ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জমিজমা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিপুল শেখ (৫০) নামে এক ভ্যানচালককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী সেফালী বেগমসহ উভয়পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন।

বুধবার সকালে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত বিপুল ও তার স্ত্রীকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ময়েন মোল্যা ও সুমন শেখকে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার কুচিয়াগ্রামের রুবেল শেখের সঙ্গে একই গ্রামের সিদ্দিক শেখের জমিজমা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছে। মঙ্গলবার সকালে বিরোধপূর্ণ জমি সার্ভেয়ার পরিদর্শনে করেন। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে ভ্যানচালক বিপুল শেখ তার স্ত্রীসহ চারজন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত বিপুল শেখ ও তার স্ত্রীকে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়।

আহত বিপুল শেখের দলনেতা উজ্জ্বল শেখ বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। মঙ্গলবার সকালে আমাদের দলের রুবেল শেখের জমি মাপতে সার্ভেয়ার এসেছিল। সেখানে নজরুল শেখ সবার সামনে আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের হুমকি দেয়। বুধবার সকালে নজরুল শেখের নেতৃত্বে তার দলের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের দলের তিনজনকে আহত করে। এর মধ্যে গুরুতর আহত বিপুল ও তার স্ত্রীকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিপুলের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে।

ঘটনা অস্বীকার করে নজরুল শেখ তিনি জানান, রুবেল শেখের সঙ্গে আমার দলের সমর্থক সিদ্দিক শেখের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ওই জমি মঙ্গলবার সকালে সার্ভেয়ার মাপতে আসে। তখন আমাদের লোকজনকে বিপুল শেখ মারধর করার হুমকি দেয়। বুধবার সকালে বিপুল শেখসহ তাদের গ্রুপের লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করে এতে সুজন শেখ নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ওসি হারুন অর রশিদ জানান, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। জমিজমা ও এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়েছে। লিখিত অভিযোগ বা মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আলফ ড ঙ গ আহত আহত ব প ল র দল র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ