চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেক প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ আছে। বিনিয়োগগুলো মূলত ঋণ আকারে। তার মধ্যে কিছু প্রকল্প চলমান।

বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীন যাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। সে উপলক্ষে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে চীন সফরে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে রওনা করবো। পৌঁছাতে ২১ তারিখ হয়ে যাবে। বস্তুত ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি এই তিন দিনের সফর। ২৪ তারিখ ফিরে আসবো।

তিনি আরও বলেন, ২১ জানুয়ারি রাজধানী বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। তারপর সাংহাই যাব। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে হবে। এর বাইরে দুটি শিল্প কারখানা আমাদের দেখানো হবে। একটি বিদ্যুৎচালিত গাড়ির (ইভি) কারখানা এবং আরেকটি ফ্রুটস প্রিজারভেশন সংক্রান্ত। তাদের নতুন এসব টেকনোলজি আমাদেরকে দেখানো হবে কারণ এগুলো আমাদের দেশে কাজে আসতে পারে। তারপর সাংহাই থেকে সরাসরি দেশে ফিরে আসবো।

এম তৌহিদ হোসেন বলেন, আলাপ আলোচনার মধ্যে প্রথমে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো আসবে। আপনারা জানেন, অফিসিয়ালি চীন আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। আনঅফিসিয়ালি ভারতকেও বড় অংশীদার বলা হয়। চীনের সঙ্গে আমাদের প্রধানত আমদানির সম্পর্ক এবং এগুলো আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ আমাদের অনেক রপ্তানি সেই আমদানি পণ্যগুলোর ওপর নির্ভরশীল। কাজেই চীনের সঙ্গে আমাদের যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেক প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ আছে। বিনিয়োগ মূলত ঋণ আকারে। তার মধ্যে কিছু প্রকল্প চলমান আছে। এছাড়া আরও অর্থনৈতিক আলোচনা আছে- যেমন আমরা ঋণের শর্তাবলী নিয়ে কথা বলব। এর মধ্যে সুদহার কমানো বা ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো ইত্যাদি।

উপদেষ্টা বলেন, চীনের কাছে এটাও চাইবো যেন যখন আমরা এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েট করব; তখন ইউরোপের মত তারাও যেন আমাদের জন্য তিন বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রাখে। আপনারা জানেন, এখনো চীন আমাদের অধিকাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু গ্রাজুয়েশনের পরে এটা পরিবর্তন হতে পারে, তাই এটি আমাদের আলোচনার মাধ্যমে আগেই ঠিক করে নিতে হবে। এছাড়া কিছু কালচারাল আলোচনা আছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ উপলক্ষে দুই দেশেই কিছু উৎসব আছে। সেগুলো নিয়েও আমরা কথাবার্তা বলব।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ও গভীর করার লক্ষ্যে এ সফর একটি বড় সুযোগ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট চ ন সফর পরর ষ ট র প রকল প উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ইন্টারনেটের গতিতে নতুন রেকর্ড গড়ল জাপান

ইন্টারনেটের গতি নিয়ে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে জাপান। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (এনআইসিটি) দাবি করেছে, তারা পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক শূন্য ২ পেটাবিট গতিতে তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছে, যা এ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বোচ্চ।

এই গতির অর্থ হলো, এক সেকেন্ডেই পুরো নেটফ্লিক্স লাইব্রেরি কিংবা হাজার হাজার বার ইংরেজি উইকিপিডিয়ার বিশাল তথ্যভান্ডার ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে। গবেষণা দলের ভাষ্য অনুযায়ী, পরীক্ষাটি পরিচালিত হয়েছে এনআইসিটির ফটোনিক নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরির উদ্যোগে। এতে অংশ নেয় জাপানের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান সুমিতোমো ইলেকট্রিক ও ইউরোপের কয়েকটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয় ১৯ কোরবিশিষ্ট একটি বিশেষ অপটিক্যাল ফাইবার কেব্‌ল, যার ব্যাস মাত্র শূন্য দশমিক ১২৫ মিলিমিটার। প্রচলিত ইন্টারনেট কেব্‌লের মতোই। ডেটা পাঠানোর জন্য গবেষকেরা ব্যবহার করেন ৮৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাইবার লুপ, যা ১৯টি পৃথক কোরে ২১ বার পুনরাবৃত্তি করে মোট ১ হাজার ৮০৮ কিলোমিটার দূরত্বে ১৮০টি স্বতন্ত্র তথ্যপ্রবাহ একযোগে পাঠানো হয়। এতে প্রতি কিলোমিটারে প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ৮৬ এক্সাবিট তথ্য স্থানান্তরের হার রেকর্ড হয়, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

গবেষণায় ব্যবহৃত কেব্‌লটি তৈরি করেছে সুমিতোমো ইলেকট্রিক এবং এনআইসিটি নির্মাণ করেছে তথ্য প্রেরণের পূর্ণাঙ্গ প্রেরণব্যবস্থা। এতে ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত মানের ট্রান্সমিটার, রিসিভার ও অন্যান্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উপকরণ। এনআইসিটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রমাণ করতে চেয়েছি, বর্তমান অবকাঠামো ব্যবহার করেই দীর্ঘ দূরত্বে আলট্রা–হাই স্পিড ইন্টারনেটের সংযোগ সম্ভব।’

তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গ্যাজেট–এর হিসাব অনুযায়ী, এই গতিতে ইংরেজি উইকিপিডিয়ার প্রায় ১০০ গিগাবাইট তথ্য মাত্র এক সেকেন্ডে ১০ হাজার বার ডাউনলোড করা সম্ভব। একই সময়ে নামিয়ে ফেলা যাবে উচ্চ রেজল্যুশনের ৮কে ভিডিও ফাইলও। এই গবেষণার তাৎপর্য প্রসঙ্গে প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, কেবল অবকাঠামো বদলানো ছাড়াই ইন্টারনেটের গতি বিপুলভাবে বাড়ানো যে সম্ভব, তা আবারও প্রমাণ করল জাপান। বিশ্বজুড়ে ভিডিও স্ট্রিমিং, ক্লাউড কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তির প্রসারে ডেটা ব্যবহারের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। এমন বাস্তবতায় উচ্চগতির নির্ভরযোগ্য সংযোগ নিশ্চিত করতে ফাইবার অবকাঠামোর সক্ষমতা বাড়ানোর এই প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এই প্রযুক্তি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য কবে নাগাদ উন্মুক্ত হবে, তা এখনো নিশ্চিত করেনি এনআইসিটি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ