চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, জাহাজ নির্মাণ, এপিআই, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিকস, সেমিকন্ডাক্টর, তথ্যপ্রযুক্তি প্রভৃতি খাতে আরও বেশি হারে দক্ষিণ কোরিয়াকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিকের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান।
চেম্বারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি হারে দক্ষ মানবসম্পদ নেওয়ার আহ্বান জানান। সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়ার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান তৃতীয়। দেশটি বাংলাদেশে ১৫৬ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। 

রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহজ ভিসা প্রদান ও নবায়ন প্রক্রিয়া, দ্রুত কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া, বিডার সেবা প্রদান প্রক্রিয়া বেগবান করা, করপোরেট করহার সহনীয় পর্যায়ে রাখা এবং লজিস্টিক খরচ কমানো অতীব জরুরি। ইলেকট্রনিকস পণ্য, মোবাইল, অটোমোবাইল, তথ্যপ্রযুক্তি প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রদূত জানান, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানের মাধ্যমে কোরিয়া সহযোগিতা দিয়ে আসছে।   
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও যৌথ বিনিয়োগের আহ্বান জানান। ঢাকা চেম্বারের সহসভাপতি  সালিম সোলায়মানসহ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।   

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেল ঘোষণা, আছেন হিন্দুধর্মাবলম্বী প্রার্থীও
  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের