বিগত কয়েকদিন ধরেই আঁচ করা যাচ্ছিল যে, আজ (৩০ জানিয়ারি, ২০২৫) দিল্লির অরুণ জেটলি (পুরোনো নাম ফিরোজ শাহ্‌ কোটলা) স্টেডিয়ামের নির্ধারিত কিছু অংশ দর্শকে টইটুম্বর হবে। তবে কেউ যা ভাবেনি তা হচ্ছে, ম্যাচের আগের রাত ৩টা থেকে মাঠে প্রবেশের জন্য দর্শকদের লাইন দেওয়ার পাগলামিটা। চোখ কপালে উঠবে, যখন শুনবেন এই উন্মাদনা রঞ্জি ট্রফির একটা ম্যাচ ঘিরে। তবে ঘরোয়া লিগ হলেও ম্যাচটা ‘বিশেষ’, কারণ এর সাথে যে জড়িত ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বিরাট কোহলির নামটা।

আজ রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে দিল্লির মুখোমুখি হয়েছিল রেলওয়ে। আসরটিতে এক যুগেরও বেশি সময় পরে এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে নেমেছেন বিরাট। ভারতের সবচেয়ে ‘সম্মানজনক ও প্রথিতযশা’ ঘরোয়া আসর রঞ্জিতে ২০১২ সালের নভেম্বরে উত্তর প্রদেশের বিপক্ষে সবশেষ খেলেছিলেন এই মাস্টার ব্যাটসম্যান।  
ঘরের ছেলেকে কাছ থেকে এক নজর দেখার জন্যই এদিন ‘উপচে পড়া ভিড়’ ছিল অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের ভেতর এবং বাইরে। স্টেডিয়ামে এই ম্যাচের জন্য নির্ধারিত স্থানে প্রকৃত অর্থেই এদিন তিল ধারণেরও ঠাঁই ছিল না। ৩৫০০০ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের ১২০০০ সিট এই ম্যাচে দেখার জন্য উন্মুক্ত ছিল।

আরো পড়ুন:

রংপুরকে হারের স্বাদ দিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখল খুলনা

চার-ছক্কার বৃষ্টি নামিয়ে নাঈমের সেঞ্চুরি

 

সকাল ৯.

৩০ টা থেকে ম্যাচ শুরু হওয়ার অনেক আগ থেকেই ‘কোহলি’র নামে গগণবিদারী চিৎকারে মেতে ছিল দর্শকরা। এই ধরনের চিৎকার আজকাল আর আন্তর্জাতিক কিংবা আইপিএল ম্যাচেও শোনা যায় না। রঞ্জি ট্রফির জন্যই এ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা। স্টেডিয়ামে প্রবেশের লাইন ২ কিলিমিটার লম্বা হয়ে যায় এদিন।

বিরাটের প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেটে এই প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দিল্লি ও জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ডিডিসিএ) ঘোষণা করেছিল যে, দর্শকরা ১৫ ও ১৬ নম্বর গেট দিয়ে উত্তর প্রান্তের স্ট্যান্ডে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। সকাল ৯টার মধ্যে, প্রায় ৬,০০০ আসনের উত্তর প্রান্তের স্ট্যান্ড প্রায় পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই, ১২,০০০ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বিষান সিং বেদি স্ট্যান্ডের নিচের স্তরও পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর ডিডিসিএ অতিরিক্ত দর্শকদের জন্য গেট ১৭ ও ১৮ খুলে দেয়।

 

ভারতের সাবেক পেসারে ইরফান পাঠান এই ম্যাচের বিশেষত্ব বোঝাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে লিখেন, “এটা দুর্দান্ত যে তরুণরা এখন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার মতো খেলোয়াড়দের সাথে বা বিপক্ষে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছে। বহু বছর ধরে এটা হচ্ছিল না, কিন্তু এখন হচ্ছে। যা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য চমৎকার একটা ব্যাপার। আশা করি, বর্তমানে যারা ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য, তারা এই ধারা ধরে রাখবেন এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার আগ্রহ দেখাবেন।”

দর্শকদের আজ অবশ্য নিরাশ হতে হয়েছে। টস জিতে রেলওয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠান দিল্লির অধিনায়ক আয়ুশ বাদোনি। ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৭.৪ ওভারে ২৪১ রানে অলাউট হয়ে যায় রেলওয়ে। জবাব দিতে নেমে ১১ ওভার ব্যাটিং করে ১ উইকেটের বিনিময়ে ৪১ রান করে দিনের খেলা শেষ করে দিল্লি। বিরাট এখনও ব্যাটিংয়ে নামেননি। 

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক হল এই ম য চ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা  ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ