রাজশাহীর চারঘাটে অবস্থিত সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত উপপরিদর্শকদের (এসআই) সমাপনী কুচকাওয়াজ আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অভিবাদন গ্রহণ করবেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

সারদা পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা বলেছেন, আগামীকাল ৪৮০ জন এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ হবে।

এদিকে বিভিন্ন ‘অজুহাতে’ প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা ঢাকায় সচিবালয়ে গতকাল সোমবার বিকেল থেকে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের গায়ে কাফনের কাপড়ও দেখা গেছে। আজ মঙ্গলবারও তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

সারদা পুলিশ একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, ৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২১ জন এসআই ছিলেন। তাঁরা ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর সারদায় বনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে গুরুতর অপরাধের অভিযোগে ২২ জনকে বাদ দেওয়া হয়। মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে চার ধাপে ৩২১ জন এসআইকে শোকজ করে একাডেমি। ইতিমধ্যে তাঁদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত ২১ অক্টোবর ২৫২ জন, ৪ নভেম্বর ৫৮, ১৮ নভেম্বর ৩ এবং সর্বশেষ ১ জানুয়ারি ৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই এসআইদের সমাপনীর তারিখ গত ২৬ নভেম্বরও স্থগিত হয়েছিল।

অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের বিরুদ্ধে ‘নাশতা না খেয়ে বিশৃঙ্খলা এবং প্রশিক্ষণ চলাকালে হইচই’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ব্যাচের অবশিষ্ট থাকা ৪৮০ জনের বুধবার সমাপনী হওয়ার কথা আছে।

একাডেমির সমাপনীর অপেক্ষায় থাকা এক এসআই জানান, ইতিমধ্যে তাঁদের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরানো হয়েছে। তাঁরা সমাপনী কুচকাওয়াজের জন্য প্রস্তুত আছেন।

অন্যদিকে ঢাকায় আন্দোলনরত অব্যাহতিপ্রাপ্ত এক এসআই জানান, গতকাল সকাল থেকে তাঁরা সচিবালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেন। বিকেল চারটার পর তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করেছেন। আজও কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত আশানুরূপ কোনো বার্তা পাননি কারও কাছ থেকে।

আরও পড়ুনঅব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইরা আজও অনশনে৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনঅবশেষে সারদা পুলিশ একাডেমিতে কনস্টেবলদের সমাপনী কুচকাওয়াজ হলো১২ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। 

গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন। 

আরো পড়ুন:

মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত

উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়। 

নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।

দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন। 

২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে। 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনে এসআইদের প্রতি ডিএমপি কমিশনারের আহ্বান
  • রাজশাহীতে যুবদল–ছাত্রদলের চাঁদাবাজির মামলার এজাহার ফাঁস, এসআইকে বদলি
  • রূপগঞ্জে দাফনের এক বছর পর যুবকের মরদেহ উত্তোলন
  • কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার