সুদানের আবেই অঞ্চলে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় শান্তিরক্ষী নিহত ও আটজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক, ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সাবেক সেনাসদস্যদের সংগঠন এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।

আজ রোববার এক বিবৃতিতে এই শোক ও ক্ষোভ জানান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লেফটেন্যান্ট (অব.

) সাইফুল্লাহ খান সাইফ।

বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তি, মানবতা ও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের মহান ব্রত নিয়ে জাতিসংঘের পতাকার নিচে দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর এই কাপুরুষোচিত হামলা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবতার জন্য এক গভীর আঘাত। এই হামলা প্রমাণ করে, সন্ত্রাসবাদ এখনো বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত ও সংঘাতপূর্ণ এলাকায় নিরস্ত্র মানুষকে রক্ষা, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে গিয়ে আমাদের এই বীর সন্তানেরা বারবার নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে আসছেন। আবেই অঞ্চলে সংঘটিত এই মর্মান্তিক ঘটনা সেই আত্মত্যাগের আরেকটি রক্তাক্ত অধ্যায়।’

নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, নিহত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর আত্মত্যাগ জাতি কখনোই ভুলবে না। এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁদের স্মরণ করছে এবং মহান আল্লাহ তাআলার কাছে তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।

আরও পড়ুনসুদানে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নাম-পরিচয় জানাল আইএসপিআর৭ ঘণ্টা আগে

আহত আট বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিবৃতিতে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং প্রয়োজনীয় সব সহায়তা অবিলম্বে নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন ত রক ষ দ র এক স ফ র স স সন ত র স

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ