আগামী মাসে বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পযার্য়ে বৈঠক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 14th, January 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, “সীমান্তে এখন কোনো উত্তেজনা নেই। এখন পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। তারা (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নিমার্ণ করছে না। বলা যায়, পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতাবস্থায় রয়েছে।”
তিনি বলেন, “শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে আগামী মাসে বিজিবি এবং বিএসএফ-এর ডিজি পযার্য়ে আলোচনা হবে। যেহেতু, আমাদের কিছু অসম চুক্তি করা রয়েছে, সেগুলো নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে। এর আগে মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে (বিএসএফ) চিঠিও দেওয়া হবে, যেগুলো অসম আছে, সেগুলো কিভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে।”
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহ বিভাগের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকতার্দের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের শাহাবউদ্দিন মিলনায়তনে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে গুলির আওয়াজ
ভোমরা সীমান্তে জমি চাষে বিএসএফের বাধা, পতাকা বৈঠক
সারের কোনো সংকট নেই জানিয়ে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আর যদি কেউ সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো ডিলার যদি এসবের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে আগামী মাস থেকেই তাদেরর ডিলারশিপ চলে যাবে। কোনো অবস্থায় তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। কৃষকরা দেশের প্রাণ, তারা অবশ্যই ন্যায্য মূল্যে সার পাবেন।”
সংকট কাটিয়ে পুলিশের কার্যক্রম ত্বরান্বিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এসময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোকতার আহমেদ, রেঞ্জ ডিআইজি ড.
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে আটক ১৯ জেলে ৯৭ দিন পর বাড়ি ফিরলেন
ভোলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ১৯ জেলে ৯৭ দিন ভারতে আটক থাকার পর দেশে ফিরেছেন। গত বুধবার রাতে তাঁরা নিজ নিজ বাড়ি ফিরেছেন।
দেশে ফেরত জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে ঝড়ে দিগ্ভ্রান্ত হয়ে তাঁদের বহনকারী ট্রলার ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে যায়। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের আটক করে।
দেশে ফেরা জেলেরা হলেন সফিজল ব্যাপারী (মাঝি), শাহে আলম, ছিডু মুন্সি, রাজীব চন্দ্র দাস, আক্তার হোসেন, মিন্টু হাওলাদার, মো. ফরিদ, মো. আলমগীর, মোহাম্মদ ফরিদ, মো. ইউনুছ, মো. বাবুল সরদার, মো. নিরব হোসেন, মো. ইসমাইল, মো. শাহ আলম হাওলাদার, গৌতম চন্দ্র দাস, জাকির হোসেন, সগির সিকদার, মো. টুটুল ও শহীদুল ইসলাম। তাঁরা সবাই ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
জেলে ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, ৫ সেপ্টেম্বর শান্তির হাট ঘাট এলাকা থেকে একটি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে বঙ্গোপসাগরে যান ওই জেলেরা। মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে ঝড়ে দিক হারিয়ে তাঁরা ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করেন। বিএসএফ তাঁদের আটক করে সুন্দরবনের কোস্টাল থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাঁদের আলীপুর সদর ও পরে বারাইপুর জেলে পাঠানো হয়। দুই দেশের সরকারের সিদ্ধান্তে বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারিতে হস্তান্তরের পর পশ্চিমাঞ্চলীয় কোস্টগার্ডের সহায়তায় বুধবার সন্ধ্যায় মোংলা বন্দরে পৌঁছান তাঁরা। পরে দিবাগত রাত দুইটার দিকে নিজ নিজ বাড়িতে ফেরেন।
জেলেরা ফিরলেও মাছ ধরার নৌকাটি ফেরত দেওয়া হয়নি দাবি করেন সফিজল মাঝির ছেলে হোসাইন স্বাধীন। তিনি বলেন, ‘৩০ লাখ টাকা মূল্যের ফিশিং বোটটি ফেরত পাইনি। নৌকাটি না পেলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব।’
আরও পড়ুনবঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলার বিকল, ভোলার ১৯ জেলে ভারতের কারাগারে২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫জেলে মো. শাহে আলম বলেন, সাগর থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ পাওয়া গিয়েছিল। ভারতীয় প্রশাসন মাছসহ ফিশিং বোট নিয়ে গেছে।
ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই জেলেদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছেন বলে দাবি করেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী ও জেলে সমিতির ভোলা সদর উপজেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন শেখ। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন আর কোনো জেলেকে এভাবে নির্যাতন না করা হয়, সেই অনুরোধ জানাই।’
আরও পড়ুনসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১২ দিন ধরে ১৫ জেলে নিখোঁজ২২ নভেম্বর ২০২৫আল মামুন শেখ বলেন, জেলেরা আটক হওয়ার খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারের কাছ থেকে সব কাগজপত্র সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এর ফলে দীর্ঘ ৯৭ দিন পর কোস্টগার্ডের সহায়তায় ওই জেলেরা দেশে ফিরেছেন।
কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে বন্দিবিনিময়ের সিদ্ধান্ত হলে বাংলাদেশ ৪৭ ভারতীয় জেলেকে ও ভারত ৩২ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত দেয়।
ভোলা সদর ইউএনও মো. আরিফুজ্জামান বলেন, সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় জেলেদের ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে ৯৭ দিনের মাথায় তাঁরা ফিরেছেন। আটক থাকা অবস্থায় তাঁদের পরিবারগুলোকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুনভোলায় সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ১৩ জেলে ভারতের কারাগারে বন্দী০১ ডিসেম্বর ২০২৫