পপি আমাদের অন্ধকারে রেখেছে, অভিযোগ মা ও বোনের
Published: 4th, February 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভীন পপির বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন তার ছোট বোন ফিরোজা পারভীন। শুধু তাই নয়, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে পপির হাতে মারধরের শিকারও হয়েছেন তিনি। শুধু বোনই নন, পপির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছেন তাদের মা মরিয়ম বেগম মেরিও।
বিষয়টি নিয়ে থানায় নায়িকার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ফিরোজা পারভীন। পপির বিরুদ্ধে জিডির বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।
পপির বিরুদ্ধে জিডি করার পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বোন ফিরোজা পারভীন ও মা মরিয়ম বেগম মেরি। ফিরোজা পারভীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এক বছর আগে বাবা মারা গেছে। তিনি ছেলে-মেয়ের নামে ৬ কাঠা জমি রেখে গেছেন। সেই জমিটি পপি তার নামে লিখে নিতে চায়। এখনও আমাদের মা-ভাইবোন বেঁচে আছি তাহলে আমরা তার নামে জমি দেবো কেনো? বাবা বেঁচে থাকতে তো তিনি কোনো কথা বলেনি। বাবা মারা যাওয়ার পর কেনো তিনি কথা বলছেন। পপির একটাই দাবি এই জমি তার নামে লিখে দিতে হবে।’
পপির হাতে মারধরেরও শিকার হয়েছেন বলে জানান ফিরোজা পারভীন। তার কথায়, জমি সংক্রান্ত কোনো কথাই শুনতে চায় না পপি। তার দাবি একটাই, জমি তার নামে লিখে দিতে হবে। কথা বলতে গেলে আমাকে মারধর করেছে এবং হুমকি দিয়ে গেছে। আমাকে মারধরের ভিডিও জিডির সঙ্গে থানায় জমা দিয়ে এসেছি।’
অভিযোগ করে ফিরোজা পারভীন বলেন, ‘আমাদের বাসার বিদ্যুতের লাইন পপি তার নামে ট্রন্সফার করে নিয়েছে। গতকাল সেই বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ফলে আমরা এখন অন্ধকারে আছি। এখন কথা হল, আমার মাসহ ভাই-বোন সবাই আছি। সেখানে তার নামে কীভাবে বিদ্যুতের লাইন থাকে।’
এদিকে পপির মা মরিয়ম বেগম মেরি বলেন, ‘পপির তো অনেক পয়সা আছে। কিন্তু আমাদের এই জমিটা তার কীসের এতো দরকার। আমরা সেটাই বুঝতে পারছি না। তবে আমরা এটুকু বুঝতে পারছি পপি তার স্বামীর কথা মত চলছে। দুইজন মিলে আমাদের সঙ্গে আমাদের জমিটার সঙ্গে লেগেছে। আমার পাঁচটা সন্তান এবং আমি একসঙ্গে থাকি। ওর বাবা বেঁচে থাকতে তারা কিছু করেনি। পপি যেটা চাচ্ছে সেখানে তো আমার আর পাঁচটা বাচ্চারও হক আছে। কিন্তু ওই হক সে দেবে না। একটা জমিটা নিয়ে নেবে। এটা কী করে সম্ভব?’
এদিকে থানায় করা জিডি সূত্রে জানা গেছে, পৈতৃক ৬ কাঠা জমি দখলের নেওয়ার জন্য স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল, কল্লোল মজুমদার ও শিপনসহ পপি ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিববাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনে যান। এতে বাধা দিলে পপি ও তার স্বামী ফিরোজা পারভীনকে হুমকি দেন।
এসব বিষয়ে জানতে পপির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ন য গ কর ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব