সোনালী ব্যাংক দেশের বৃহত্তম ব্যাংক। একই সঙ্গে দেশের অন্যতম রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকও এটি। এই ব্যাংকের বিশেষ একটি দিক হলো তারা একসময় বিভিন্ন জনমুখী সঞ্চয় প্রকল্প প্রবর্তন করে। সমাজের সীমিত আয়ের মানুষের কথা ভেবে মাসিক মুনাফা প্রকল্প, মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প, দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমানত প্রকল্প—এমন বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয় প্রকল্প প্রবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এই ব্যাংক। সেই ধারা এখনো অব্যাহত।

একসময় যখন বেসরকারি ব্যাংকের এত বাড়বাড়ন্ত ছিল না, তখন মানুষের ভরসা ছিল মূলত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। এখন সেই বাস্তবতা নেই। বেসরকারি খাতে অনেক ব্যাংক চলে এসেছে। তাদের মধ্যে অনেক ব্যাংক এখন গ্রামেও চলে গেছে। তারপরও সোনালীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ওপর মধ্যবিত্তের নির্ভরতা এখনো আছে।

বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের মোট ১৫ ধরনের সঞ্চয় প্রকল্প আছে। ব্যাংকটির ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, এসব সঞ্চয় প্রকল্পের সর্বোচ্চ সুদহার ১০ শতাংশ ও সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ। মেয়াদ ৩ বছর থেকে শুরু করে ১৫ বছর পর্যন্ত। দেখে নেওয়া যাক, সোনালী ব্যাংকের কী ধরনের সঞ্চয় প্রকল্প আছে।

১.

সোনালী সঞ্চয় স্কিম

এই সঞ্চয় প্রকল্পের সুদহার ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা চক্রবৃদ্ধি হারে আরোপ হয়। এই প্রকল্পের ন্যূনতম মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। এর মেয়াদ ৫ বছর।

২. শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম

এই প্রকল্পের সুদহার ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ (চক্রবৃদ্ধি)। মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা দেওয়ার সুযোগ আছে।

৩. চিকিৎসা সঞ্চয় স্কিম

এই সঞ্চয় পরিকল্পনার সুদহার ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ (চক্রবৃদ্ধি)। মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা।

৪. পল্লি সঞ্চয় স্কিম

এই সঞ্চয় পরিকল্পনার সুদহার ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ (সরল হার)। মাসিক কিস্তির পরিমাণ ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা।

৫. বিবাহ সঞ্চয় স্কিম

এই সঞ্চয় পরিকল্পনার সুদহার ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ (চক্রবৃদ্ধি)। মাসিক কিস্তির পরিমাণ ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০, ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার, ৪ হাজার, ৫ হাজার, ৬ হাজার, ৭ হাজার, ৮ হাজার, ৯ হাজার ও ১০ হাজার টাকা।

৬. অনিবাসী আমানত স্কিম

এই সঞ্চয় পরিকল্পনার সুদহার ৭ শতাংশ (সরল হার)। মাসিক কিস্তির পরিমাণ ৫ হাজার, ৬ হাজার, ৭ হাজার, ৮ হাজার, ৯ হাজার ১০ হাজার, ১১ হাজার, ১২ হাজার, ১৩ হাজার, ১৪ হাজার ও ১৫ হাজার টাকা।

৭. সোনালী ব্যাংক অবসর সঞ্চয় স্কিম

এই সঞ্চয় পরিকল্পনার সুদহার ১০ শতাংশ। এর মেয়াদ ৩ থেকে ১৫ বছর।

৮. সোনালী ব্যাংক মিলিয়নিয়ার স্কিম

এই সঞ্চয় পরিকল্পনার সুদহার ৬ থেকে ৭ শতাংশ (চক্রবৃদ্ধি)। পরিকল্পনার মেয়াদ ৪ থেকে ৮ বছর হলে সুদহার ৬ শতাংশ; ৯ থেকে ১৪ বছর হলে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ; মেয়াদ ১৫ থেকে ২০ বছর হলে সুদহার ৭ শতাংশ।

৯. স্বাধীন সঞ্চয় স্কিম

সঞ্চয়ী হিসাবে বিদ্যমান মুনাফা হারের অতিরিক্ত ৩ শতাংশ সুদ দেওয়া হয় এই সঞ্চয় পরিকল্পনায়। প্রাথমিক জমা ১০০০ টাকা। মেয়াদ ৫ অথবা ১০ বছর।

১০. অনন্যা সোনালী সঞ্চয় স্কিম

এই সঞ্চয় পরিকল্পনার মেয়াদ ৩ বছর হলে সুদহার ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। মেয়াদ ৫ বছর হলে সুদহার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। মাসিক কিস্তি ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার, ৪ হাজার, ৫ হাজার, ৬ হাজার, ৭ হাজার, ৮ হাজার, ৯ হাজার ও ১০ হাজার টাকা।

১১. সোনালী লাখপতি সঞ্চয় স্কিম

দুই বছরের মেয়াদে সুদহার ৫ শতাংশ (বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি)। ৩ বছরের মেয়াদে সুদহার ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ (বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি) মাসিক কিস্তি ৪ হাজার ও ২ হাজার ৬০০ টাকা।

১২. সোনালী মাসিক মুনাফা সঞ্চয় প্রকল্প

এই প্রকল্পের সুদহার ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ (সরল মুনাফা)। এক লাখ টাকা এবং এর গুণিতক হিসেবে যেকোনো অঙ্ক রাখা যায়।

১৩. সোনালী প্রবাসী মাসিক মুনাফা প্রকল্প

সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা পর্যন্ত রাখা যায়। ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বাংলাদেশি যাঁরা বিদেশে কর্মরত বা বিদেশে অবস্থান করছেন, তাঁরাই এই আমানত হিসাবে খুলতে পারবেন। এই প্রকল্পের মেয়াদ তিন বছর। এই প্রকল্পের সুদহার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ সরল মুনাফা।

১৪. সোনালী বিশেষ সঞ্চয় প্রকল্প

এক লাখ টাকা অথবা এর গুণিতক যেকোনো অঙ্ক রাখা যায়। ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বাংলাদেশি যাঁরা বিদেশে কর্মরত/বিদেশে অবস্থান করছেন, তাঁরাই এই আমানত হিসাব খুলতে পারবেন। এই প্রকল্পের মেয়াদ তিন বছর।

১৫. সোনালী প্রবাসী বন্ধন প্রকল্প

১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী যেকোনো বাংলাদেশি যাঁরা বিদেশে কর্মরত বা বিদেশে অবস্থান করছেন, তাঁরা এই আমানত হিসাব খুলতে পারবেন। এই প্রকল্পের মেয়াদ ৩, ৫ ও ১০ বছর। ৩ বছর মেয়াদের ক্ষেত্রে সুদহার ৯ শতাংশ (বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি মুনাফা); ৫ বছর মেয়াদের ক্ষেত্রে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ (বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি মুনাফা); ১০ শতাংশ বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি মুনাফা ১০ বছর মেয়াদের জন্য।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই প রকল প র ১০ হ জ র ট ক বছর হল ৫ বছর ৮ বছর ৩ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে গরু আনতে গিয়ে যুবক নিখোঁজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে গরু আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন সোহেল রানা (২৮) নামের এক যুবক। গত রোববার রাতে সীমান্ত পার হওয়ার পর থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

নিখোঁজ সোহেল রানা শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের মইনুল ইসলামের ছেলে।

দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুর রহমান জানান, সোহেল রানা কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে রোববার রাতে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গরু আনতে যান। অন্যরা দেশে ফিরে এলেও সোহেল আর ফেরেননি। সোহেল রানার নিখোঁজের বিষয়টি প্রথমে গোপন রেখেছিল তাঁর পরিবার। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। আরেক ইউপি সদস্য মো. সুমির আজ মঙ্গলবার সকালে বলেন, এখন পর্যন্ত সোহেল রানার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল সোমবার রাতে বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে গরু আনতে গিয়ে এক বাংলাদেশি নিখোঁজের বিষয়টি স্থানীয় লোকজন আমাদের জানিয়েছেন। ঘটনাটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে বিএসএফ জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে কিছু জানে না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ