সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাজেদা ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার আশরাফুল ইসলামকে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (১) আদালতের বিচারক সুপ্রিয়া রহমান এ রায় প্রদান করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামের সোনাউল্লাহর ছেলে মো.

এরশাদ আলী, পাবনা জেলার অরেঙ্গাবাজ গ্রামের মৃত আকবর শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম, হেমায়েতপুরের মৃত নাছির উদ্দিনের ছেলে মো. আবুল হাসেম, জয়গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মো. হাসান আলী। 

যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত প্রাবলিক প্রসিকিউটর মো. হাদিউজ্জামান শেখ (হাদী) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৮ সালের (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার সাজেদা ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার মো. আশরাফুল ইসলাম অফিস থেকে বের হয়ে বাড়াবিল গ্রামের কিস্তির টাকা উত্তোলন করার জন্য যায়। পরে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে কিস্তির ১ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা উত্তোলন করে বাড়াবিল বড় ব্রিজের পাশে রিকশার জন্য অপেক্ষা করে। 

এ সময় আসামিরা ৩টি মোটরসাইকেল যোগে এসে আশরাফুল ইসলামকে পিস্তল ঠেকিয়ে ও  কিলঘুষি মেরে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আসামিদেরকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এই ঘটনায় শাহজাদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক কে.এম রাকিবুল হুদা আসামিদেরকে হেফাজতে নেন এবং তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।

ঢাকা/অদিত্য/ইমন

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ