দেশে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায় তার মধ্যে ১২ শতাংশ মারা যায় ক্যান্সারে। প্রতিবছর দেশে নতুন করে ক্যান্সার রোগী যুক্ত হয় প্রতি লাখে ৫৩ জন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের গবেষকদের করা জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রিতে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

শনিবার বিএসএমএমইউয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অডিটরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের দুই লক্ষাধিক অংশগ্রহণকারীকে এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৮.

৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১.৬ শতাংশ নারী।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মোট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ছিল ২১৪ জন। ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় প্রতি লাখে ১০৬ জন (পুরুষের ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ১১৮ জন এবং নারীর ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ৯৬ জন)। গবেষণায় ৩৮টি ভিন্ন ধরণের শনাক্তকৃত ক্যান্সার পাওয়া গেছে।

ক্যান্সার রোগীদের ৯২.৫ শতাংশই ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী। এছাড়া ১৮ বছরের কম বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ২.৪ শতাংশ এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ৫.১ শতাংশ। শনাক্তকৃত শীর্ষ ৫টি ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে স্তন (১৬.৮ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (৮.৪ শতাংশ), পাকস্থলী (৭.০ শতাংশ), স্বরযন্ত্র (৭.০ শতাংশ) এবং জরায়ু মুখ (৫.১শতাংশ)।

পুরুষদের ক্ষেত্রে স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার ছিল সবচেয়ে বেশি (১৩.০ শতাংশ)। অন্যান্য প্রধান ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে পাকস্থলী (১০.৪ শতাংশ), ফুসফুস (৮.৭ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (৭.০ শতাংশ) এবং খাদ্যনালীর (৬.১ শতাংশ) ক্যান্সার।

নারীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছিল স্তন ক্যান্সার (৩৬.৪ শতাংশ)। এছাড়া জরায়ু মুখের ক্যান্সার (১১.১ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহবর (১০.১ শতাংশ), থাইরয়েড (৭.১ শতাংশ) এবং ডিম্বাশয় (ওভারি) (৫.১ শতাংশ) ছিল অন্যান্য সর্বাধিক শনাক্ত হওয়া ক্যান্সার।

১৯ শতাংশ নারী ক্যান্সার রোগী নারী-প্রজননতন্ত্রের ক্যান্সারে ভুগছিলেন (জরায়ুমুখ ১১ শতাংশ, ডিম্বাশয় ৫ শতাংশ এবং জরায়ু ৩ শতাংশ)।

ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ১৭ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, ১১ শতাংশ ডায়াবেটিস, ৬ শতাংশ হৃদরোগ, ৩ শতাংশ কিডনি জটিলতা এবং ২ শতাংশ স্ট্রোকে ভোগার তথ্য পাওয়া গেছে।

শনাক্তকৃত সকল ক্যান্সারের ৪৬ শতাংশই তামাক (ধোঁয়াযুক্ত ও ধোঁয়াবিহীন) সেবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। ৬০ শতাংশ ক্যান্সার রোগী সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপির মধ্যে একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। রোগ নির্ণয়ের পর ৭.৪ শতাংশ রোগী কোনো চিকিৎসা গ্রহণ করেননি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন

কনকনে শীত নিয়ে এসেছে হিমেল হাওয়া। ঘরের বাইরে বেরোলেই সেই হাওয়া শরীরে কাঁপন ধরায়। এমন আবহাওয়ার মধ্যে আজ শনিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতু এলাকায় জড়ো হন বিভিন্ন জেলার ৩৫০ দৌড়বিদ। সেখানে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ ও শিশুরাও। তবে উচ্ছ্বাস প্রকাশে যেন কেউ কারও থেকে কম নয়। হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতেই তাঁদের এই জমায়েত।

আজ সকালে এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটি (বিআরসি)। আয়োজকেরা জানান, চার পর্যায়ের দূরত্বে এই হাফ ম্যারাথন দৌড় হয়। এর মধ্যে ছিল ২ কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার।

আয়োজক, অংশগ্রহণকারী ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, সূর্য ওঠার আগেই ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে দৌড়বিদেরা জেলা শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতুর ওপর জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল ৬টায় প্রথমে ২১ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারীরা সেখান থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ৫ ও ১০ কিলোমিটারের দৌড়বিদেরা রওনা দেন। সর্বশেষ সকাল ৭টায় শিশুদের দুই কিলোমিটারের দৌড় শুরু হয়।

২১ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেন ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী একজন। ১০ কিলোমিটারে অংশগ্রহণ করেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬৬ জন ও নারী দুজন। ৫ কিলোমিটারে অংশ নেন ৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী ১০ জন। ২ কিলোমিটার দৌড়ে ৪৩ জন শিশু অংশ নেয়।

দৌড় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী দৌড়বিদের পাশাপাশি ভারত, জাপান, নেপাল ও ডেনমার্কের চারজন অংশ নেন। জেলা শহরের তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সংযোগ সড়ক কালীবাড়ি মোড় থেকে বিজয়নগরের নূরপুর জিসি সড়ক (সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া) পথে দৌড়বিদেরা ছড়িয়ে পড়েন। নির্দেশিত পথ ধরে প্রত্যেকে নিজের নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী দৌড় সম্পন্ন করেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মুহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ‘১০ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিয়েছি। ভালো লাগছে। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত হাঁটা ও দৌড়ের বিকল্প নেই।’

দৌড় শেষের ফিনিশিং লাইনে পৌঁছান এক দৌড়বিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন
  • সিকৃবিতে শিবিরের ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা