বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল, ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ আটক ৩
Published: 16th, August 2025 GMT
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে আয়োজন করা হয় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। সেখানে অংশগ্রহণ করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাতে দোয়া মাহফিলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর রাতেই এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায়। আটক ব্যক্তিরা হলেন নিজাম উদ্দিন, নজরুল ইসলাম ও মো.
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে সাতবাড়িয়া এলাকার প্রয়াত ছাত্রলীগ নেতা স্বপন মোল্লার বাড়িতে আয়োজন করা হয় এই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের। ‘স্বপন মোল্লা স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর ব্যানারে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা এই কর্মসূচির আয়োজন করেন। আটক ইমাম-মুয়াজ্জিন দোয়া মাহফিলটি পরিচালনা করেছেন। কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার পরও যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের এই কর্মসূচির প্রতিবাদে রাতে উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে যুবদল ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজনের ঘটনায় তিনজনকে আটকের বিষয়টি কবিরহাট থানার কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য বল গ
এছাড়াও পড়ুন:
জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের
সিলেটে পুলিশের হেফাজতে নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন।
সালমা বেগম বলেন, আকবর হোসেন প্রথমেই ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন পুলিশ অনেক কষ্টে কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। জামিন পেয়েই যে পালানোর চেষ্টা করবেন, সেটা স্বাভাবিক ছিল।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। পরে মহানগর পুলিশের অনুসন্ধান কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। এরপর হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিন ও আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত রোববার আকবর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। এরপর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দায়ের করে। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ উচ্চ আদালতের আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি আকবর হোসেনকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
সালমা বেগম বলেন, হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান শুরু থেকেই পলাতক। কারাগারে থাকা পাঁচজনের মধ্যে চারজনই জামিনে মুক্ত আছেন। যার কারণে পুরো পরিবার ও মামলার সাক্ষীরা শঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার বিচারকাজ প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তিনি ন্যায়বিচার পেতে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি আবেদন জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সহসভাপতি আমির হোসেন, দুর্নীতি মুক্তকরণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন, সিলেট যুব উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আফিকুর রহমান, আখালিয়ার মুরব্বি ছানাউল্লাহ ছানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁরা আকবর হোসেনকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল ফজল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার তাঁর জামিন স্থগিত হয়েছে। তাঁকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণ না করলে তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করবেন।