Risingbd:
2025-12-14@15:52:37 GMT

নতুন ভোটার যুক্ত হচ্ছেন ৫০ লাখ

Published: 4th, February 2025 GMT

নতুন ভোটার যুক্ত হচ্ছেন ৫০ লাখ

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচিতে ৪৯ লাখ ৭০ হাজার ৩৮৮ নতুন ভোটার যুক্ত হতে যাচ্ছেন।’’

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

ইসি সচিব বলেন, ‘‘এবারের হালনাগাদে ৪৯ লাখ ৭০ হাজার ৩৮৮ জন নতুন ভোটার যুক্ত হচ্ছেন। তবে নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য ছিল ৬১ লাখের কিছু বেশি। ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটার বাদ পড়েছেন ১৫ লাখ ২৩ হাজার। শতকরা হিসাবে ১.

৭৭ শতাংশ।’’
 
নারী ভোটার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এবার ১৬ লাখ নারী ভোটার হতে নিবন্ধন করেছেন। চলমান হালনাগাদ কর্মসূচিতে যারা বাদ পড়েছেন, তাদেরও যুক্ত করা হবে তালিকায়। নিবন্ধন চলবে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। এ ছাড়া, অনলাইন আর আঞ্চলিক কার্যালয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্যরা নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে কোনো তথ্য-সংগ্রহকারী কোনো বাড়িতে না গেলে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

এ ছাড়া মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১৭ বছরের কেউ ভোটার হয়েছে কি না, এমন তথ্য নেই ইসির কাছে। তবে নির্দিষ্ট করে কেউ জানালে কমিশন বিষয়টি দেখবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়

বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, বিচারকদের সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে আজ রোববার বিকেলে সমাপনী অভিভাষণ দেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ অনুষ্ঠিত হয়।

অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও, বিচারকদের রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকে ধারণ করেই গড়ে উঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।

পৃথক সচিবালয়কে বাস্তবিক অর্থে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক ও ফলপ্রসূ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করাই এখনকার প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কোনো সার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত সততা আর যোগ্যতার ব্যপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১১ আগস্ট দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সংবিধান অনুযায়ী, বিচারপতিদের অবসরের বয়স ৬৭ বছর। সে হিসাবে বর্তমান প্রধান বিচারপতি শেষ কর্মদিবস ২৭ ডিসেম্বর।

দুঃশাসনের বলয়কে আবরণ দেওয়া

দেশের অগ্রযাত্রায় বহু বরেণ্য বিচারপতি তাঁদের প্রজ্ঞা, ন্যায়বোধ ও সাহসিকতার মাধ্যমে জাতির ব্যাপক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছিলেন বলে অভিভাষণে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, এই সত্যও অস্বীকার করা যায় না যে বিভিন্ন রাজনৈতিক পর্বে, বিচার বিভাগ অসাংবিধানিক ক্ষমতা, অপশাসন ও রাষ্ট্রীয় কপট-কৌশলের অঘোষিত সহযোগী হিসেবেও পরিগণিত হয়েছে। দুঃশাসনের বলয়কে আবরণ দিয়েছেন অনেক বিচারক। অন্যায় ও অবিচারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত হয়েছেন। রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিচারকদের এই নৈতিক বিচ্যুতিও জনসাধারণকে শেষ পর্যন্ত জুলাই–আগস্টের রক্তক্ষয়ী প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করার অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।

সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি থাকার পরও, এ দেশের জনগণ কোনো দিন পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন বিচার বিভাগের স্বাদ গ্রহণ করতে পারেনি বলেও উল্লেখ করেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা যদি এখনো পূর্বযুগের ক্ষমতাকেন্দ্রিক, প্রভু–ভৃত্য চেতনায় আবদ্ধ থাকি এবং বিচারিক সেবাকে নাগরিক অধিকার না ভেবে প্রশাসনিক দয়া হিসেবে বিবেচনা করি, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে বিচার ব্যবস্থার বেসরকারীকরণ বা সালিস নিষ্পত্তিপ্রক্রিয়ার পূর্ণ আধিপত্যকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ইতিমধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অধিকাংশ বিরোধ বিকল্প পদ্ধতিতে সমাধান করছে। সুতরাং আমরা যদি ভেবে থাকি যে বিচারপ্রার্থী জনগণের প্রতি অবহেলা করেও বিচার বিভাগ তার প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে পারবে, তাহলে আমরা প্রকৃত অর্থেই এখনো বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস করছি। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যদি এই ব্যবস্থার অভ্যন্তরে বিদ্যমান অসৎ পন্থা, অযথা হয়রানি এবং প্রতিকারের পরিবর্তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার মানসিকতা নির্মূল করা না যায়, তবে বিচার বিভাগ একদিন প্রান্তিক, অপ্রাসঙ্গিক ও অবিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।’

বিচারকদের বোধ, ভারসাম্য, নৈতিকতা বজায় রাখতে সুসাস্থ্যকর পরিবেশ থাকা জরুরি উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বিচারক যদি নিজেকে আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তি এবং সুস্থ জীবনচর্চায় প্রতিষ্ঠিত করতে না পারেন, তবে ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও ন্যায়বোধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে যেন আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে গ্রহণ করেন।’

সমাপনী অভিভাষণে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মো. মাহফুজুর রহমানসহ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ