সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও পদে পুনর্নিয়োগ পেয়েছেন মাসরুর আরেফিন। সম্প্রতি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের পরে বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী তিন বছরের জন্য তাঁর পুনর্নিয়োগে অনুমতি প্রদান করেছে। 

সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সারের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার ব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

মাসরুর আরেফিন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সিটি ব্যাংকের এমডি ও সিইও হিসেবে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পান। দুই মেয়াদে গত ছয় বছরে তিনি ব্যাংকটিকে ভিন্নতর উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বলে ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এ সময়কালে ব্যাংকটির বাৎসরিক আয় ১,৫৯৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৪,০০০ কোটি টাকার কাছে পৌঁছায় এবং পরিচালন মুনাফা ৬৬৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ব্যাংকের অনিরিক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২,২৮৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়, অর্থাৎ অতি অল্প সংখ্যক দেশী ব্যাংকের একটি হিসাবে সিটি ব্যাংক ২,০০০ কোটি টাকা মুনাফার ক্লাবে প্রবেশ করে। একইসঙ্গে গত ছয় বছরে ব্যাংকের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৪২ দশমিক ১ শতাংশে নামে এবং বৈদেশিক বাণিজ্য বার্ষিক ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ৭ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই সময়কালে ব্যাংকটির আমানত ২১,০০০ কোটি টাকা থেকে ৫২,০০০ কোটিতে এবং ঋণ পোর্টফোলিও ২৩,০০০ কোটি থেকে ৪৫,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছায়। এছাড়া ব্যাংকটির মন্দঋণ অনুপাত ৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসে (২০২৩) এবং শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ অনুপাত ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২২ শতাংশে দাঁড়ায়। 

মাসরুর আরেফিন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ১৯৯৫ সালে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগদান করেন। ৩০ বছরের কর্মজীবনে তিনি এএনজেড ব্যাংক মেলবোর্ন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কাতার, সিটি ব্যাংক এনএ, আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন। তিনি বরিশাল ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেট; আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স; মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং পরে ফ্রান্সের ইনসিয়াড বিজনেস স্কুল থেকে উচ্চতর আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপরে কোর্স সম্পন্ন করেন।

মাসরুর আরেফিন তাঁর ব্যাংকার পরিচয়ের পাশাপাশি একজন স্বনামধন্য উপন্যাসিক, কবি ও অনুবাদক হিসেবেও পরিচিত।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ