চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে আনিকা আক্তার (২৫) নামে দুই সন্তানের জননীকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যায় তাঁর মা ও ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাংলাবাজার এলাকার বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত আনিকা স্থানীয় সোনা মিয়া হাজীর বাড়ির নাজিম উদ্দিনের মেয়ে। তাঁর স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী মো.

মুরাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। এ দম্পতির ছয় বছর বয়সী এক ছেলে ও চার মাস বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। 

আনিকার মামা নাছির উদ্দিন বলেন, বিয়ের পর থেকেই বাবার বাড়িতে থাকতেন আনিকা। তাঁর কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো।

প্রতিনিয়ত ওই পরিবারে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত বলে জানান ইউপি সদস্য জহুরুল আলম। তিনি ও প্রতিবেশীরা জানান, রোববার সন্ধ্যা থেকেই আনিকার ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। এ কারণে তাদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে রবিনসহ আরেকজন প্রতিবেশী ঘরে ঢুকে দেখতে পান, আনিকার পুরো শরীর রক্তাক্ত; গলা কাটা ছাড়াও শরীরের নানা স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি তারা ভূজপুর থানায় জানান। পরে রাতে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ঘরে আনিকার মা রোখসানা আক্তার (৪৫) ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি।

হারুয়ালছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। মেয়েটিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মেয়ে ও তাঁর মায়ের সামান্য মানসিক সমস্যা আছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’

ভূজপুর থানার ওসি মো. মাহবুবুল হক বলেন, নিহত আনিকা ও তাঁর মা রোখসানা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। এ দু’জনের মধ্যে সবসময় ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। রোববার রাতেও ঝগড়া হচ্ছিল। এরই একপর্যায়ে আনিকাকে একাধিক ছুরিকাঘাত করেন মা। পরে মেয়েটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় আনিকার স্বামী মো. মুরাদ থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এতে আনিকার মা রোখসানা ও ছোট ভাই রাকিবুল হোসেনকে (২২) গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা

খুলনায় মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় মনোয়ার হোসেন টগর নামে এক যুবক এবং শনিবার (২ আগস্ট) ভোরে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে আল-আমিন সিকদার নামে এক ভ্যানচালক খুন হন। 

দিঘলিয়ায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
পুলিশ জানায়, শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নন্দনপ্রতাপ গ্রামে আল-আমিন সিকদার (৩৩) নামে এক ভ্যানচালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আল-আমিন ওই গ্রামের কাওসার শিকদারের ছেলে।

দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন বলেন, “আল-আমিনের স্ত্রীর সাবেক স্বামী মো. আসাদুল ঝিনাইদহ থেকে এসে অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর আসাদুল পালিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।”

ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

নগরীতে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
অপরদিকে, শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকায় নিজ বাড়িতে ছুরিকাঘাতে খুন হন মনোয়ার হোসেন টগর (২৫) নামে এক যুবক। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা জামাল হাওলাদারের ছেলে। 

স্থানীয়রা জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে কয়েকজন যুবক টগরের বাড়িতে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা তাকে ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এসআই আবদুল হাই বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হত্যাকারীরা টগরের পূর্ব পরিচিত।  তাদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।” 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ