মাছ বিক্রি নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত ২০, টিয়ারশেল নিক্ষেপ
Published: 21st, January 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে মাছ বিক্রিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার বিকেলে উপজেলার টুকেরবাজার এলাকার বউবাজারে এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কে প্রায় তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বউবাজারে মাছ বিক্রি নিয়ে এক ক্রেতার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয় স্থানীয় এক বিক্রেতার। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জেরে সোমবার দুপুর থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উপজেলার দুটি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ। এ সময় উভয় পক্ষ পরস্পরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ করে।
স্থানীয় মুরুব্বি ও পুলিশ মধ্যস্থতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষের সময় সংশ্লিষ্ট থানার এসআই শরীফ নেওয়াজ, মধ্যস্থতা চেষ্টাকারী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়া, পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াদ আলী ও সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে দু’জনকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিকেল ৩টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিকেল ৫টার পর এলাকা ছেড়ে যান উভয় গ্রামের মানুষ। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ওজায়ের আল মাহমুদ জানান, তুচ্ছ ঘটনায় দুটি গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সহকারী পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এর আগে গত বছরের ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর একই এলাকার থানাবাজারে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামের বাসিন্দারা সংঘর্ষে জড়ান। পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত পর স থ ত স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর তেলের দামে অস্থিরতা
ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় আজ শুক্রবার ইসরায়েল হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। এতে জ্বালানির তেলের জোগানে বিঘ্ন ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
অপরিশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারস ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ৬ দশমিক ২৯ মার্কিন ডলার বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দাম ৭৫ দশমিক ৬৫ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৮ দশমিক ৫০ ডলারে পৌঁছায়, যা গত ২৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। এ ছাড়া মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬ দশমিক ৪৩ ডলার বা ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে ৭৪ দশমিক ৪৭ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৭ দশমিক ৬২ ডলারে উঠেছিল, যা কিনা ২১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির মানে হচ্ছে দুনিয়াজুড়ে সুপারমার্কেটে খাবারের দাম, গাড়িতে তেল ভরার খরচ, পরিবহন ব্যয়—সবকিছুর দাম বাড়বে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, ‘এখনই বলা কঠিন, তবে সম্ভবত হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় সবাই উদ্বিগ্ন।’
হরমুজ প্রণালি বিশ্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ। বিশ্বের মোট জ্বালানির প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়েই সরবরাহ হয়। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও গ্যাস উৎপাদক দেশগুলো এই পথ দিয়েই তাদের জ্বালানি বিশ্ববাজারে পাঠায়। উত্তরে ইরান, দক্ষিণে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঘেরা হরমুজ প্রণালি উপসাগরীয় অঞ্চলকে আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমএসটি মারকুইয়ের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশ্লেষক সল কাভোনিক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরান যদি আঞ্চলিক জ্বালানি তেল পরিকাঠামোতে পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে তেলের সরবরাহে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। তিনি আরও জানান, চরম পরিস্থিতিতে ইরান অবকাঠামোতে হামলা বা হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচলে বাধা দিলে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি ব্যারেল তেল সরবরাহ ব্যাহত করতে পারে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ইসরায়েলকে এ হামলার জন্য কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
এদিকে ইরানে ইসরায়েলের হামলা একতরফা পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, এতে ওয়াশিংটনের কোনো অংশগ্রহণ নেই। তবে তেহরানকে সতর্ক করে তিনি বলেন, তারা (তেহরান) যেন মার্কিন স্বার্থ বা ব্যক্তিদের লক্ষ্য না করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফিলিপ নভার জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা বলেন, ইরান পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে শুধু তেলের সরবরাহ বিঘ্ন ঘটাবে না, আশপাশের অন্যান্য তেল উৎপাদকদের দেশগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।