যেকোনো বয়সের শিশুদের মতো নবজাতকও (জন্ম থেকে জীবনের প্রথম ২৮ দিন) ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে এটি বিরল।
দুভাবে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব। প্রথমত, গর্ভকালের শেষের দিকে মা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে ডেঙ্গু ভাইরাস গর্ভের ফুল/প্লাসেন্টার (রক্তনালির) মাধ্যমে পেটে থাকা শিশুকে বা জন্মের সময় নবজাতককে আক্রমণ করতে পারে। দ্বিতীয়ত, জন্মের পর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মশা সরাসরি নবজাতককে কামড়ালে সে আক্রান্ত হতে পারে।
লক্ষণ ও শনাক্তের উপায়নবজাতক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তার লক্ষণগুলো অনেকটা নবজাতকের অন্য সংক্রমণের লক্ষণগুলোর মতোই বলে অনেক সময় আলাদা করা মুশকিল। যেমন জ্বর, কখনো যা উচ্চমাত্রার, শরীরে র্যাশ, মায়ের দুধ খেতে না চাওয়া ইত্যাদি। অনেক সময় বমি করতে থাকে, খুবই কান্নাকাটি করে, থামানো মুশকিল হয়, আবার কখনো নেতিয়ে পড়তে পারে। কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট এমনকি মাড়ি, নাক দিয়ে রক্তপাতও হতে পারে।
তবে ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য একটা বিষয় বিবেচনায় আনা জরুরি। যেমন চারদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, গর্ভবতী মা জ্বরে বা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি না। এ রকম প্রেক্ষাপটে নবজাতকের উল্লিখিত যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে তার ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি মাথায় রাখতেই হবে। এ জন্য রক্তের অন্যান্য পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গুর জন্য নির্ধারিত রক্ত পরীক্ষাগুলো যেমন সিবিসি, ডেঙ্গু এনএস১, ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি, লিভারের এসজিপিটি, প্রথ্রম্বিন টাইম করে রোগ শনাক্ত করতে হবে।
আরও পড়ুনকেমন ছিল পৌষ উৎসবের ফ্যাশন শোর রানওয়ে৪ ঘণ্টা আগেসতর্কতা ও চিকিৎসাডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো নবজাতকের নিচের যেকোনো একটা লক্ষণই সতর্কতা সংকেত। এর মধ্যে রয়েছে পেট ফুলে যাওয়া, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, মায়ের দুধ খেতে না পারা, নেতিয়ে পড়া, বারবার বমি হওয়া, নাক-মুখ বা মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত ইত্যাদি।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নবজাতককে বারবার মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের। জ্বরের তীব্রতা বেশি হলে নির্দিষ্ট মাত্রায় প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বর কমাতে হবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি হাসপাতালে রেখে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক বা নার্সের তত্ত্বাবধানে রাখা যায়। এতে শিশুর কোনো জটিলতা তৈরি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আর এটা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে মা-বাবাকে অবশ্যই উল্লিখিত সতর্কতা সংকেতগুলো ভালোভাবে মনে রাখতে হবে। এগুলোর কোনো একটা দেখা দিলেই দেরি না করে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করে নিবিড় তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
আরও পড়ুনমালদ্বীপে ঝলমলে মেহজাবীন, সাগরতীরে কেমন কাটছে সময়, দেখুন ছবিতে৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা
মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।
রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।
ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।
চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটকঅধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।
‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে