ইবি শিবিরের নিন্দা-প্রতিবাদ
ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা আলমের ফেসবুক পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবির।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) শাখা সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলীর যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের এই অবস্থান তুলে ধরা হয়।
আরো পড়ুন:
সেমিনার: ১৫ বছরে গুম শিবিরের ২৫৫ জন, সাতজন ফেরেননি এখনো
শিবির নেতা সাদিক ৪ দিন নিখোঁজ, পরিবারের উদ্বেগ
বিবৃতিতে তারা বলেন, “রাজধানীর তেজগাঁও কলেজে মাদকসেবনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দু'পক্ষের সংঘর্ষে একজন শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের নৃশংস ঘটনা আড়াল করতে এবং ক্যাম্পাসগুলোতে একের পর এক ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছাত্রদলের কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা শিবিরের ওপর দায় চাপানোর অপরাজনীতি করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা আলম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজিদ হত্যাকাণ্ড ইস্যুর দায় শিবিরের ওপর চাপিয়ে তেজগাঁও কলেজে শিক্ষার্থী খুনের ঘটনা আড়াল করতে চাচ্ছেন।”
তারা আরো বলেন, “গত ১৭ জুলাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শুরু থেকেই বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সাজিদের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কিছু মহল ও ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের উপর এ ঘটনার দায় চাপিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে তদন্ত চলাকালীন সময়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেত্রী মানসুরা আলমের এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ ছাত্রদলের ঘৃণ্য লাশের রাজনীতি ও রাজনৈতিক অপপ্রচারেরই একটি অংশ।”
বিবৃতিতে ছাত্রদল নেত্রীর এমন অসত্য বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করে সুস্থ ও শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্ররাজনীতির পথে ফিরে আসার আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার শিক্ষার্থী সাজিদকে শিবির মেরেছে দাবি করে এক ফেসবুক পোস্ট দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম।
তবে এ বিষয়ে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা জানান, যারা নির্দিষ্ট করে এসব বলছে বা লিখছে, তা তাদের একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। এমন তথ্য পেলে এতদিনে চিহ্নিত করে জড়িতদেরকে গ্রেপ্তার করা হতো
ঢাকা/তানিম/রাসেল