নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে বশেমুরবিপ্রবি
Published: 20th, January 2025 GMT
গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) প্রশাসন।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর।
এর আগে, গত ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও গত বছর ২ অক্টোবর এবং ১৪ নভেম্বর শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের নিয়ে সাধারণ সভায় শিক্ষকদের সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গুচ্ছে থেকে বের হওয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে, সম্প্রতি বশেমুরবিপ্রবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তিতে গুচ্ছের কারিগরি ত্রুটির জন্য আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর নাম চলে আসা জটিলতা তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় থাকতে অনীহা তৈরি হয়েছে।
গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে প্রায় শতভাগ শিক্ষক গুচ্ছ পদ্ধতি বশেমুরবিপ্রবির ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপযোগী নয় বলে মতামত দেন। ৯৭.
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসার দাবির পেছনে ছয়টি কারণ উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে ৮১ শতাংশ গুচ্ছ ভর্তিতে সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও আনুষঙ্গিক ভোগান্তিকে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে না চাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
৬৩ শতাংশ একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে অসুবিধা, ৫৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা, ৫৩ শতাংশ সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব এবং ৫১ শতাংশ আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, “আজ আমাদের একটি মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা আগামী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিজস্ব পদ্ধতিতে নেব।”
নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি ও কোটার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত নোটিশের মাধ্যমে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাব। আর ভর্তি কমিটি গঠন করার পর কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। গঠিত ভর্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ ব র হয়
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।