নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে আবারও সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর প্রধান শিক্ষকের লেলিয়ে দেওয়ার বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। আজ বুধবার সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এসব কর্মসূচি পালন করে।

এর আগে আজ সকালে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে সেখানে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। তখন প্রধান শিক্ষকের পক্ষ হয়ে বহিরাগত একদল তরুণ ও বিদ্যালয়ের কর্মচারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের রড দিয়ে আঘাত করেন। এতে মো.

তামিম ও ইয়াসিন আরাফাত নামের দুই শিক্ষার্থী আহত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষিকাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের জড়িত প্রধান শিক্ষক রিয়াদ মাহমুদের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে তারা আন্দোলন করছে। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ সকালে ওই তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিদ্যালয়ে তদন্ত করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী তাদের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে জেলা শহর মাইজদীতে সুধারাম থানার পাশে সড়কে অবস্থান নেয়। প্রায় এক ঘণ্টা সময় ধরে শিক্ষার্থীরা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় পুলিশ ও সেনবাহিনীর কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফলে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের দিয়ে হামলার বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কথা হয় তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিম হাসান খানের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তিনি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। সব পক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তের মধ্যেই আজ শিক্ষার্থীরা তাঁর কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগও তিনি পেয়েছেন। সবকিছু তদন্তের আওতায় আসবে। কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।

আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’

আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’

এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী