আ.লীগ যদি নির্বাচন করে প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে করবে: আব্দুল আউয়াল
Published: 19th, January 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, “ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শোচনীয়ভাবে ক্ষমতা হারিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তবে দলটি ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের যে সব লোক হত্যা, গুম ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের শাস্তির দাবি জানাই।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচন করে, তবে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে নির্বাচন করবে। তাতে বিএনপির কিছু আসে যায় না। তবে, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকাকালীন অনেক অন্যায় করেছে। যারা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত আমরা তাদের বিচার চাই।”
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে পিরোজপুর শহরের টাউন ক্লাব হলরুমে পিরোজপুরে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সঙ্গে বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক টিমের মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নেতাকর্মীদের তারেক রহমান
আপনারা যত সহজ ভাবছেন, সামনের নির্বাচন এত সহজ নয়
বিজিবিকে মেরে মহিষ ছিনিয়ে নিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা
আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি সংগঠনবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ১ হাজার ২০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।”
জামায়াতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কিংবা জামায়াতের কারো সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। যে যার দলীয় মতাদর্শে পরিচালিত। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি দলকে সুসংগঠিত করছে এবং সেই লক্ষ্যে সর্বত্র সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলুর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান, মাহাবুবুল হক নান্নু, সহ-পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম লাবু।
ঢাকা/তাওহিদুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ ব এনপ র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
দেশের প্রতি চারজনের একজন মানুষ এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা কমিশনে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন জিইডির সদস্য (সচিব) মনজুর হোসেন। আলোচক ছিলেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিবিএসের ২০১৯ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের (এমআইসিএস) তথ্য ব্যবহার করে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) নিরূপণ করা হয়েছে। বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হলো দারিদ্র্য পরিমাপের একটি বিস্তৃত পদ্ধতি, যা শুধু আয় বা ভোগের মতো একক মাত্রার বাইরে গিয়ে দারিদ্র্যকে তার বিভিন্ন দিক থেকে বুঝতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের এ সূচকে তিনটি মাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাতে জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই মাত্রাগুলোকে ১১টি আলাদা সূচকে ভাগ করা হয়েছে। যেমন জীবনযাত্রার মানের মধ্যে রয়েছে—বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, খাওয়ার পানি, বাসস্থান, রান্নার জ্বালানি, সম্পদ এবং ইন্টারনেট সংযোগ।
এমপিআই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ২৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে রয়েছে, যা সংখ্যায় প্রায় ৩ কোটি ৯৮ লাখ। গ্রামীণ এলাকায় এই হার ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আর শহরে ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে এই দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর পাঁচটি জেলায় ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। জেলাগুলো হলো—বান্দরবান, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি ও ভোলা। শিশুদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
প্রধান অতিথি আনিসুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে এমপিআই-কে দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি নতুন ও উদ্ভাবনী কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পদ্ধতি সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে। তিনি এ সূচককে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এ ছাড়া কিছু জেলায় দারিদ্র্যের হার বেশি হওয়ার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে আরও গবেষণা করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এমপিআই ব্যবস্থাটি আয়ভিত্তিক দারিদ্র্য মাপকাঠিকে সম্পূরকভাবে সহায়তা করবে এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। সভাপতির বক্তব্যে মনজুর হোসেন জানান, জিইডি ভবিষ্যতেও নিয়মিত এই সূচক প্রকাশ করবে এবং নীতিনির্ধারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে।