সদ্য পদত্যাগ করা টিউলিপ সিদ্দিকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন লেবার পার্টির এমপি এমা রেনল্ডস। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার নতুন অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার হিসেবে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।

৪৭ বছর বয়সী লেবার পার্টির এমপি এমা রেনল্ডস গত বছরের নির্বাচনে নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়েই ১৪ বছর পর দলটি ক্ষমতায় ফিরে আসে। খবর-রয়টার্স।

নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এমা দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ওয়াইকম্ব থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মধ্য ইংল্যান্ডের বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচন করেন এবং বিজয় হন।

এমার আগে অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার ছিলেন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। শেখ হাসিনা সরকারের দুর্নীতির সঙ্গে তার নামও উঠে আসে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তিনি আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পান। বিশেষ করে বিনা মূল্যে দুটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে এলে তাকে নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীনরা। এরপর একের পর এক অভিযোগ সামনে আনে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

অবশেষে ব্যাপক সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন তিনি। এ পদে থেকে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার পতনের পর টিউলিপ সিদ্দিকও আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন বলে তথ্য প্রকাশ্যে আসে। শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি তার এমন দুটি ফ্ল্যাট ভোগদখলের তথ্য ফাঁস করে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের মুখে জামাতার ভাষা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বপ্ন গাজা উপত্যকা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নেওয়া এবং সেটাকে সমুদ্রতীরের আন্তর্জাতিক রিসোর্টে রূপান্তর করা। এর নিয়ন্ত্রণ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা তাঁরই জামাতা জেরেড কুশনারের একটি মন্তব্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এক বছর আগে কুশনার বলেছিলেন, গাজার সমুদ্রমুখী এলাকা অত্যন্ত মূল্যবান। সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে সুদৃশ্য স্থাপনা নির্মাণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন এ রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।

গতকাল বৃহস্পতিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প গাজা দখল ও সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। সেই সঙ্গে তিনি গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁর মন্তব্যে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ পরিকল্পনার সমালোচনায় নামে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোই। ফিলিস্তিনের মানুষ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তারা গাজায়ই বাঁচতে ও মরতে চান। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটা জাতিগত নিধনের শামিল ও আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।

এর আগেও ট্রাম্প গাজা নিয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। গত বছরের অক্টোবরে ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যথাযথভাবে গড়ে তুললে গাজা ধনকুবেরদের শহর মোনাকোর চেয়েও ভালো কিছু হতে পারে। ২০২৩ সালে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে একে একে এসব পরিকল্পনা সামনে আসতে থাকে। শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা কুশনারকে এসব বলতে শোনা যায়। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি মার্কিন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত ছিলেন। তারই দূতিয়ালিতে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে আব্রাহাম চুক্তি সই হয়। 

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হার্বার্ডের একটি অনুষ্ঠানে কুশনার বলেছিলেন, গাজার উপকূলীয় সম্পত্তি অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যদি সেখানে জীবিকা নির্মাণের দিকে মনোনিবেশ করা হয়। আরব-ইসরায়েল সংঘাত প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের দ্বন্দ্ব রিয়েল এস্টেট বিরোধ ছাড়া আর কিছু নয়। সেখানের পরিস্থিতি কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক। ইসরায়েলের দৃষ্টিকোণ থেকে বলব, আমি হলে লোকজনকে সেখান (গাজা) থেকে বের করে দিতাম এবং তার পর জায়গাটি পরিষ্কার করতাম।’  

সম্প্রতি ট্রাম্পও একই কথা বলেছেন। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে দিতে চাচ্ছেন এবং সেখানের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানাতে চাচ্ছেন। ট্রাম্পের মতো কুশনারও একজন প্রপার্টি ডেভেলপার। বিশ্লেষকরা মনে করেন, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা তাদের দৃষ্টিতে গাজার পরিস্থিতি দেখছেন। তারা সম্পত্তি দেখছেন, সেখানকার ২২ লাখ মানুষ দেখছেন না। 
গাজার বাসিন্দারা ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর চীন বলেছে, গাজার মালিক গাজার মানুষ। এটা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বিবিসির বিশ্লেষণ

গাজা থেকে বাসিন্দাদের অন্য দেশে পাঠিয়ে এর দখল ও মালিকানা নেওয়ার ট্রাম্পের যে পরিকল্পনা, তা বাস্তবায়ন হওয়ার নয়। এটা করতে হলে আরব দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন, যা মিলবে না। এরই মধ্যে জর্ডান, মিসর, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলোও। তবে এর দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব থাকবে। কট্টরপন্থি ইহুদিদের পরিকল্পনায় ট্রাম্পের এ প্রস্তাব হাওয়া দেবে।

ইউএনএইচআরসি ছাড়ল ইসরায়েল

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) ছেড়েছে ইসরায়েল। বুধবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার সামাজিক মাধ্যম এক্সে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শতাধিক অভিযোগ করেছে মানবাধিকার কাউন্সিল, যা ইরান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া ও ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আনা মোট অভিযোগের চেয়েও বেশি। এ ধরনের বৈষম্য ইসরায়েল মেনে নেবে না। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ