দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জটিলতা নিরসন তিনদিনের মধ্যে: জবি উপাচার্য
Published: 15th, January 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া তিন কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। এ জন্য সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আগামী রোববার পরিদর্শন করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার মন্ত্রণালয়ে ইউজিসি ও সেনা প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভার পর উপাচার্য এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ চলমান। এভাবে আগে হয়নি। কিভাবে তারা কাজটা নেবেন সেটা তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করবেন। সেনা প্রতিনিধিরা সহসাই ক্যাম্পাস ভিজিট করবেন। কোন কাজ কোন অবস্থায় তার তথ্য নিয়ে বিবেচনায় নিয়ে অ্যানোমালি চিহ্নিত কিরে রিভাইজড ডিপি প্রস্তুত করবেন। লিখিত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেনাবাহিনী ব্যাকগ্রাউন্ডে ইনভলভ হবে৷
জবি উপাচার্য বলেন, আমাদের বাণী ভবন ও শহীদ হাবিবুর রহমান হলের স্টিল স্ট্রাকচার ভবন নির্মাণের কাজের বিষয়েও আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম। তারা এ কাজটি করার প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছেন। তারা এই সাইটটিও ভিজিট করবেন। এটা বিরাট পাওয়া।
এ সময় শিক্ষার্থীদের শাটডাউন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পুরো কৃতিত্ব দিতে চাই। পাশাপাশি সরকার যেভাবে আমাদের সমস্যা সমাধানে নজর দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছে সে ব্যাপারেও আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের শাটডাউন তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এটা তুলে নিলে সবাই উপকৃত হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো সন্দেহ নেই যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই হবে।
মন্ত্রণালয়ের সভার লিখিত আসার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, এরকম বহুমুখী সভার রেজ্যুলিউশন দিতে সময় লাগে। উনারা খুবই দ্রুত কাজটা করবেন। এ ছাড়া সম্ভাব্য সময় রোববার সেনা প্রতিনিধিরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ভিজিটে যেতে পারেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, দ্বিতীয় ফেজের কাজটা এখনও পরিকল্পনায়। এটাতে কিছুই হয়নি। বর্তমান প্রজেক্টের কাজ তারা করবেন। বর্তমান প্রজেক্টের আওতায় দ্বিতীয় ডিপিপিটা সেনাবাহিনী করে দেবে। সেখানে শর্তেও হয়তো বলা থাকবে দ্বিতীয় ফেজের কাজ তারা করবে যদি শিক্ষা মন্ত্রনালয় অনুমতি দেয়। আর স্টিল স্ট্রাকচার ভবন নির্মাণের জন্য সাইট ভিজিট করে উপাত্ত নিয়ে ঠিক কি পরিকল্পনায় করা যায় সে বিষয়ে তারা প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন সমীকরণ, প্রার্থীদের নিয়ে অবস্থান জানান দিচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শিল্পসমৃদ্ধ গাজীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বাড়ছে। জেলার রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করা আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ভোটের মাঠে অনুপস্থিতি নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। ইতিমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনী প্রস্তুতির কথা বললেও তেমন দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই। তৎপরতা নেই বাম দল ও জাতীয় পার্টির (জাপা)।
এদিকে পুনর্বিন্যাসের পর নির্বাচন কমিশন গাজীপুরের আসন ৫টি থেকে ৬টি করে। সিটি করপোরেশনের ৩২-৩৯ এবং ৪৩-৫৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর গাজীপুর-৬ আসনের গেজেট প্রকাশ করা হয়। তবে হাইকোর্ট ১০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের ওই গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ফলে গাজীপুর-৬ আসন বাতিল হয়ে যায়।
পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা আগাম প্রচার শুরু করেছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি ইসলামি দলের নেতারা মাঠে কাজ করছেন।
আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে শিল্পসমৃদ্ধ জেলা গাজীপুরের ভোটের মাঠে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে।গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর ও সিটির একাংশ)
১৯৯১ সাল থেকে গাজীপুর-১ আসনে কখনো জিততে পারেনি বিএনপি। প্রতিবারই আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় পেয়েছেন। এবার আসনটিতে অনেক হেভিওয়েট নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকায় এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম (বাবুল), কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হেলাল উদ্দিন মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ ছাড়া বিএনপির নেতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে চৌধুরী ইসরাক আহমেদ সিদ্দিকীও দলীয় মনোনয়ন চান।
আসনটিতে প্রায় ছয় মাস আগে সাবেক সচিব মো. শাহ্ আলম বকশিকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। ইতিমধ্যে তিনি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে জি এম রুহুল আমিন গণসংযোগ করছেন।
গাজীপুর-২ (টঙ্গী ও সিটির একাংশ)
গাজীপুর-১ আসনে সাবেক মেয়র এম এ মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিমকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও মহানগরের নায়েবে আমির হোসেন আলীকে প্রার্থী করেছে জামায়াত। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের এম এ হানিফ সরকারকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত আসনটির ভোটাররা সাধারণত দলীয় প্রতীকের চেয়ে ব্যক্তিগত পরিচিতি, উন্নয়ন ও সুনাম বিবেচনায় নিয়ে ভোট দেন। এবার বিএনপি প্রার্থীর পারিবারিক প্রভাব ও জামায়াতের সংগঠিত কাঠামো ভোটের লড়াই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলতে পারে।
এম মঞ্জুরুল করিম বলেন, ‘মহানগরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু করেছি।’
হোসেন আলী বলেন, এখানকার শ্রমিকদের একটি অংশ জামায়াতকে পছন্দ করে। তাঁরা শ্রমিক ও সাধারণ ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর ও সদর উপজেলার একাংশ)
গাজীপুর-৩ আসনে দলের কেন্দ্রীয় সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও জেলার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম রফিকুল ইসলামকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তাঁর বিরুদ্ধে জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। এখানে ইসলামী আন্দোলনের আলমগীর হোসেন প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ করছেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা গাজীপুরের সব আসনের প্রার্থী অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছি। এখন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রার্থী ও কর্মীরা ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন।’
গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া)
স্বাধীনতার পর থেকে মূলত তাজউদ্দীন আহমদের পরিবারের নিয়ন্ত্রণে ছিল গাজীপুর-৪ আসন। তবে ১৯৯১ সালে এখানে জয় পেয়েছিলেন আ স ম হান্নান শাহ। বিএনপি থেকে হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বাবার জনপ্রিয়তা ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ তাঁকে আলোচনায় রেখেছে।
অন্যদিকে জামায়াতের পক্ষ থেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও মহানগরের সদর থানা জামায়াতের আমির সালাহউদ্দিন আইউবীকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি অনেক দিন ধরেই নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ইসলামী আন্দোলনের কাজীম উদ্দিনকে প্রার্থী করা হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে আমরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। ভোটারদের কাছে যাওয়ার জন্য সব রকমের চেষ্টা আমাদের আছে।’
শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গাজীপুর চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি আছে শুধু গাজীপুর-১। শুরুতে প্রতিটি আসনেই অনেক প্রার্থী ছিল; তবে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণার পর প্রচারের কাজ শুরু করেছি।’
গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ ও সিটির একাংশ)
গাজীপুর-৫ আসনে বিভিন্ন দল বিভিন্ন সময়ে জয় পেয়েছে। এবার প্রধান লড়াই গড়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী প্রার্থীর মধ্যে। এখানে সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হককে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়, অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক ভিত্তি তাঁকে এগিয়ে রাখছে।
অন্যদিকে মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য খায়রুল হাসানকে প্রার্থী করেছে জামায়াত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের আতাউর রহমানকে প্রার্থী করা হয়েছে।
খায়রুল হাসান বলেন, ‘শুধু মাঠে নয়, ভোটারদের বাড়িতেও যাচ্ছি। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। ফেসবুকেও ভোটাররা আমাদের সমর্থন ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন।’