নাটোরের গুরুদাসপুরে মোক্তার হোসেন নামে মালায়েশিয়াপ্রবাসীর স্ত্রী আতিয়া খাতুন ও রাকিবুল হাসান নামে কলেজপড়ুয়া ছাত্র আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আতিয়া গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে ও বুধবার সকাল ৮টার দিকে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন রাকিবুল। উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের পিপলা এবং চরপিপলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আতিয়া খাতুন (২৬) উপজেলার পিপলা গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে ও রাকিবুল হাসান (১৮) একই গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে। আতিয়ার শ্বশুর বাড়ি চরপিপলা গ্রামে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিপলা গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ের সঙ্গে প্রায় ৮ বছর আগে পার্শ্ববর্তী গ্রাম চরপিপলার বকুল জানের ছেলে মালায়েশিয়াপ্রবাসী মোক্তার হোসেনের মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়। এর পর মোক্তার বিভিন্ন সময় দেশে আসেন। তবে তাদের কোনো সন্তান নেয়। স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি কারো সঙ্গে কোনো বিবাদ ছিল না আতিয়ার। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শ্বশুর বাড়িতে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।

এদিকে আতিয়া খাতুন গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ার পর তার ছোট ভাইয়ের বন্ধু রাকিবুল তাদের বাড়িতে ছিল। সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে ফিরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে রাকিবুলও আত্মহত্যা করেন।

আতিয়ার ফুফাতো ভাই আনিসুর রহমান বলেন, ‘আতিয়া খাতুন কেন আত্মহত্যা করেছে তা কেউ জানে না। সংসারে কোনো অশান্তিও ছিল না। কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কও ছিল না।’

রাকিবুল হাসানের বাবা আলতাব হোসেন বলেন, ‘ছেলে সকালেও আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। তবে কেন আত্মহত্যা করল বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ওসি মো.

গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় নিজ বাড়ি থেকে রাকিবুল হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আতিয়া খাতুন নামের এক প্রবাসীর স্ত্রী মারা গেছেন। দুটি ঘটনার কারণ উদঘাটনে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রার্থী পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা বিএনপির দুই নেতার

নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের  কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দুই নেতা। আজ শুক্রবার বিকেলে সেনবাগ থানার মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে তাঁরা এ আহ্বান জানান।  মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে এ সমাবেশ হয়েছিল।

বিএনপির এ দুই নেতা হলেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান ও দলটির সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান। নোয়াখালী-২ আসন থেকে তাঁরা দুজনেই মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ।

মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে হওয়া এ সমাবেশে সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী উপজেলার বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এতে তাঁরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, কাজী মফিজ ও আবদুল মান্নানের ছবি–সংবলিত ফেস্টুন বহন করেন। সমাবেশের কারণে সেনবাগ উপজেলা সদরে এক ঘণ্টার বেশি যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা সেনবাগে পরিবর্তন করেই এই এলাকার মানুষকে মুক্ত করব। আপনারা প্রতিটি ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলুন। প্রতিটি ঘর থেকে আওয়াজ তুলুন। যাকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, আমরা তাঁকে চাই না। তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তাঁকে যদি রাখা হয়, তাহলে সেনবাগের মানুষ তাঁদের সিদ্ধান্তও পরিবর্তন করতে বাধ্য হবে।’

সমাবেশ মনোনয়ন পাওয়া  জয়নুল আবদিন ফারুকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আবদুল মান্নান।  তিনি জয়নুল আবদিনের উদ্দেশে বলেন, ‘চাঁদামুক্ত সেনবাগ হতে হবে। সন্ত্রাসমুক্ত সেনবাগ হতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত সেনবাগ হতে হবে। আমরা ভুলে গেলে চলবে না,  গত এক বছরে লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন। আমরা চাঁদাবাজমুক্ত সেনবাগ চাই। আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের মৃত্যুবরণও করতে হয়, আমি মরতে রাজি আছি।’

সেনবাগ পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মফিজুল ইসলাম এ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন। এতে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আনোয়ার হোসেন, সহসভাপতি জাহাঙ্গীর হাসান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওবায়দুল হক প্রমুখ।

চলতি মাসের ৩ নভেম্বর বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই নোয়াখালীর এ আসনে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়েছে। জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হারুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেনবাগে মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিষয়ে তাঁরা অবগত রয়েছেন। এটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। জেলা বিএনপি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘোষিত প্রার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত সবাইকে মেনে চলা উচিত।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ