ঢাকার অন্যতম প্রাচীন প্রেক্ষাগৃহ মধুমিতা। মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে টিকাটুলীর দিকে যেতে হাতের বাঁ পাশে  এই সিনেমা হলের অবস্থান। চলচ্চিত্রের মন্দার চাপে একে একে সিনেমা হল যখন বন্ধ হচ্ছে তখনও মধুমিতা সিনেমা হলটি ঐহিত্য বুকে ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটি ৫০ বছর অতিক্রম করায় বছরজুড়ে  সুবর্ণজয়ন্তীও উদ্‌যাপন করে। 

ঐতিহ্য ধরে রাখতে সিনেমা হলটিকে কোটি টাকা খরচ করে আধুনিকায়ন করা হয়েছিল। পৈতৃক ব্যবসাকেই আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন এর বর্তমান কর্ণধার ইফতেখার নওশাদ।  কিন্তু দেশে চলচ্চিত্রের বাজারের ধারাবাহিক পতনে সেই আশা এখন মরীচিকায় রূপ নিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হলটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিক। আসছে রোজার ঈদে উৎসবের সিনেমা চালিয়ে সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ইফতেখার নওশাদ বলেন,  কোটি টাকা দিয়ে হলের মানউন্নয়ন করিয়ে সিনেমা না চালিয়ে মধুমিতা বন্ধ করে রেখেছি। সিনেমা নাই কি করবো হল চালু রেখে। যে সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে সেইগুলো তো সিনেপ্লেক্সের সিনেমা। আমাদের হলে চালানোর মতো না। বছরে এত লস গুনে গুনে তো টিকে থাকা যায় না। তাই আসছে রোজার ঈদের সিনেমা চালানোর পর চিরতরেই মধুমিতা বন্ধ করে দেবো।’

সিনেমা হলটি ভেঙে সেখানে উঠবে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। আশার কথা হচ্ছে সেখানে মাল্টিপ্লেক্স থাকবে বলেও জানিয়েছেন নওশাদ। সমকালকে তিনি বলন, ‘অনেক চেষ্টাই আমি করেছি যেন হলটি চালু রাখা যায়। এটা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলেও এই শহরের সিনেমাপ্রেমীদের জন্য একটা ইমোশন, নস্টালজিয়া। কিন্তু পারছি না। বাধ্য হয়েই বন্ধের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। পরিবার থেকেও চাপ ছিল বন্ধ করে যেন ডেভেলপার কোম্পানিকে দিয়ে দিই। তবে নতুন ভবনে মাল্টিপ্লেক্স করার ইচ্ছে রয়েছে। দেখা যাক কতটা কি করতে পারি।’ 

রোজার ঈদে মুক্তি পাবে  শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। সব ঠিক থাকলে   এই বরবাদই হবে মধুমিতা হলে  প্রদর্শিত শেষ সিনেমা। বাংলা চলচ্চিত্র ইন্ডাষ্ট্রির সোনালী দিনের স্মৃতি ধারণ করে রাজধানীর বুকে অর্ধশত বছর পেরিয়েছে এই মধুমিতা হল।  ১৯৬৭ সালের ১ ডিসেম্বর মধুমিতা সিনেমা হল উদ্বোধন করেছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার বিচারপতি আব্দুল জব্বার খান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন ম হল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ