‘নিখোঁজ’ সুবার খোঁজ মিলেছে নওগাঁয়, পুলিশ বলছে ‘প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছে’
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে নিখোঁজ স্কুলছাত্রী আরাবি ইসলাম সুবাকে দেখা গেছে নওগাঁয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকেও সটকে পড়ে সে। মোহাম্মদপুর থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ছবিতে দেখা যায়, এক ছেলের হাত ধরে ঘুরছে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রী।
পুলিশ বলছে, মেয়েটিকে শনাক্ত করা হয়েছে নওগাঁয়। তবে কৌশলগত কারণে এখনো উদ্ধার করা যায়নি। শিগগির তাকে উদ্ধার করা হবে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটার দিকে ডিএমপির আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া বলেন, ‘‘মেয়েটিকে নওগাঁ জেলায় দেখা গেছে। শনাক্ত করা হয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে এখনো উদ্ধার করা যায়নি। শিগগির জেলা পুলিশের সহয়তায় তাকে উদ্ধার করা হবে।’’
এর আগে, ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার জন্য দুই মাস আগে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসেছিল সুবা।
পুলিশ বলছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে একজন ছেলের (২০+) হাত ধরে চলে যায় সুবা। ওই ছেলের মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে মেয়েটিকে উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বয়সে ছোট ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে বাসা থেকে বের হয় সুবা। এরপর রাস্তা পার হতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। সুবা বরিশালের একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের সামনে সুবাকে দেখা গেছে। তবে সেখানে সুবার ফুফাতো ভাই ছাড়া আরেকজনও ছিল। তার সঙ্গে সুবাকে হাঁটতে দেখা গেছে।
আরাবি ইসলাম সুবার পরিবারের বরাত দিয়ে আদাবর থানার ওসি এস এম জাকারিয়া বলেন, ‘‘যে ছেলেটির সঙ্গে দেখা গেছে, সেই ছেলের সঙ্গে সুবার সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের জের ধরে চলে যায়। ছেলেটির যে মোবাইল নম্বর, সেই মোবাইল নম্বর দিয়েছে মেয়েটির পরিবার। মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’
মেয়ে নিখোঁজের বিষয়ে জানতে চাইলে সুবার বাবা ইমরান রাজিব বলেন, ‘‘সুবা বরিশালের একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। স্ত্রীর ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য দুই মাস ধরে ঢাকায় বোনের (সুবার ফুফু) বাড়িতে আছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে বাইরে বের হয় সুবা। রাস্তা পার হওয়ার সময় ফুফাতো ভাই কিছুটা আগে চলে যায়। পরে সে পেছনে ফিরে দেখে সুবা নেই। আদাবর থানায় জিডি করেছি। পুলিশ বলেছে তারা চেষ্টা করছে।’’
ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মোদির
কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৬তম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন (সিসিসি) উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেনা সম্মেলন একটি দ্বিবার্ষিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শীর্ষস্তরীয় মতবিনিময়ের আসর।
অপারেশন সিঁদুরে’র পর এটিই প্রথম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, তিন বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধানও।
আরো পড়ুন:
অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প
আসামে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ৫ বাংলাদেশি ছাত্রকে বহিষ্কার
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড সদর দপ্তর কলকাতার বিজয় দুর্গে তথা ফোর্ট উইলিয়ামে আগামী তিনদিন এই সম্মিলিত সেনা সম্মেলন চলবে।
এই সম্মেলন সেনার তিন বাহিনীর সর্বোচ্চ চিন্তাভাবনামূলক ফোরাম, যা দেশের শীর্ষ অসামরিক ও সামরিক নেতৃত্বকে ধারণাগত ও কৌশলগত স্তরে মতামত বিনিময়ের জন্য আয়োজন করা হয়েছে ৷ কলকাতার আগে সর্বশেষ সম্মিলিত সেনা সম্মলেন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৩ সালে ভোপালে। অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে, এই বছরের সম্মেলন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এবারের সম্মেলনে সংস্কার, রূপান্তর, পরিবর্তন এবং অপারেশনাল প্রস্তুতির উপর জোর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু সশস্ত্র বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সংহতিকরণ এবং প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণে বিশেষ জোর দেওয়া। একই সঙ্গে শীর্ষস্তরের একাধিক ক্ষেত্রে অপারেশনাল প্রস্তুতির উপরও জোর দেওয়া হবে। তিনদিনের এই সম্মেলন সশস্ত্র বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করা হবে, যাতে ক্রমবর্ধমান জটিল ভূ-কৌশলগত পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়।’
রবিবার আসাম সফর সেরে নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশ কিছুটা পর দমদম বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা এবং উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কোনো কর্মসূচি না থাকলেও মোদিকে দেখতে ভিড় ছিল বিজেপি সমর্থকদের। ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে হাত নেড়ে জনসংযোগ সারেন মোদি। সেখান থেকে তার ২৪ গাড়ির কনভয় পৌঁছায় রাজভবনে। সেখানেই রাত্রিবাস করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তিনি রাত কাটান ফোর্ট উইলিয়ামে।
চলতি বছরে এই নিয়ে চতুর্থবার পশ্চিমবঙ্গে এলেন নরেন্দ্র মোদি। সকাল ৯ টাতেই রাজভবন থেকে ফোর্ট উইলিয়ামের দিকে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফোর্ট উইলিয়ামে ছিলেন মোদি। দেড়টার পরে কলকাতা থেকে বিহারের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
একদিকে বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি। অন্যদিকে অস্থির চিন সীমান্ত। তার মধ্যে আবার নেপালে পালাবদল। দিনকয়েক আগে বাংলাদেশের উত্তরে চিন বিমানঘাঁটি তৈরি করতে চলেছে বলে একটি খবর ছড়ায়। ঘাঁটিটি নাকি আবার তৈরি হবে চিকেনস নেকের কাছেই। সবমিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিরাট এক জটিল সমীকরণ তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় কলকাতার বিজয় দুর্গে সেনা সম্মেলনের আয়োজন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ