জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে: প্রেস সচিব
Published: 5th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে ছয় সংস্কার কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবিত সুপারিশ থেকে প্রয়োজনীয় সংস্কার চূড়ান্ত হবে । আর সংস্কার চূড়ান্ত করার পর সবাই জুলাই চার্টার (সনদ) স্বাক্ষর করবে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ছয়টি সংস্কার কমিশন প্রধানকে নিয়ে ঐকমত্য কমিশন গঠন করেছেন। এ কমিশনের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ। অন্যান্য পাঁচ কমিশন প্রধানরা এর সদস্য।
তিনি বলেন, এই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ছয় সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনা ও কথাবার্তা বলবেন। তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে কতটুকু সংস্কার এখনই করতে হবে, কতটুকু পরে করা যাবে, এখনই যা করা হবে তা করতে হলে সাংবিধানিক রিফর্ম প্রয়োজন হবে (কিছু কিছু সংস্কার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করা সম্ভব হবে) তা ঠিক করা হবে।
প্রেস সচিব বলেন, বিস্তারিত আলোচনার পর অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও সুশীল নাগরিকদের সবার মতামতের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার নিয়ে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছাবে, সেগুলোতে সবাই স্বাক্ষর করবেন। এ স্বাক্ষরের মাধ্যমে যতগুলো সংস্কার চূড়ান্ত হবে, তাই হবে জুলাই চার্টার। এই জুলাই চার্টারের কিছু বাস্তবায়ন অন্তর্বর্তী সরকার করবে, আর কিছু পরবর্তী সরকার এসে করবে। আর এ বাস্তবায়নের ওপরই নির্ভর করবে আগামী নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে হবে, নাকি আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না করলে এনসিবি তা করবে: আখতার হোসেন
সরকার যদি ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে ঘোষণাপত্র প্রকাশ না করে, তাহলে এনসিপি দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে নিজেরা তা প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি না।’
এই নেতা মনে করেন, সরকার যদি আন্তরিক হয় এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমন্বয় করে, তাহলে ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যেই একটি পরিপূর্ণ, আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তিসম্পন্ন ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা সম্ভব।
আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের মধ্যবর্তী বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আখতার হোসেন এ কথাগুলো বলেন। এ সময় তিনি জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে চলমান বিভ্রান্তি দূর করতে একটি ব্যাখ্যাও দেন।
আখতার হোসেন বলেন, এই দুটি নথি এক নয় এবং ভুলভাবে গুলিয়ে ফেলা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি প্রচারণা হতে পারে, যা এনসিপির অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে গত বছরের আগস্টের গণ–অভ্যুত্থান এবং ৫ আগস্টের বিজয়ের একটি ঐতিহাসিক স্বীকৃতি, যার একটি আইনি ভিত্তি থাকা দরকার। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। অন্যদিকে, জুলাই সনদ হচ্ছে রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কমিশনে আলোচিত প্রস্তাবগুলোর একটি বাস্তবায়নযোগ্য রূপরেখা।
জুলাই সনদ নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই না এমন একটি অকার্যকর, অপূর্ণ এবং মৌলিক সংস্কারবিহীন জুলাই সনদ তৈরি হোক, যেটা তিন দলের অতীত রূপরেখার মতো শুধু ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই জুলাই সনদটি হবে কার্যকর, পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ধারণকারী, আইনি ভিত্তিসম্পন্ন এবং তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য।’
জুলাই সনদ নিয়ে কমিশনের প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সনদে অন্তর্ভুক্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এটি এনসিপি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই ধরনের বিলম্বিত বাস্তবায়নের প্রস্তাব প্রতারণার সুযোগ তৈরি করে এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করার শামিল।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে আখতার হোসেন অনুরোধ জানান, সংবাদ পরিবেশনের সময় যেন জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের পার্থক্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, ‘অনেকে ভাবছেন আমরা জুলাই সনদে সই করলেই সব মেনে নিচ্ছি, এটা ভুল। আমরা মৌলিক সংস্কার এবং আইনি ভিত্তির নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো সনদে সই করব না।’