ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরহাজিগঞ্জ বাজারে কৃষকদলের কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

রোববার বিকেলে চরহাজিগঞ্জ পদ্মা নদীর পাড়ে এই কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার গাজিটেক ইউনিয়ন কৃষকদলের আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি মো. ফিরোজ মাস্টার। 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর জেলা কৃষক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো.

শহিদুল ইসলাম (ভিপি শহীদ)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষক দলের সেক্রেটারি মো. মুরাদ হোসেন ও উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারী আব্দুল কুদ্দুস।

উপজেলা কৃষক দলের সেক্রেটারী মো. ফারুক হোসেনের সঞ্চালনায় এ সময় অনন্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কৃষক দলের সদস্য ঢাকা মহানগর উত্তর জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা বিএনপি যুগ্ন-মহাসচিব সরোয়ার হোসেন, গাজিরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী প্রামাণিক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এজিএম বাদল আমিন, যুব দলের সাবেক আহ্বায়ক ওবায়দুল বারী দিপু খান, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি সুভ সালাউদ্দিন মোল্লা প্রমুখ।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম (ভিপি শহীদ) বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান কৃষকদের জন্য কাজ করে গেছেন। বেগম খালেদা জিয়াও কৃষকদের কল্যাণে কাজ করেছেন, আগামীতে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের কম খরচে অধিক ফসল উৎপাদনসহ ন্যায্য অধিকার দেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ষকদল ক ষকদল র দল র স ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই

বিভতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাসে একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, যিনি লবটুলিয়ার জঙ্গলে সরস্বতী কুন্ডের পাড়ে নানা জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গাছপালা এনে লাগাতেন। সেসব গাছে ফুল ফুটলে আনন্দে তিনি আত্মহারা হয়ে যেতেন। আমারও একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, নাম আজাহার। প্রায় আমারই সমবয়সী।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিভিন্ন শালবনে ঘুরতে গেলে মাঝেমধ্যে তিনি আমার সাথি হতেন। শালবনে কত গাছ! তেমন কিছুই চিনি না। কিন্তু সেই শালবনের কোলে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা আজাহার ঠিকই সেসব গাছ চিনতেন, আর জিজ্ঞেস করলে টপাটপ নাম বলে দিতেন। কিন্তু গোলমাল বাধত সেসব নাম শুনে। কেননা সেসব নাম বলতেন, তাঁদের স্থানীয় ভাষায়। বইয়ে সেসব নাম খুঁজে পাওয়া যেত না।

একদিন শালবনের মধ্যে একটা ছোট গাছ দেখলাম, গাছের গুঁড়ির চারদিকে তীক্ষ্ণসরু ও সোজা প্রচুর কাঁটা বেরিয়েছে। পাতাগুলো দেখতে কিছুট পেয়ারাপাতার মতো। প্রচুর ডালপালায় গাছটার মাথা ঝাঁকড়া হয়ে আছে। ডালের আগায় শিষের মতো মঞ্জরিতে প্রচুর ঘিয়া ও সাদাটে রঙের খুদে ফুল ফুটেছে। চিনি না। তাই আজাহারকে জিজ্ঞেস করলাম, নাম কী? চট করেই বলে দিলেন, ছেচরা কই। মাছের নাম কই হয় জানি, কিন্তু কোনো গাছের নাম কই হতে পারে? অগত্যা ছবি তুলে ওই নামকেই মনে গেঁথে ফিরে এলাম ঢাকায়।

আজাহার বললেন, এখন ফুল দেখছেন। কদিন পরেই ওসব ফুল থেকে ছোট ছোট গুলির মতো প্রচুর ফল ধরবে। ছোটবেলায় আমরা সেসব কাঁচা ফল নিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফটকা বানিয়ে তার চোঙে একটা একটা করে ফল দিয়ে বন্দুকের মতো গুলি গুলি খেলতাম। চোঙের ভেতরে একটা সরু কাঠি ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে সেসব ফল গুলির মতো ফাটাতাম। ফটাস করে শব্দ হতো। এ সময় মাসখানেকের জন্য আমরা এ গাছের ফল, পরে জালি খেজুর নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতাম। শালবনে সে সময় এ গাছের অভাব ছিল না। এখন তো দেখতে হলে খুঁজে বের করতে হয়।

ফিরে এসে সে ছবি পাঠালাম জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সাবেক বোটানিস্ট সামসুল হক ভাইয়ের কাছে। দুই দিন পরেই তিনি জানালেন, গাছটার স্থানীয় নাম ছেচরা কই, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Bridelia retusa, গোত্র ফাইলেনথেসি। বইপত্রে এ গাছের চারটি বাংলা নাম পেলাম—কাঁটাকই, কাঁটাকুশি, কামকই, আকদানা। বাংলাদেশ ছাড়াও এ গাছ আছে নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সাধারণত উঁচু ও শুষ্ক বনাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়। ছোট বৃক্ষজাতীয় গাছ, প্রায় ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, দ্রুত বাড়ে। এ গাছের কাঁটা থাকায় বন্য প্রাণীরা এদের ধারে ঘেঁষে না, এমনকি এর বাকল দিয়েও বিষ তৈরি করা হয় বলে শুনেছি।

ফল গোলাকার, ছোট, কাঁচা ফল ময়লা সবুজ, পাকলে খোসায় লাল রং ধরে। ছেচরা কইগাছের কাঠ মাঝারি শক্ত থেকে শক্ত, কাঠের রং ময়লা লাল। রঙে ও গুণে কাঠ উৎকৃষ্ট। নির্মাণকাজ ও গরুর গাড়ির চাকা বানাতে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও শুষ্ক তৃণভূমিতে যদি কোনো গাছ থাকে, তবে সেসব ঘাসে আগুন দিলে এ গাছ পোড়ে না বলে কথিত রয়েছে। বীজ দ্বারা সহজে বংশবৃদ্ধি বা চারা হয়।

পূর্বাচল উপশহরের শালবনে দেখা পাটখই ফল

সম্পর্কিত নিবন্ধ